একুশের ভোটে 'খেলা হবে' স্লোগান সুপারহিট! স্থান, কাল, পাত্র নির্বিশেষে আট থেকে আশির মুখে এখন এই একটাই কথা! ঘাসফুল শিবিরের স্লোগানকে হাতিয়ার করে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেগেছে পদ্ম শিবিরও। বাংলার মসনদ দখলের লড়াইয়ে দুই দলের যুযুধানে খানিক হয়তো বিপাকেই পড়েছেন ভোটাররা। ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি আর তারকা-খচিত প্রার্থীতালিকা! কিন্তু ভোট মিটলেই জনগণের 'সাধ' মিটবে কি? নাকি শুধু ফিতে কাটতেই দেখা যাবে সবুজ-গেরুয়া শিবিরের জয়ী তারকা প্রার্থীদের? সেই প্রশ্ন তুলে যখন ইতিমধ্যেই রাজ্যবাসীর চর্চা তুঙ্গে, তখন বিজেপির তারকা প্রার্থী যশ দাশগুপ্ত (Yash Dasgupta) সিনেম্যাটিক সংলাপেই দিলেন 'মাস্টারস্ট্রোক'! বললেন, "সবাই বলছে খেলা হবে, কেউ বলছে না কাজ হবে!"
ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) মুখে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির তারকা প্রার্থীর মুখে এমন কথা শুনে বেজায় আশাবাদী চণ্ডীতলা (Chanditala) বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা। তবে কতটা? তার প্রমাণ মিলবে ভোটবাক্সেই। কারণ, যশের প্রতিপক্ষরা বেশ হেভিওয়েট। একদিকে সংযুক্ত মোর্চা প্রার্থী বাম শিবিরের অভিজ্ঞ পোড় খাওয়া নেতা মহম্মদ সেলিম, অন্যদিকে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন এলাকার দু’বারের বিধায়ক স্বাতী খন্দকার। কাজেই দুই পোড় খাওয়া রাজনীতিকের মাঝে রাজনীতির ময়দানে নবাগত বিজেপি (BJP) প্রার্থী যশ দাশগুপ্তের লড়াইটা যে খুব একটা সহজ হবে না, তা হলফ করে বলাই যায়। তবে, ‘স্টার ফ্যাক্টর’ ভোটবাক্সে প্রভাব ফেললেও ফেলতে পারে।
তবে তারকাসুলভ আচরণ অতীত! জনসাধারণের সঙ্গে মিশে গিয়ে নিজেকে চণ্ডীতলার ঘরের ছেলে হিসেবে প্রমাণ করতে মরিয়া যশ দাশগুপ্ত (Yash Dasgupta)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে চণ্ডীতলা থেকে বিজেপির (BJP) হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন তিনি। সোমবারই নিজের কেন্দ্রে গিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন যশ। মঙ্গলবার ডানকুনি চামুণ্ডা মন্দিরে পুজো দিয়ে স্থানীয় গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আলাপচারিতা সারেন। কচি-কাঁচাদের সঙ্গে সেলফি তোলা, অটোগ্রাফ দেওয়ার পাশাপাশি বড়দের প্রণাম করতেও দেখা যায় তারকাকে। ডানকুনি পুরসভার ৮ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুয়ারে দুয়ারে ঘগিয়ে করজোর ভোটপ্রার্থনা করেন যশ।
পদ্ম শিবিরের তারকা প্রার্থীর মন্তব্য, "তারকা হিসেবে নই। চণ্ডীতলার ঘরের ছেলের মতোই মানুষের সেবা করার জন্য এসেছি। এলাকার হাসপাতাল, স্কুল-সহ সামগ্রিক উন্নয়ন করতে চাই। বাংলায় শিল্পের দরকার। কাজের অভাবে যেখানে যুবকরা ভিন রাজ্যে যেতে বাধ্য হচ্ছে, সেখানে সবাই বলছে খেলা হবে। কেউ বলছে না কাজ হবে। ব্যক্তিগত কাদা ছোঁড়াছুড়ি কিংবা দোষারোপে না গিয়ে কীভাবে মানুষের জন্য কাজ করতে পারি, তারই চেষ্টা করব।"
প্রসঙ্গত, রাজনীতির ময়দানে অভিষেক ঘটা মাত্রই নির্বাচনের টিকিট পেয়েছেন যশ দাশগুপ্ত। তাই রবিবার গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আদা-জল খেয়ে ময়দানে নামতে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছেন তিনি। তার আগে অবশ্য লেক কালীবাড়িতে পুজো দিয়েছেন। মায়ের আশীষ নিয়েই ভোটপ্রচারের ময়দানে জীবনের নয়া ইনিংস শুরু করেছেন। মঙ্গলবারও তার অন্যথা হল না। ডানকুনির চামুণ্ডা মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করলেন।