এতদিন চুপ ছিলেন, তবে এবার মুখ খুলেছেন। চন্দ্রিল ভট্টাচার্য অবশেষে সহজেই সবকিছু বলে দিলেন। বিশেষ করে দিন দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, একমাস হয়ে গেল, এবার উৎসবে ফিরুন। তারপরই, শুরু হয় সমালোচনা। সাধারণ মানুষ যেমন এই কথার প্রতিবাদ করেছেন, তেমনই তারকারা চুপ নেই।
উৎসব কাকে বলে? মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধের নিরিখেই চন্দ্রিল যা বললেন, তাতে কেউ কেউ সহমত। আবার কেউ কেউ এতদিনে তাঁর টনক নড়ল? এমন প্রশ্নও তুলছেন। চন্দ্রিল বলছেন... "উৎসব কাকে বলে? যে জিনিসটা আমাদের একটু সাময়িক আনন্দ দেয়। যে জিনিসটা আমাদের খুব অল্প দিনের জন্য আনন্দ দিতে পারে, সেটাই উৎসব। মূলত, জেতার জন্য আমরা সব দুঃখ কষ্ট ভুলে থাকি। কিন্তু, এক প্রধান সমাজতত্ববিদ জানিয়েছেন, উৎসবের নতুন একটি তথ্য। তিনি বলছেন, যদি উৎসব শুরু হয়ে যায়, তাহলে প্রতিবাদ থেমে থাকতে হবে। প্রতিরোধ থেমে থাকতে হবে। বিদ্রোহ হবে না। ঠিক যেরকম রেফারি খেলা শেষে বাঁশি বাজিয়ে দিলে তুমি আর খেলা চালাতে পারো না। ঠিক তেমনই, তোমার মনে যতই ক্ষোভ রাগ কিংবা আক্রোশ সেটা তুমি উগরে দিতে পারো না।"
নানা প্রশ্ন তুললেন চন্দ্রিল?
উৎসব ঘোষণা করলে আর চোর ধরা যাবে না। এমনটাই সংজ্ঞায়িত করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। চন্দ্রিলের কথায়, "কী ঘটেছে? একটা প্রখর অন্যায় ঘটেছে। সেই অন্যায়ের প্রতিকার করার কথা যাদের ছিল, তারা প্রমাণ লোপাট করেছে। এবং সেই অন্যায়ের এক প্রধান হোতাকে আরও উপরে উঠিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ফলত, একটা সমাজ যে প্রতিশ্রুতির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, যে কেউ অন্যায় করলে তাঁকে শাস্তি দিতে হবে, সেটাই যেন ভুল প্রমাণিত হল। সেইজন্য কিছু লোক প্রতিবাদ করেছে।
কিন্তু এত প্রতিবাদ কেন? মানুষের জনরোষ কি শুধুই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে? তাঁর কথায়, "দীর্ঘ অনেকদিন ধরে সরকারের একেকটা বিষয়, মানুষকে আঘাত করছিল। আর এই ঘটনায় সেই ক্ষোভটা ভয়ংকর মাত্রা নিয়েছে। এবং তারা ক্রোধটা উগরে দিয়েছে।" কিন্তু সরকারের এতে কোনও যায় আসে না। এই যে মানুষ এত রাগ ক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাতে সরকার পক্ষের কিছু যায় আসে না বলেই তিনি জানিয়েছেন।
Posted by Chandril Bhattacharya on Tuesday, September 10, 2024
চন্দ্রিল বলেন, "সরকার কি এতে ক্ষমাপ্রার্থী? তাঁরা কি একবারও বলেছেন যে আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে? না তারা শাসকের কট্টর সুরে বলেন, এসব করতে যেও না। তাঁরা হুমকি দিলেন, যে আমরা কিছু বিকৃত ছবি বানিয়ে টাঙিয়ে দেব। কেউ কেউ শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ করলেন। আর প্রধান যিনি, উনি উৎসবের তত্ত্বটা এনে হাজির করলেন। তাঁর শব্দটা ঠিক এমন ছিল যে, ভুল পথে যাচ্ছিলে, এবার ফিরে এস। অভিভাবকরা যেমন বলেন আর কি।"
উৎসবের আগে অন্যায় করলে, তারপর উৎসব শুরু হলে তাঁর কোনো বিচার হবে না। সেরকমই প্ল্যানিং শাসকদলের এমনটাই দাবি, চন্দ্রিলের। উৎসবের মুখে এনে বিষয়টাকে ফেলতে পারলে, তাঁর আর কোনও অন্যায় দেখা হবে না। কারণ, উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি আরও বলছেন, এতে কী হবে? যে অন্যায় করছে, সে আরও গায়ে ফুঁ দিয়ে ঘুরে বেড়াবে। তাঁর গায়ে আচর লাগবে না। শেষে কবিতা দিয়েই সবটা বুঝিয়ে দিলেন তিনি। বলছেন...
"অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, উৎসব তাদের ঘিরে, নদীসম বহে। অন্যায় প্লাস্টিকে মুড়ে, উৎসবের স্রোতে, ফেলে দাও, ভেসে যাবে নানান হুজ্জুতে..."