মাত্র ১৭ বছর বয়সে গ্ল্যামার জগতের প্রবেশ প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীর। তারপর বহু প্রতিকূলতা, প্রত্যাখ্যান সহ্য করে আজ তিনি বলিউডের প্রথম সারির নায়িকা। জগৎজোড়া খ্যাতির পিছনে রয়েছে পিগি চপসের বুদ্ধিমত্তা এবং সিনেমার চরিত্র নির্বাচন। 'হামরাজ' ছবি দিয়ে বলিউডে অভিষেক হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হলেও শেষমূহুর্তে তা ভেস্তে যায়। ফলে তামিল ছবি 'থামিজান' দিয়ে সিনে দুনিয়ায় পা রাখেন দেসি গার্ল। বলিউডে যাত্রা শুরু সানি দেওলের 'হিরো' ছবি মাধ্যমে। তবে কেরিয়ারের প্রথম থেকেই প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার চরিত্র নির্বাচন তাঁকে ভিড় থেকে আলাদ করেছিল।
সলমন খান এবং অক্ষয় কুমারের সঙ্গে 'মুঝসে শাদি করোগি'র মতো ছবি করার পর 'এতরাজ' ছবিতে নেগেটিভ রোলে পর্দায় এলেন প্রিয়াঙ্কা। কেরিয়ারের শুরুর দিকেই এরকম একটা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সমালোচনা কুড়িয়েছিলেন তিনি। একইসঙ্গে নজরে এসেছিলেন অনেকের। ফিল্মফেয়ারে সোনিয়া রাও পেলেন সেরা নেগেটিভ চরিত্রের পুরস্কার। হিট-ফ্লপের ঝুলি থেকেও এরপর আলাদা করে নজরে আসতে থাকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অভিনীত চরিত্রগুলি। 'কৃশ' সিরিজ, 'ডন', 'ব্লাফমাষ্টার' - বক্স অফিসে দারুন ব্যবসা করে। ২০০৮-এ মধুর ভান্ডারকরের পরিচালনায় পর্দায় আসেন 'ফ্যাশন' ছবিতে। মেঘনা মাথুর চরিত্রটা সাড়া ফেলে দেয় বি-টাউনে। এই ছবির কারণেই মাত্র ২৬ বছর বয়সে তাঁর হাতে আসে জাতীয় পুরস্কার। অভিনয় জগৎ একরকম বশ্যতা স্বীকার করে তাঁর কাছে।
অনেক ভুল বোঝাবুঝি, অনেকর বিরাগ ভাজন হয়ে প্রিয়াঙ্কা টিকে থাকার লড়াইয়ে সামিল ছিলেন। ২০১২-তে 'বরফি'। অনুরাগ বসুর পরিচালনা এবং রণবীর কাপুরের মত সহ অভিনেতা, সম্ভবত অভিনেত্রীর কেরিয়ারের সেরা ছবি। ঝিলমিল জিতে নেয় সমালোচকদের হৃদয়ও। এরপরেই 'মেরি কম', 'বাজিরাও মস্তানী' - প্রিয়াঙ্কার চরিত্র নির্ণয়ই তাঁকে টিকিয়ে রেখেছে ইঁদুর দৌড়ে। ২০১৬-তে ভারত সরকার তাঁকে প্রদান করেন পদ্মশ্রী সম্মান। সেবছরই আসাম ট্যুরিজমের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হন তিনি।
আরও পড়ুন, #AskSRK session: শাহরুখ প্রমাণ করলেন কামব্যাকে তিনি পারদর্শী
এরপরই শুরু প্রিয়াঙ্কা হলিউড যাত্রা। 'কোয়ান্টিকো' টিভি সিরিজ দিয়ে হলিউডে পা রাখার প্রকাশ্যে ঘোষনা তাঁর। প্রচুর বিতর্ক হয়েছে অভিনেত্রীর এই চরিত্র নিয়ে। এর আগে অবশ্য র্যাপার-গায়ক পিট বুলের সঙ্গে 'এক্সটিক' গান গেয়ে নিজের সুপ্ত গুণ সামনে এনেছিলেন তিনি। পরপর 'কোয়ান্টিকো' তিনটে সিরিজ, সঙ্গে 'বেওয়াচে'র মতো ছবি করেছেন প্রিয়াঙ্কা। এখনও তাঁর তালিকায় রয়েছে 'অ্যা কিড লাইক জ্যাক',' ইজন্ট ইট রোমান্টিক?'- এর মতো হলিউড ছবি। আর বলিউডে ফিরছেন সলমন খানের সঙ্গে 'ভারত' ছবিতে। প্রিয়াঙ্কার কেরিয়ারে এই সময়ে দাঁড়িয়ে তাই সহজে বলা যায় শুরু থেকেই নায়িকা চরিত্র নির্বাচন, এবং সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তই তাকে সফলতার শীর্ষে নিয়ে গেছে। তাই আজ ৩৬শে পা রেখে প্রিয়াঙ্কার কেরিয়ারের দিকে ফিরে তাকালে বলতেই হয়, ওয়েল ডান, গার্ল!