রবিবারের ভোট প্রচারে বেহালা পূর্বের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠলো। ঠাকুরপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের গেরুয়া শিবিরের। পাল্টা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগে সরব দলীয় প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়। অভিনেত্রী পায়েল সরকার ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। তাঁর অভিযোগ, ‘এদিন কলকাতা পুরসভার ১৪৪ নম্বরে ওয়ার্ডে প্রচারে বেড়িয়েছিলেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। ২৭৬ নম্বর বুথ সংলগ্ন এলাকায় ঢুকতেই তাঁদের ওপর হামলা হয়েছে। এমনকি, মহিলা বিজেপি কর্মীদের রেয়াত করেনি তৃণমূলের গুণ্ডারা।‘ পায়েল জানান, এরপর হামলার অভিযোগ ঠাকুরপুকুর থানায় করতে গেলে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর এসে ফের হামলা চালিয়েছে তাঁর ওপর। এমনকি, তাঁকে জুতো দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ পায়েলের।
এবিষয়ে ট্যুইটারে সরব হয়ে পায়েল লেখেন, ‘বেহালা পূর্বের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষেরা এদিন তৃণমূলের গুণ্ডাগিরির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।২ মে গোটা বাংলা এই গুণ্ডারাজের বিরুদ্ধে সরব হবে।‘
যদিও পায়েল নাটক করছেন বলে এদিন কটাক্ষ করেছেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘এতদিন এই এলাকায় ভোট প্রচার চলেছে কোথাও কিছু হয়নি। হঠাৎ ভোটের আগে এই অভিযোগের কোনও সারবত্তা কেন। উলটে আমাদের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়ে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসেছি। সেই অনুযায়ী অভিযোগ জানাব।‘
এদিন তিনি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকেও জমায়েত হঠাতে পারেনি। আর আমি এসে ৩৫-৪০ জনকে সরিয়ে দিলাম। ওরা কাদের হয়ে কাজ করছে জানা নেই।‘
এদিকে, প্রচারে হামলা ঘিরে যখন উত্তপ্ত বেহালা পূর্ব, তখন তার পাশের কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থীর সম্পত্তি দেখে চক্ষু চড়কগাছ নেটিজেনদের। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ, ‘সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৪ কোটি। নগদ রয়েছে ১ লক্ষ টাকা। দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সব মিলিয়ে জমা রয়েছে যথাক্রমে ১ কোটি ১০ লাখ ৬১ হাজার ৫৫১ টাকা এবং ৫০ হাজার টাকা।
জানা গিয়েছে, ৭ লক্ষ টাকার মিউচুয়াল ফান্ডের পাশাপাশি ১০ লাখ টাকার জীবনবিমাও রয়েছে। অর্থাৎ ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানত, জীবনবিমা, মিউচুয়াল ফান্ড মিলিয়ে রয়েছে মোট ১ কোটি ২৮ লাখ ১১ হাজার ৫৫১ টাকা। ইন্ডাস্ট্রিতে শ্রাবন্তীর গাড়ির প্রতি ভালবাসার কথা অনেকেই জানেন। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে একটি অডি কিউ ৭ এবং অন্যটি মারুতি ব্যালেনো। দু’টি গাড়িই ২০১৯ সালে কেনা তাঁর। অডির দাম ৫৩ লাখ ২১ হাজার ১৬৮ টাকা এবং মারুতি ব্যালেনোর দাম ৭ লাখ ৮৬ হাজার ২৫০ টাকা।
গয়নাও পরতে বেজায় ভালবাসেন টলিউড অভিনেত্রী। সোনা, হিরে, প্ল্যাটিনাম, সবরকম গয়নারই সম্ভার রয়েছে তাঁর কাছে। হলফনামা অনুযায়ী, সোনার গয়নার বাজার মূল্য ২৯ লক্ষ ৭২ হাজার ২০০ টাকার। তাঁর কাছে হিরে রয়েছে ২০ লাখ ১২ হাজার ৪৫০ টাকার এবং ১২ লাখ ১৮ হাজার ৮২০ টাকার প্ল্যাটিনামের গয়না রয়েছে তাঁর। এর বাইরে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকার একটি হাতঘড়ির কথা হলফনামায় উল্লেখ করেছেন বিজেপি প্রার্থী। অর্থাৎ তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ মোট ২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ৯৩৯ টাকা। শুধু অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দেখেই থমকে যাবেন না! স্থাবর সম্পত্তি পরিমাণও রয়েছে কোটি টাকার উপর।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার লেদার কমপ্লেক্সে ২০১৭ সালে কেনা ৬ বিঘা ১০ কাঠার একটি চাষের জমি রয়েছে। যার বর্তমান বাজারদর ৮ লক্ষ টাকা। এছাড়াও বেহালার পর্ণশ্রীতে ২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য ১ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। তবে ব্যাঙ্কে শ্রাবন্তীর একটি মাত্র ঋণ রয়েছে। ৩৮ লাখ ১২ হাজার ৪৫৬ টাকার গাড়ি ঋণ নিয়েছিলেন তিনি।