অভিযোগ তুলেছিলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে এখন আর সেভাবে কাজ পান না। ওদিকে দীর্ঘদিন সিনেপর্দাতেও তাঁকে আর সেভাবে দেখা যায় না! কিন্তু হলফনামায় হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের (Hiran Chatterjee) স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয়েছে অনেকেরই। সবমিলিয়ে পদ্ম শিবিরের তারকা প্রার্থীর সম্পত্তির তুল্যমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪ কোটিতে। মনোনয়ন পত্র দাখিলের পাশাপাশি তাঁর বিষয়-আশয়ের খতিয়ানও জমা দিয়েছেন খড়গপুরের (Kharagpur) পদ্ম-প্রার্থী হিরণ। যা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে শোরগোল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election 2021) প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভবত হিরণের সম্পত্তির পরিমাণই সর্বাধিক।
হলফনামা অনুযায়ী, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়ের মোট আয় ৭ লক্ষ ৮০ হাজার ২৫০ টাকা। তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায়ের মোট আয় ৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৩০ টাকা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় হাতে নগদ ছিল ২ লক্ষ টাকা। স্ত্রীর হাতে ছিল ২০ হাজার টাকা। একাধিক ব্যাঙ্কে সঞ্চয় রয়েছে পদ্ম-প্রার্থী এবং তার স্ত্রীর নামে। বিনিয়োগের বহরও প্রচুর। বহু বন্ড, শেয়ার, এনএসএস এবং মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা ঢেলেছেন হিরণ। এছাড়া, বিজেপি প্রার্থী (BJP) হিরণের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলেও হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে।
অভিনেতার দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর একটি গাড়ি রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য ৭ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। তবে স্ত্রীর নামে কোনও গাড়ি নেই। এছাড়াও, গয়নার হিসেব দিয়েছেন হিরণ। তাঁর নামে ৪ লক্ষ টাকার সোনা রয়েছে। স্ত্রীর গয়নার বাজারদর ৬ লক্ষ টাকা।
অর্থাৎ হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ২ হাজার ৮৯৩ টাক। আর তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৭৯ লক্ষ ১ হাজার ২৮৯ টাকা। সেই প্রেক্ষিতে দু’জনের মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ- ২ কোটি ৬৫ লক্ষ ৪ হাজার ১৮২ টাকা। পাশাপাশি দিলীপ-গড় খড়গপুর সদর কেন্দ্রের পদ্ম শিবিরের তারকা প্রার্থী এও জানিয়েছেন যে, তাঁর স্ত্রীর নামে কোনও স্থাবর সম্পত্তি নেই। তবে তাঁর স্থাবর সম্পত্তি বলতে রয়েছে একটা ফ্ল্যাট। যার বর্তমান মূল্য ৪০ লক্ষ টাকা। এর পাশাপাশি ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহারের জন্য ৯০ লক্ষ টাকার একটি বাড়ি রয়েছে।
অর্থাৎ, হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে সম্পত্তির পরিমাণ ৪ কোটি ৫০ লক্ষ ৪ হাজার ১৮২ টাকা। যা প্রকাশ্যে আসার পরই রাজনৈতিক মহলের অন্দরে ফিসফাস শুরু হয়েছে। সমালোচকদের কথায়, "এযাবৎকাল তৃণমূলে থেকে কিছু লাভ করতে পারেননি বলেই অভিযোগ তুলেছিলেন হিরণ। হাতে কাজও তেমন ছিল না! ভোটের মুখে সদ্য গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছেন। দল-বদলেই খড়গপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দিতা করার টিকিট পেয়েছেন। কিন্তু অভিনেতার সম্পত্তির বহর দেখে তো চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার জোগাড়!"