কথায় বলে, হিরোদের যে ধরনের জনপ্রিয়তা সিনে দুনিয়ার বুকে থাকে, ভিলেনদের থাকে না। সিনে দুনিয়ার হিরো অর্থ, তারা বাস্তবেও কিছু মানুষদের কাছে হিরো কিংবা আইকন। তারা পারেন না এমন কোন কাজ নেই। এমনকি তাদেরকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে পূজা পর্যন্ত করা হয়। মন্দির স্থাপন করা হয় ভারতের বিভিন্ন জায়গায়। শুধু ভারত বলে ভুল হবে গোটা বিশ্বজুড়ে হিরোদের নিয়ে মানুষের আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। হিরোদের লাইফস্টাইল কিংবা, তাদের একেকটা ছবির নাম হরহর করে বলে দিতে পারবেন ভক্তরা। কিন্তু সেই ছবির আইকনিক ভিলেন? যে না থাকলে, হিরো 'হিরো' হয়ে উঠতে পারত না? এই মানুষটাকে আদৌ কেউ মনে রাখে?
হিরোদের মৃত্যু কিংবা হিরোদের এচিভমেন্ট, সবকিছু স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকে, সিনে দুনিয়ার প্রত্যেকটা লেয়ারে। এমনকি একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, হিরোদেরকে নিয়ে হওয়া গসিপ ও বেশিদিন টেকেনা সমাজে। হিরো তো? তাঁর একটা ব্লকবাস্টার জুবিলি ছবি সমস্ত রকম অভিযোগ নস্যাৎ করে দিতে পারে। কিন্তু একজন ভিলেন, যে দিনের পর দিন হিরোদের সঙ্গে লড়ে, সকলের কাছে নেগেটিভ কিংবা ভিলেন হয়ে ওঠেন, তাঁর খবর কেউ রাখে? এমন একজন ছিলেন বলিপাড়ায়। যিনি একাধারে লড়াই করেছেন অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে সঞ্জয় দত্ত কিংবা গোবিন্দার সঙ্গে... তারপর পারফরম্যান্স দেখে বহু মানুষ আঁতকে উঠেছেন, কিন্তু সেই মানুষটার মৃত্যু যে এভাবে হবে, কেউ জানতেও পারলেন না।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/movies/2019/feb/11mahesh2-647707.jpg?w=670&h=900)
তিনি চলে গেলেন কোন হাততালি ছাড়াই। তিনি চলে গেলেন কোনরকম প্রশংসা ছাড়াই। জানতেই পারল না কেউ, যে মানুষটা এক কালে স্ক্রিনে হিরোদের নাকানি-চবানি খাইয়েছেন, সে মানুষটা অদ্ভুত ভাবেই চলে যাবেন। তার অদ্ভুত মৃত্যুতে অদ্ভুতুড়ে কিছু খুঁজে বের করেছিলেন তার পাড়া-প্রতিবেশীরাই। প্রসঙ্গে মহেশ আনন্দ, তার অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে, স্তূপ করে রাখা ছিল বেশ কয়েকটি টিফিন বক্স। বাতাসে তখন পচা গন্ধ ছড়িয়েছে। দুর্গন্ধের জেরে পুলিশ যখন তার বাসায় ঢোকেন, দেখতে পান সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছেন মহেশ। পাশে আধা খাওয়া একটা টিফিন বক্স। এবং অর্ধেক খাওয়া একটা পানীয়। টিফিন বক্সের পরিমাণ বোঝা সম্ভব হচ্ছিল, তিনি হয়তো দিন দুয়েক আগেই মারা গেছেন। তার মরদেহ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে কুপার হাসপাতালে ছিল কিছুদিন। তারপরেই তার রাশিয়ান স্ত্রী, সেটা শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
কে ছিলেন এই মহেশ?
অভিনেতা হওয়ার আগেও তার প্রচুর প্রতিভা ছিল। তিনি একজন মার্শাল আর্ট আর্টিস্ট, সঙ্গে ড্যান্সার এবং মডেল ছিলেন। বহু ছবির জনপ্রিয় গানে তাকে ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসেবে দেখা গেছে। এবং পরবর্তীতে তিনি ছোট ছোট সুযোগ পেতে শুরু করেন। ১৯৮৮ সালের শাহেনশাহ ছবিতেই পেট্রোল তিনি পেয়েছিলেন সেই থেকে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। হাইট ছিল ছ ফুট ২ ইঞ্চ। প্রায় ৩০০ টি ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাকে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/rf/image_size_640x362/HT/p2/2019/02/10/Pictures/_21079306-2d12-11e9-b7de-6a9a06b91305-263091.jpg)
ব্যক্তিগত জীবন: যার ব্যক্তিগত জীবন ছিল সাংঘাতিক বিতর্কিত। রীনা রায়ের ছোট বোন বোরখা রায়কে তিনি প্রথম বিয়ে করেছিলেন। দ্বিতীয় বউ ছিলেন, এরিকা মারিয়া ডিসুজা। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে একটি ছেলে হয় তার। তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন মধু মালহোত্রা। সেই বিয়েও টেকেনি। একে একে পাঁচখানা বিয়ে করেছিলেন তিনি। এবং বিয়ে তো বিয়ে তার সম্পর্ক ছিল প্রায় বারোটা। সে সম্পর্ক একটাও আড়ালে ছিল না। কিন্তু কেরিয়ারে অক্ষয় কুমার থেকে গোবিন্দা সানি দেওল প্রত্যেকের সঙ্গেই, তিনি স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন।