এখন নাগরিক জীবনের কেন্দ্রে থাকে তারিখ। তার আনন্দ অথবা শোক, এ সবই কোনও না কোনও তারিখ ঘিরে। দৈনন্দিনতাও স্থির হয় ডেট দেখে। সোশাল মিডিয়ায় উদযাপিত হয় বিশেষ দিন। কোনও সাধারণ দিন, যার তারিখ কোনও উদযাপনের নয়, তার গুরুত্ব কোথায়? দ্বিতীয় ছবিতে তারই উত্তর খুঁজেছেন চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়।
'তারিখ' বলতে আমরা টাইমনলাইন বলতে পারি তো?
একদমই তাই ধরে নেবেন। টাইমলাইনই। কারও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে গিয়ে প্রথম থেকে শেষ যা পোস্ট করেছে সবটা খুঁটিয়ে দেখলে মানুষটার জীবনের একটা চিত্র তৈরি হয়। তাঁর ভাবনা, ভাললাগা সবটার আন্দাজ পাওয়া যায়। এই টাইমলাইনের প্রতিটা পোস্ট ধরে ধরেই গল্পটা বানিয়েছি। কিছুটা বলেছি...খানিকটা দর্শকের আন্দাজের উপর ভরসা করেছি।
ওহ! কিছু তারিখের প্যাটার্নের মাথায় রেখেও চিত্রনাট্য বুনেছি। ধরুন আজ আমার জন্মদিন, পরের মাসের সে দিনটায় কী করেছি... এভাবে।
'তারিখ' সোশ্যাল মিডিয়ার নির্দিষ্ট কোনও দিক নিয়ে কথা বলে কি?
না! আমার ছবিতে কোনও জাজমেন্ট নেই। যেটা যেরকম আমি সেভাবেই দেখাতে চেয়েছি। দর্শক কীভাবে গ্রহণ করবেন সেটা তো আমার হাতে নেই।
তারিখ-এর শুটিংয়ে চূর্ণী। ফোটো- অপেরা মুভিজ
নিজে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শতহস্ত দূরে, অথচ চূর্ণীর ছবি 'তারিখ'
সোশ্যাল মিডিয়া প্রসঙ্গে আমায় জিজ্ঞেস করলে বলব, এটা ভীষণ ভাল হাতিয়ার। সঙ্গীত, কবিতা, সাহিত্য, সিনেমার মতোই আরও একটা শক্তিশালী অস্ত্র যেটা দিয়ে যুদ্ধ থামাবার চেষ্টা করতে পারি। পলিটিক্যাল বা সোশ্যাল মাইন্ডসেট বদলাতে এই সফটস্কিলগুলোই পারে। যে কোনও মতাদর্শই সংশোধন হয় তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে। সেখানে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি তো নিজে সোশ্যাল মিডিয়া বিমুখ?
বিমুখ ঠিক না। আমার ফোন হ্যাবিটসই খুব খারাপ (হাসি)। টিভি চালাতে রিমোট না থেকে মেইন সুইচে চললে বেশি সুবিধে মনে হয়। তাহলেই বুঝুন। আমি থাকি একঘরে, ফোন অন্যঘরে। ল্যান্ডলাইন বানিয়ে ফেলেছি। কারণ বাড়িতে দু'জন ছেলে, তাদের পকেট আছে! আমার তো আর সেটা নেই।
বাঁদিক থেকে ঋত্বিক চক্রবর্তী, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।
চিত্রনাট্য তাহলে কাগজ-কলমে লেখেন বোধহয়!
না, এটা আমি ল্যাপটপে করি। আসলে লিখতে গিয়ে এত কাটাকুটি হয় যে বিষয়টা বিচ্ছিরি জায়গায় পৌঁছে যায়। সেকারণেই টাইপ করে লিখি। নেহাত রিলিজ আছে বলে সজাগ থাকার চেষ্টা করছি। নচেৎ একদম দেখি না হোয়্যাটসঅ্যাপ। সবাই বলছে এখন অন্তত কিছু তো লেখ (হাসি)।
অনেকটা সময় নিলেন 'নির্বাসিত'র পর...
আসলে 'নির্বাসিত'র পর পরই তারিখটা লিখেছিলাম। কাজও শুরু হয়েছিল। অনেকটা হয়ে যাওয়ার পর আটকে যায়। পরে সুপর্ণ কান্তি বলায় ছবিটা করলাম। এর মধ্যেখানে অন্যকাজ করতেই পারতাম কিন্তু একটা প্রস্তুতি চলে আসে মনে মনে এটা বানাবো। সেই মূহুর্তটায় 'তারিখ'ই আগে বানাতে ইচ্ছে করেছে। কারণ, ছবিটার বিষয় এখন অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক।