কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বাড়ি ছাড়ার নোটিস। অতিমারী আবহেই মহা বিপদে পড়লেন খ্যাতনামা কত্থকশিল্পী বিরজু মহারাজ (Birju Maharaj)-সহ মোট ২৭ জন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই অন্য বাড়ি খুঁজে নিতে বলা হয়েছে তাঁদের। আর সেই প্রেক্ষিতেই তাঁরা এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দ্বারস্থ হয়েছেন।
বিরজু মহারাজ ছাড়াও বাড়ি ছাড়ার নোটিস পেয়েছেন সন্তুরবাদক ভজন সোপোরি, চিত্রশিল্পী যতীন দাস, মোহিনীঅট্টম শিল্পী ভারতী শিবাজীর মতো খ্যাতনামা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ ‘এমিনেন্ট আর্টিস্ট কোটা’য় তাঁরা দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় বসবাস থাকেন। যেসব বাড়িগুলোর ভাড়া বাজার দরের তুলনায় প্রায় অনেকটাই কম। অর্থাৎ যৎসামান্য ‘লাইসেন্স ফি’-এর বিনিময়ে এযাবৎকাল এই খ্যাতনামা শিল্পীরা দীর্ঘদিন ধরে এই বাড়িগুলিতে থাকতেন। তাও ২০-৩০ বছরেরও বেশি সময় হবে সম্ভবত। এবার কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে তাঁদের কাছেই নোটিশ গিয়েছে বাড়ি ছাড়ার। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের পাঠানো নোটিসে সাফ লেখা, এই বাড়িগুলিতে তাঁদের থাকার মেয়াদ ফুরিয়েছে। উপরন্তু, ‘এমিনেন্ট আর্টিস্ট কোটা’য় তাঁদের লাইসেন্সগুলির মেয়াদও আর বাড়ানো সম্ভব নয়। তাই আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই তাঁদের প্রত্যেককে অন্য কোনও আস্তানা খুঁজে বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে।
অতঃপর বিরজু মহারাজ-সহ আরও ২৭ জন শিল্পী আপাতত এর একটা বিহিত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। তাঁদের বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী এই ইস্যু নিশ্চয় বিবেচনা করে দেখবেন। দীর্ঘ বহু বছরের এই ঠিকানা তাঁদের আর ছেড়ে চলে যেতে হবে না। উল্লেখ্য, নোটিস পাওয়া শিল্পীদের মধ্যে সবথেকে বয়স্ক বিরজু মহারাজই।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের মত, মেয়াদ ফুরলে শিল্পীদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলাটা বিন্দুমাত্র বেআইনি নয়। কিন্তু সেই প্রেক্ষিতে শিল্পীদের দাবি, বিষয়টি আইনের নয়, সম্মানের। বহু বছর থেকেই এই লাইসেন্সের মেয়াদ ফুরলে সেগুলো ফের রিনিউ করা হয়েছে সরকারের তরফে। উপরন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যে লাইসেন্স ফি বেড়েছে, সেটাও তাঁরা দিয়েছেন। আর এত বছর ধরে আন্তর্জাতিক ময়দানে দেশের নামোজ্জ্বল করার পর এটা ভীষণ অসম্মানজনক বলেই মনে করছেন তাঁরা।