মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) খাসতালুক ভবানীপুর (Bhawanipur) বিধানসভা কেন্দ্রে ‘বিজেপির বাজি’ ‘তৃণমূল-ছুট’ রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। বৃহস্পতিবার প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছেন পদ্ম শিবিরের তারকা প্রার্থী। প্রতিপক্ষও হেভিওয়েট। মমতা-বাহিনীর পোড়খাওয়া নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভদেব চট্টোপাধ্যায়। তবে, ডাকসাইটে প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েও সম্মুখ সমরে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত রুদ্রনীল। কারণ তাঁর কাছে, লড়াইটা বিজেপি বনাম তৃণমূলের। প্রতিপক্ষ শোভনদেবের প্রতি তাঁর কোনও অভিযোগ নেই, বরং রুদ্রর মুখে অন্য কথা! বলছেন, "শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chattopadhyay) নিপাট ভাল মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী ওঁকে রাসবিহারি থেকে তুলে এনে ভবানীপুরে দাঁড় করিয়ে বিষপান করালেন।" তবে আসল রাগ তৃণমূল সুপ্রিমোর উপর। প্রচারের মাঝেও তা প্রকাশ পেল। পদ্ম শিবিরের তারকা প্রার্থীর সাফ কথা, "ভবানীপুর আসলে বদল চায়। তাই ভয়ে তৃণমূল নেত্রী পালিয়েছেন।"
শনিবার প্রচারে গিয়েও কিঞ্চিৎ চিন্তিত দেখালো না রুদ্রনীলকে। বরং খোশমেজাজে গুটি কয়েক লোক নিয়ে প্রচার সারলেন মমতা-গড়ের একাধিক এলাকায়। সেলফি তুললেন। মজায় মাতলেন। তার মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগরে দিতে শোনা গেল পদ্ম শিবিরের তারকা প্রার্থীকে। বললেন, "বাংলার মিনি ইন্ডিয়া ভবানীপুর এবার বদল চায়। আর এই বদলের ইঙ্গিতের আশঙ্কাতেই তৃণমূল নেত্রী নিজের কেন্দ্র থেকে বিদায় নিয়েছেন। এবার সেই চর্চিত ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে আমায় প্রার্থী করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।"
এখানেই অবশ্য থামেননি একুশের বিধানসভা ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) মুখে সবুজ রং বদলে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানো রুদ্রনীল ঘোষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে তাঁর মন্তব্য, "এই কেন্দ্রের অবস্থা তো দিদি নিজের হাতে খারাপ করেছেন। হেরে যাবেন নিশ্চিত জেনেই উনি এই কেন্দ্র ছেড়ে পালালেন। বিষপান করতে পাঠিয়ে দিলেন নিপাট ভদ্রলোক শোভনদেবকে! যিনি কম কথা বলেন। শরীরও অসুস্থ। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বন্ধু আমার। খুব খারাপ লাগছে। শোভনদেবও যে কেন কিছু বললেন না! একটা প্রতিবাদ করা দরকার ছিল। শাসকদলে ওঁর ভূমিকা আজও অনস্বীকার্য। কই যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক, তাঁদের তো ভবানীপুর থেকে প্রার্থী করলেন না? সুইসাইড করার জন্য এগিয়ে দিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে।"
প্রসঙ্গত, এককালীন বামপন্থী মনোভাবাপন্ন অভিনেতার ‘ভায়া তৃণমূল’ হয়ে বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টিকে মোটেই সুনজরে দেখেননি নেটজনতা তথা রাজনৈতিক মহলের একাংশ। অতঃপর পদ্ম-বনে যাওয়ার পথে তাঁকে ঘিরে জোর সমালোচনাও হয়েছিল। তবে সেসব আপাতত অতীত। কারণ, ভবানীপুরের মতো খাস তৃণমূল (TMC) ঘাঁটিতে বিজেপি (BJP) বাজি ধরেছে রুদ্রনীল ঘোষকে। অতঃপর কাঁধে এখন তাঁর গুরুদায়িত্ব। তবে মমতা-গড়ের পিচে লড়াইটা যে খুব একটা সহজ হবে না পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া অভিনেতার জন্য, তা হলফ করে বলাই যায়। কিন্তু পাল্টা চ্যালেঞ্জ নিতেও প্রস্তুত রুদ্রনীল ঘোষ।