আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের (TMC) ‘তুরুপের তাস’ যেখানে ছিলেন সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh), সেখানে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) বাজি ধরেছিল ‘ভূমিকন্যা’ অগ্নিমিত্রা পালকে (Agnimitra Paul)। যিনি কিনা বিজেপির হেভিওয়েট মুখ তথা মহিলা মোর্চার সভানেত্রীও বটে! প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আসানসোলের মাটি কামড়ে পড়েছিলেন সায়নী ঘোষ। ঝড়, জল, রোদের তোয়াক্কা না করে প্রচারের ময়দান কাঁপালেও শেষ রক্ষা হয়নি! দিনভর ভোটবাক্সে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর অন্তিম লগ্নে বাজিমাত করলেন ভূমিকন্যা অগ্নিমিত্রাই।
মিঠুন চক্রবর্তী সম্প্রতি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, আসানসোল দক্ষিণে অগ্নিমিত্রা পালের জয় নিয়ে। 'মোদীর তারকা সেনাপতি'র কথাই সত্যি হল! আসানসোল (Asansol) দক্ষিণ কেন্দ্রে পদ্ম ফোটালেন অগ্নিমিত্রা পাল। প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে অগ্নিমত্রা পালের নাম ঘোষণা হওয়ায় তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সায়নী ঘোষ যে, কিঞ্চিৎ চাপে পড়েছিলেন, রাজ্য়-রাজনীতির অন্দরমহলে তা নিয়ে ফিসফাসও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু দলনেত্রীর তরফে দরাজ সার্টিফিকেট পেয়েছেন সায়নী ঘোষও। ঘাসফুল শিবিরের তারকা প্রার্থীকে 'স্ট্রিট ফাইটার' আখ্যা দিয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, নির্বাচনী প্রচারে কোনও এলাকায় যেতে বাদ রাখেননি। জনসংযোগেও খামতি রাখেননি। শত চেষ্টা, গত দেড় মাসের হাড়ভাঙা খাটুনির পরও আসানসোল দক্ষিণে ঘাসফুল ফোটাতে ব্যর্থ সায়নী ঘোষ।
অগ্নিমিত্রার ‘ভূমিকন্যা’ ফ্যাক্টরকে হাতিয়ার করেই সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের পদ্ম-পালে হাওয়া উঠল। একুশে (West Bengal Assembly Election 2021) বাংলায় বিজেপি সাফ হলেও পদ্ম ফোটাতে সফল মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। জয়ী প্রার্থী অগ্নিমিত্রার কথায়, "আনন্দ হচ্ছে, তবে দল জিতলে তা আরও দ্বিগুণ হতো। প্রথমবার বিধায়ক হলাম। আমার কেন্দ্রের সমস্যা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে যাব। উনি ২০১১ সালে জয়ের পর বলেছিলেন, বিরোধীদের নিয়েই একজোট হয়ে কাজ করতে চান। আশা করি, সেই কথা উনি এবারেও রাখবেন।"
প্রসঙ্গত, আসানসোল দক্ষিণে অগ্নিমিত্রা পাল বনাম সায়নী ঘোষের মধ্যে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, তা আগেভাগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল। দুই শিবিরের তারকা প্রার্থীই ডাকসাইটে। একজন রাজনীতির ময়দানে নবাগত হলেও কাউকে রেয়াত করে কথা বলেন না! অন্যদিকে কম যান না গেরুয়া শিবিরের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রাও। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত ছিল, ‘এবার আসল খেলা হবে আসানসোলে।’ হলও। কিন্তু বাবুল-পিচে সায়নী জমিয়ে ব্যাটিং করতে পারলেন না। উজ্জ্বল মার্কসিট নিয়ে শেষ হাসি হাসলেন অগ্নিমিত্রা পালই।