সদ্য ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্ট করে অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র (Rupanjana Mitra) বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, "হঠাৎ করে নিজের ধর্মকে ছোট করে ‘লিবারাল’ কিংবা মুক্তমনা হতে গিয়ে যে যা পারছেন, তাই বলছেন!" এই বিষয়টিকে তিনি একেবারেই সমর্থন করেন না। উপরন্তু, ভারতীয় জনতা পার্টির একজন কর্মী হিসেবে তাঁকে 'ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি' নিয়েও কটু কথা শুনতে হয়েছে, 'ভীতু' তকমার শিকার হতে হয়েছে! সহকর্মীর কাছেই শুনতে হয়েছে যে, তিনি নাকি ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষকে বিয়ে করে নাম-পদবী বদলে ফেলেছিলেন! সেই প্রেক্ষিতেই এবার পালটা পোস্ট করে পরিষ্কার করে দিলেন বিষয়টি। জানিয়ে দিলেন যে, ভিন ধর্মে বিয়ে করলেও নিজের নাম-পদবী কোনওদিনই বদলাননি তিনি।
রূপাঞ্জনার স্পষ্ট মন্তব্য, "আমি সব ধর্মকে সম্মান করি। আর একটা ভুল শুধরে দিই আমি কোনও দিনই নিজের নাম-পদবী বদলাইনি। আর ভীতু কি সাহসী, সেটা সবাই জানে। শিল্পীদের পারিশ্রমিক সময় মতো পাওয়ানোর লড়াইয়ে হগু বছর আগেই নেমেছি। আসলে আমরা শিল্পীরাই একে-অপরকে ছোট দেখাতে পারলেই রাতে ঘুমটা বোধহয় আসে। আমাদের মধ্যে একতার এত অভাব বলেই সবাই হয়তো সুযোগ পায় আমাদের গালাগালি দেওয়ার...।"
এর পাশাপাশি 'দায়িত্ববান' শিল্পী হিসেবে অভিনেত্রী এও বলেছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়াতে হুমকি দেওয়া নিয়ে তিনি এর আগেও মুখ খুলেছেন। গত ২ বছর ধরে তিনিও হুমকি পাচ্ছেন বহুবার। এমনকী, টলিউড সহকর্মী-বন্ধুরাও নাকি তাঁদের বিরুদ্ধে বহু কু-কথা বলেছেন। আজও লিখছেন কেউ কেউ। আর সেটা একেবারে ব্যক্তিগত আক্রমণই বলা চলে। সেটা যে এতবছরে গা সওয়া হয়ে গিয়েছে, সেকথাও সংশ্লিষ্ট পোস্টে জানান অভিনেত্রী।
দলবদল, পালাবদল নিয়ে সরগরম টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়া। কাদা ছোঁড়াছুড়ির অন্ত নেই। এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়! কেউ কাউকে একচুল জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ। ‘গো-মাংস রান্না’ হোক কিংবা ‘জয় শ্রী রাম ধ্বনি’র বিরোধিতা, সবেতেই বিতর্কের স্ফুলিঙ্গ। ক্রমাগত খুন-ধর্ষণের হুমকি খেতে হচ্ছে শিল্পীদের। প্রতিনিয়ত ‘কণ্ঠরোধ’ করা হচ্ছে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে। রাজনৈতিক রঙের ঘেরাটোপে কোথাও যেন ‘শিল্পীসত্ত্বা’টাই চাপা পড়ে গিয়েছে! তাই তো ‘একদা বন্ধু’র দল-বদলানোর, সর্বপরি একই দলে যোগ দেওয়ার কথা শুনেও তাঁর ‘রাজনৈতিক আদর্শগত স্থিরতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেও পিছপা হন না সহকর্মীরা। দেবলীনা দত্ত (Debolina Dutta), সায়নী ঘোষ (Sayani Ghosh), রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh) টলিউড ইন্ডাস্ট্রির এই নামগুলির সঙ্গে প্রতিনিয়ত জড়িয়ে যাচ্ছে বিতর্ক। গত লোকসভা নির্বাচনের পর যেসব টলি-তারকারা পদ্ম শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরাও পিছিয়ে নেই। যার জল গড়িয়েছে রাজনৈতিক মঞ্চে নেতা-নেতৃদের বক্তৃতাতেও।
তাঁর ক্ষোভ সায়নী-দেবলীনাকে খুন-ধর্ষণের হুমকির প্রতিবাদে যে সভা আয়োজিত হয়েছিল, তাতে ‘রাজনৈতিক রং’ না লাগিয়ে ব্যক্তিগত কিংবা শিল্পী রূপাঞ্জনাকে ডাকলে, তিনি অবশ্যই যেতেন। “অনুষ্ঠানের ‘জয় হিন্দ’ স্লোগানই প্রমাণিত যে গোটা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি এখন একজনের হাতের পুতুল”, সাফ মন্তব্য বিজেপি কর্মী রূপাঞ্জনার।