লাভলি মৈত্র (Lovely Maitra) কে? নেটজনতাদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। যিনি কিনা তৃণমূলের (TMC) হয়ে ভোটের টিকিট পেলেন, তাঁকে আদতে চেনেনই না নেটজনতার একাংশ! শুধু তাই নয়, এই টেলি-অভিনেত্রীর পরিচিতি নিয়ে যখন নেটদুনিয়া সরগরম, তখনই তাঁর পদপ্রার্থী হওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত, সেই বিষয়ে সোচ্চার বিরোধী শিবিরপক্ষ। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, লাভলির স্বামী পেশায় IPS অফিসার, আর সেই প্রেক্ষিতেই একজন সরকারি আমলার স্ত্রী হয়ে কীভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার টিকিট পেতে পারেন তিনি! আর সেটাই বা নির্বাচনী-নীতি অনুযায়ী কতটা যুক্তিসঙ্গত? প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি (BJP)।
উল্লেখ্য, 'জলনুপূর' ধারাবাহিকে অভিনয় করেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন লাভলি মৈত্র। তবে টেলিভিশনের পর্দায় এখন আর সেভাবে দেখা যায় না তাঁকে। সম্প্রতিই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তিনি। আর যোগদানের দিন কয়েকের মধ্যেই একুশের ভোটযুদ্ধে (West Bengal Assembly Election 2021) ঘাসফুল শিবিরের হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করার ছাড়পত্র পেয়ে গেলেন? তাও আবার সোনারপুর দক্ষিণের মতো পোড় খাওয়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে! যা কিনা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। অতঃপর সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে যে দলের তরফে কোনও হেভিওয়েটকেই প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হবে, এমনটাই ছকেছিলেন অনেকে। কিন্তু সে হিসেবে গড়মিল হয়ে গেল শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পর। আর সেই ইস্যুকেই এখন হাতিয়ার করে তুলেছে বিজেপি। তাদের কথায়, "সরকারি আমলার স্ত্রী হয়ে তৈলমর্দন করাতেই কি টিকিট উপহার পেলেন লাভলি?"
এককথায়, অভিনেত্রীকে নিয়ে বর্তমানে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। কারণ লাভলির পদপ্রার্থী হওয়া নিয়ে বিজেপি নানারকম প্রশ্ন তুলছে। যা বিধানসভা নির্বাচনের সূতিকালগ্নে রীতিমতো বাজার গরম করার মতো। আপত্তি মূল কারণ হল, লাভলি আদতে হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সৌম্য রায়ের স্ত্রী। এখানেই বিজেপির মাথা ঘুরে গিয়েছে। স্বয়ং পুলিশকর্তার স্ত্রীকে কীভাবে প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস? মমতার 'মাস্টারস্ট্রোক' নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
পদ্ম শিবিরের তরফে হুংকার ছাড়া হয়েছে, "আইন বলে কিছুই নেই! রাজ্যের আইপিএস অফিসারের স্ত্রী প্রার্থী হতে পারে না। কমিশনের দ্বারস্থ হব।" তবে এই প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপিকে পাল্টা দিতে ছাড়েননি অভিনেত্রী লাভলি মৈত্রও। তাঁর মন্তব্য, ‘আমি যে পুলিশ সুপারের স্ত্রী, সেটাই কিন্তু আমার একমাত্র পরিচয় নয়। প্রত্যেকটা মেয়েরই একটা নিজস্ব পরিচয় রয়েছে। আমারও তা আছে। ভারতীয় জনতা পার্টি আসলে দেশের মেয়েদের 'নিজস্ব পরিচয়'টাই মুছে ফেলতে চাইছে। যা অত্যন্ত নোংরা রুচির পরিচয়।’
এখানেই থেমে থাকেননি অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, বিজেপির এমন দাবি কিন্তু আদতে ধোপেই টেকেনি। তাঁরা নির্বাচনের মুখে এই অন্তিম লগ্নেও দল ভাঙার খেলায় মেতেছে। শুধু তাই নয়, ভোটের আগে বিরোধী শিবিরের মহিলা প্রার্থীকে নিয়ে এমন কু-মন্তব্য কিন্তু যে কোনওদিন তাদের দিকে 'বুমেরাং' হতে পারে! তখন আদতে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে নামলেও 'হালে পানি পাবে না তারা'।