রাজনীতিতে কোনও কিছুই এখন আশ্চর্যের নয়। বাংলার রাজনীতিতে তো নয়ই। ভোট যত এগিয়ে আসছে, গেরুয়া শিবিরে ভিড় বাড়ছে শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের। তবে পিছিয়ে নেই সেলেবরাও। বিনোদুনিয়ার তারকারাও এখন ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে ঢুঁ মারছেন। কিন্তু চিরকাল রাজনীতির বাইরে ছিলেন টলিউডের 'ইন্ডাস্ট্রি' বলে খ্যাত প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বুম্বাদা বাংলা চলচ্চিত্র জগতের মহীরুহ বলা চলে। কিন্তু এবার তাঁকে নিয়েও জল্পনার পারদ তুঙ্গে। সরস্বতীর পুজোর দিন তাঁর বাড়িতে বিজেপি নেতার আগমনেই জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে।
তিনি নিজে কোনও দল না করলেও তাঁর বাবা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় অনেক দিন আগেই গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। বেশ কিছুদিন আগে বিমানে মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল বুম্বাদার। তখন সেটাকে চান্স মিটিং বলেছিলেন নেতা-অভিনেতা দুজনেই। কিন্তু তখন থেকেই জল্পনার আঁচ পাওয়া যায়। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেন প্রসেনজিৎ। মুখ্যমন্ত্রী তথা নবান্নের থেকেও দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। মঙ্গলবার সরস্বতী পুজো উপলক্ষে বুম্বাদার বাড়িতে দেখা গেল বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তথা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ফাউন্ডেশনের অন্যতম কর্তা। বিজেপির অভিযান সংক্রান্ত অমিত শাহের একটি বই প্রসেনজিৎকে উপহারও দেন তিনি।
হাসি হাসি মুখে সেই বই গ্রহণ করেন বুম্বাদা। এটাই প্রথম নয়, গত ২৩ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুষ্ঠানেও সাদর উপস্থিতি চোখে পড়েছিল প্রসেনজিতের। ছিলেন ইন্দ্রাণী হালদারও। তবে এদিন অনির্বাণ প্রসেনজিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, খুব তাৎপর্যপূর্ণ ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। তাতেই জল্পনা আরও গাঢ় হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তৃণমূলের মৌরসি পাট্টা ভাঙতেই বড় মাপের অভিনেতা-অভিনেত্রীকে দলে টানার চেষ্টা চলছে। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বহুদিন ধরেই গেরুয়া শিবিরের নজরে রয়েছেন।
সরস্বতী পুজোর সকালেই মুম্বইয়ে মিঠুন চক্রবর্তীর বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। দুজনেই জানান, সৌজন্যমূলক ও আধ্যাত্মিক যোগের কারণেই এই সাক্ষাৎ। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। আবার রাতেই বুম্বাদার বাড়িতে আরেক বিজেপি নেতা অনির্বাণ। বঙ্গে ভোটের মুখে বিজেপির 'স্যাফ্রন গেমস'-এর তীব্রতা বাড়ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন