সোমবারই শহরের পাঁচতারা হোটেলে একঝাঁক টলিতারকার সঙ্গে দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। মোদীর মন্ত্রীসভার সদস্যের সঙ্গে সেই বৈঠকে যেমন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির তাবড় প্রযোজকরা হাজির ছিলেন, আবার তেমনই উপস্থিত ছিলেন প্রথম সারির তারকারাও। একুশের নির্বাচনের আগে সিনে ইন্ডাস্ট্রির তারকাদের সঙ্গে এই 'ভাব জমানো'কে যখন একেবারেই সাদা চোখে দেখতে নারাজ রাজনৈতিক মহলের একাংশ, ঠিক তখনই আবার 'টলিউড বাঁচানো'র ডাক দিল বঙ্গ গেরুয়া শিবিরের তারকারা। নিশানায় তৃণমূলের 'বিশ্বাস ব্রাদার্স'!
অভিনেতারা এখন নেতাও বটে! রাজনীতি এবং গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রি এখন মিলেমিশে একাকার। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম কিংবা ঘাসফুল শিবির, কেউই কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ! অতঃপর দুই দলের তরফেই নির্বাচনী প্রচারে ‘স্টার-স্ট্র্যাটেজি’ তুঙ্গে! একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে বিনোদুনিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক ময়দানের এরকম একটা ‘মাখো-মাখো’ সমীকরণ হতে চলেছে, তা আগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল।
কৈলাস-মুকুলদের কাছে গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে পদ্ম বনে গিয়েছেন যশ দাশগুপ্ত, রুদ্রনীল ঘোষ, হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের মতো বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রির চেনা তারকারা। বিজেপিতে (BJP) যোগদান ‘চমক’-ই বটে! তৃণমূলকে (TMC) ছোঁড়া চ্যালেঞ্জও বলা যেতে পারে। সেই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে কাদা ছোঁড়াছুড়ির অন্ত নেই বর্তমানে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। রুদ্রনীল কিংবা হিরণ বিজেপিতে যোগ দিয়েই বাংলায় পদ্ম ফোটানোর আহ্বান জানিটয়েছেন। রুদ্রনীল তো আরও একধাপ এগিয়ে টলিউডে মাফিরাজ চলার অভিযোগ তুলেছেন। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে স্বজনপোষণের অভিযোগও তুলেছেন তিনি। আর অভিনেতার এই অভিযোগের সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন বিজেপির অন্যান্য তারকা সদস্যরাও। তাঁদের দাবি, "টলিউডে (Tollywood) এই অরাজকতা আর চলতে দেওয়া যাবে না।" সেই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতেই এবার তাঁদের দাবি, ধুঁকতে থাকা টলিউডকে এবার বাঁচাতে হবে।
প্রসঙ্গত, পরোক্ষভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির এই তারকা সদস্যদের নিশানা যে তৃণমূলের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস (Arup Biswas) এবং তাঁর ভাই স্বরূপের (Swarup Biswas) বিরুদ্ধে, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। সেই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার শহরে 'টলিউড বাঁচাও' অভিযানের আয়োজন করেছেন তাঁরা। টালিগঞ্জে কিশোরকুমারের মূর্তির পাদদেশ থেকে টেকনিশিয়ান স্টুডিও, এনটি-ওয়ান স্টুডিও হয়ে বিকেলে মিছিল এসে শেষ হওয়ার কথা দাসানি স্টুডিওয়। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ছাড়াও সবমিলিয়ে টলিপাড়ার প্রায় তিন হাজার কলাকুশলী মিছিলে অংশ নেবেন বলেই দাবি বিজেপির। যোগ দেবেন রিমঝিম মিত্র, সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষরা। হাজির থাকার কথা হিরণ-যশেরও।
গেরুয়া শিবিরের দাবি, ‘বিশ্বাস ভ্রাতৃদ্বয়’-এর ‘একচেটিয়া দখল’-এর হাত থেকে বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচাতেই উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। এঁরা হলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং তাঁর ভাই স্বরূপ বিশ্বাস। যাঁদের বিরুদ্ধে এর আগেও ‘ক্ষোভ’ দেখা দিয়েছিল টলিউডে।