মুক্তি পাওয়ার পর এক দিনও গড়াল না, শহরের সমস্ত সিনেমা হল থেকে তুলে নেওয়া হল পরিচালক অনীক দত্তের ছবি 'ভবিষ্যতের ভূত'। ছবিটা তৈরি হওয়ার দিন থেকেই ছায়াসঙ্গী হয়ে রয়েছে বিতর্ক। টলিউডের নামকরা প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে বচসা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। এমনকী ছবির পোস্টারে পরিচালককে লিখতে হয়েছিল, ছবিটা সিক্যুয়েল নয়। লড়াই করে বক্স অফিস পর্যন্ত ছবিটা এনেছিলেন ঠিকই, কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
অনীক দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "তাই তো শুনলাম। বন্ধ করে দেওয়া হলো ছবিটার প্রদর্শন। তবে যেটুকু খবর পেয়েছি, তাতে জানলাম বিভিন্ন লোকাল থানা থেকে নির্দেশ এসেছে। আগেও পুলিশ প্রযোজককে বলেছিল। হল মালিকরা নির্দিষ্ট কোনও কারণ দেখাচ্ছেন না দর্শকদের। আপাতত আমরা একসঙ্গে বসে আলোচনা করে একটা সমাধান বের করার চেষ্টা করছি।" সত্যিই সঙ্গত কোনও কারণ দেখাচ্ছেন না হল মালিকরা। প্রাচী সিনেমার কর্ণধার বললেন, "অন্য কোথাও কী হয়েছে বলতে পারব না। টেকনিক্যাল কারণেই তুলে নিয়েছি।" আইনক্সের মুখপাত্র বললেন, "কর্তৃপক্ষ আমাদের ছবিটার স্ক্রিনিং বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পুরোটাই দর্শকের চাহিদা বুঝে করা হয়েছে।" কে এই কর্তৃপক্ষ, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন, নগরকীর্তন থেকে প্রেম, কী বললেন ঋদ্ধি?
লাল, সবুজ, গেরুয়া বাহিনী, সাংবাদিকতার অন্ধকার দিক, সিনেমায় গুন্ডারাজ, সবকিছু নিয়েই ছবিতে সোজাসুজি আক্রমণে নেমেছিলেন পরিচালক। স্পষ্ট ইঙ্গিতে মাচা, ফিল্ম সিটির জন্য জমি দখলের প্রতিবাদ, চড়াম চড়াম, অক্সিজেন, ঘুষ নেওয়ার স্টিং অপারেশন দেখিয়েছেন তিনি। রেয়াত করেন নি কাউকেই। কিন্তু ছবির ভবিষ্যতের অন্ধকার দিকটা সম্ভবত খেয়াল করেও করেন নি তিনি।
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৮-র প্রাঙ্গণ মুখ্যমন্ত্রীর কাট আউটে ছেয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন পরিচালক। এই ঘটনা আবারও উসকে দিয়েছিল প্রযোজক-পরিচালক সংঘাতকে। কিন্তু প্রশ্নটা হলো, তাঁর ছবি হল থেকে তুলে নেওয়া হলো কি শাসক দলকে নিশানা করার জন্য? 'পলিটিক্যাল স্যাটায়ার', অর্থাৎ রাজনৈতিক ব্যঙ্গ বলে? নাকি অর্ধেক দিনের মধ্যেই দর্শকের ছবিটার ওপর থেকে আগ্রহ উঠে গেল? ছবিটা আবার আপনারা কবে দেখতে পাবেন, তা এখনই জানা নেই, তবে আপাতত ছবির রিভিউটা পড়ে নিতে পারেন।