সত্যকামের শক্তিশালী বাণ নিয়ে পুজোয় ব্যোমকেশ। আবারও সত্যান্বেষী আসছেন রহস্যের সমাধানে। তবে রহস্যের জাল ঘনীভূত করতে জোরদার চিত্রনাট্য ফেঁদেছেন পরিচালকও। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রক্তের দাগ’ অবলম্বনে এবারের ছবি 'ব্যোমকেশ গোত্র', যা আজ মুক্তি পাচ্ছে। মুক্তির আগের মুহুর্ত পর্যন্ত ব্যস্ততা অরিন্দম শীল ও আবির চট্টোপাধ্যায়ের। কিন্তু তারই ফাঁকে সময় করলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার জন্য।
শরদিন্দুর সত্যকামের তুলনায় অরিন্দমের সত্যকাম কি বেশি সাহসী?
অরিন্দম: আমি সাহসী বলে। ১৯৫৬ সালে কলকাতার পটভূমিকে আমি ১৯৫২-র মুসৌরীর পটভূমি করেছি, এটা করতেও সাহস লাগে। তার থেকে বেশি দরকার হয় পড়াশোনা। সেই রিসার্চটা আমরা করেছি। এটা বুঝতে হবে, ছবি আর বইয়ের ব্যক্ত করার আলাদা ধরন থাকে। প্রত্যেকটা চরিত্রকে আর একটু জাস্টিফাই করেছি। তবে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় যথেষ্ট সাহসী ছিলেন।
আবির, আপনার ব্যোমকেশ করতে করতে একঘেয়েমি আসে না?
আবির: (প্রায় এক নিঃশ্বাসে) একদম একঘেয়ে লাগে না। কীসের একঘেয়েমি, প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা গল্প থাকে। তবে এটা চ্যালেঞ্জ থাকে, দর্শকদের যেন বোরিং না লাগে। প্রতিবারের লক্ষ্য থাকে দর্শদের ভাবানো, হোয়াট নেক্সট।
ব্যোমকেশ কেন দেখবেন দর্শক?
আবির: সব কিছুর জন্য। গল্পটা তো ভীষণ প্রাসঙ্গিক। কাস্ট, অভিনয়, ১৯৫২-র প্রেক্ষাপট মুসৌরি, সিনেমাটোগ্রাফি, কোনটা বাদ দেব? রাহুলের প্রথমবার বড় পরিসরে অজিতের চরিত্র করা। আর অর্জুনের তো মোস্ট চ্যালেঞ্জিং রোল।
অর্জুনের আগে কাউকে সত্যকামের চরিত্রে ভেবেছিলেন?
অরিন্দম: হ্যাঁ! আমার মনে পরমব্রতর নাম এসেছিল। পরমকে আমি বলেওছিলাম। পরবর্তীকালে মনে হয়েছে, ওর বয়সটা একটু বেশী। ২৩-২৪ এর পরমকে পেলে ভাল হত। কিন্তু অর্জুনের ফ্রেশনেস অনবদ্য।
রক্তের দাগ কেন বাছলেন অরিন্দম শীল?
অরিন্দম: ভীষণ ইন্টারেস্টিং গল্প। তাছাড়া প্রবীর দাও (শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পের স্বত্ত্বাধিকারী) চেয়েছিলেন যেন আমি এই ছবিটা করি। আমার আফসোস, উনি দেখে যেতে পারলেন না। বলেছিলেন, "অরিন্দম, রক্তের দাগটা কর"। গল্পটাতে লেয়ারস আছে, জটিলতা আছে, সম্পর্ক আছে। সমসাময়িক করার রসদও আছে, যেটা আমরা করেছি।
শীর্ষেন্দু ও শরদিন্দু, দুই নামই এবার আবিরের ঝুলিতে?
আবির: ভাল তো! সাহিত্য নির্ভর ছবি হচ্ছে। তবে 'মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি'-তে ক্যামিও রোলে আমি। সেকারণেই বেশি কথা বলতে চাইছি না। সাসপেন্সটা বজায় থাকুক না। আসলে এই মানুষগুলো এমন লেখা লিখে গিয়েছেন যে আজও তাদের আবেদন বিদ্যমান।
অঞ্জন দত্ত ও অরিন্দম শীলের ব্যোমকেশের পার্থক্য কোথায়?
আবির: অরিন্দম দার ব্যোমকেশ অনেক বেশি সিনেম্যাটিক। বিটুইন দ্য লাইনস আরও অনেক কিছু ঘটে, এবং অনেক বেশি সূক্ষ্ম। আমার মনে হয় লার্জার দ্যান লাইফ।
অঞ্জন দত্ত তো এবার আপনার অভিনেতা?
অরিন্দম: ও তো লাইক অ্য চাইল্ড। সেই বং কানেকশনের সময়ের অঞ্জন দত্তকে ফিরে পেয়েছি। আমার অবজারভারদের সঙ্গে বসে পরের দিনের কল শিট তৈরি করত। আবিরের জল, অমুকের মেকআপ, সবটা দেখত। আমাদের দুজনের একটা ইচ্ছে হয়েছে একটা ছবি তৈরি করার।
সেটা কোন ছবি?
অরিন্দম: তা বলা যাবে না। অন্য কেউ করে দিতে পারে তাই এক্সক্লুসিভিটি বজায় রাখলাম বলে দিয়ে।
আবির কি বাকি ছবিগুলো দেখবে পুজোতে?
আবির: না, পুজোয় কিছু দেখার উপায় নেই। প্রচুর কাজ। অনেক ব্র্যান্ড এন্ডোর্সমেন্ট রয়েছে। পুজোর মধ্যে কিছুতেই হবে না।