বাংলার জমিতে ঘাসফুল আর পদ্ম ফোঁটার লড়াইয়ে যে-ই এগিয়ে থাকুক না কেন, গেরুয়া শিবিরের ‘বানান অভিধান’ ইতিমধ্যেই চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে শিক্ষিতমহলের কাছে। যা নিয়ে নেটজনতারাও রীতিমতো খোরাক শুরু করেছেন। তাঁদের কথায়, “আগে বাংলাটা ঠিক করে তো শিখুন, তারপর না হয়, বাংলার গদিতে বসার চিন্তা করবেন।” সেই প্রেক্ষিতেই এবার এলো সদ্য পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের (Srabanti Chatterjee) নামও। যে অভিনেত্রীকে কিনা একদা একুশের মঞ্চে দেখা যেত, সেই তিনিই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Mamata Banerjee) কটাক্ষ করতে পিছপা হননি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর! মমতাকে কটাক্ষ করে 'পিসির উন্নয়ন'মূলক টুইট করতে গিয়ে ট্রোলড হলেন নিজেই।
প্রসঙ্গত, গেরুয়া শিবিরের ফ্লেক্স-ব্যানার হোক কিংবা তাঁদের নেতামন্ত্রীদের মন্তব্য থেকে উচ্চারণ, বাংলার সংস্কৃতিকে অনেকাংশেই অপভ্রংশের অভিযোগ তুলছেন শিক্ষিতমহল। শ্রাবন্তীর পোস্টেও কিঞ্চিত বানান ভুল! আমফান ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মমতা সরকারকে বিঁধে তিনি লিখেছিলেন, "যাদের মাথা গোঁজার কোন ঠাঁই নেই তাদের কাছে ট্যাব কেনা বিলাসিতা নয় কী? আমফানের ঝড়ে উড়েছে চাল,কিন্তু কেন্দ্র থেকে ক্ষতিপূরণ এলেও তা পৌঁছায়নি ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে। তাই বাধ্য হচ্ছে মানুষ ট্যাবের টাকাতে বাড়ির ছাদ সরাতে। এটাই পিসির উন্নয়ন।" 'সরাতে' শব্দতেই গন্ডগোলের সূত্রপাত। ওটা আদতে 'সারাতে' হবে। ব্যস, অমনি নেটজনতা তৎপর হয়ে ওঠে গেরুয়া শিবিরের অভিনেত্রীকে ট্রোল করতে। তাঁদের একাংশ আবার এও প্রশ্ন তুলেছেন যে, "শ্রাবন্তী নিজে কি করেছেন আমফান দুর্গতদের জন্য?" তার উত্তর অবশ্য এখনও অধরাই।
অন্যদিকে সোমবার ময়নায় বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোক দিন্দার হয়ে প্রচার করতে গিয়েছিলেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই দৃঢ় কণ্ঠে বলে এসেছেন, "অতি শীঘ্রই আমি প্রার্থী হচ্ছি। আপনাদের আশীর্বাদ, ভালবাসা চাই।" উল্লেখ্য, গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়ার পর থেকেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে শ্রাবন্তীর প্রার্থী হওয়ার কথা। সেই জল্পনা জিইয়ে রেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পদ্ম শিবিরের হয়ে একের পর এক সুর চড়িয়ে চলেছেন অভিনেত্রী। তৃণমূলের “বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়” স্লোগানের পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “বাংলা চায় বিজেপি মডেল।” অতঃপর একুশে (West Bengal Assembly Election 2021) বাংলায় পদ্মফুল ফোটানোর লড়াইয়ে শ্রাবন্তী যে ইতিমধ্যেই শরিক হয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, শ্রাবন্তী বিজেপিতে যোগদানের পর অনেকেই আবার তৃণমূলের ‘স্টার’ প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁর তুলনা টানা শুরু করেছেন। বলছেন, ঘাসফুল শিবিরের বাঘা-তারকা যদি জুন-সায়নী কিংবা কৌশানীরা হন, তাহলে পদ্ম শিবিরের ‘স্টার’ শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, দক্ষিণ কলকাতার এক বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির (BJP) তরফে টিকিটও পেতে পারেন তিনি। সূত্রের খবর, গড়িয়া থেকেই সম্ভবত বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন। কারণ, বাংলায় শ্রাবন্তীর অনুরাগীদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর সেই ‘সংখ্যা-ত্বত্ত্ব’ ভোটবাক্সেও প্রভাব ফেলতে পারে। কাজেই টিকিট পাওয়ার জল্পনা উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়।