একুশে বাংলার গদিতে চোখ মোদীর মন্ত্রীসভার। মসনদ দখলের লড়াইও হাড্ডাহাড্ডি। ঘন ঘন বাংলা সফরে আসছেন ভারতীয় জনতা পার্টির হেভিওয়েট 'মুখ'রা। তবে রাজ্যের রাশ টানতে একাই একশো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বলছেন দলেরই কর্মী-সমর্থকরা। অতঃপর হুইল চেয়ারে বসেই নবান্ন দখলে রাখার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কখনও নন্দীগ্রাম, আবার কখনও বা রাঙামাটির গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবারও বাঁকুড়ায় (Bankura) তিনটি সভা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আক্রমণের নিশানা মোদী-শাহ এবং তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়া দলছুটরা! সেই সভার মঞ্চ থেকেই তারকা প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Sayantika Banerjee) দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন দলনেত্রী। বললেন, "সায়ন্তিকা আমার প্রিয় প্রার্থী। ওকে ভোট দিলে ভুল করবেন না।"
সভায় তৃণমূলের (TMC) তারকা প্রার্থীকে সামনে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, "সায়ন্তিকা কিন্তু যে সে নয়, পুলিশ পরিবারের মেয়ে। ওঁর বাবা পুলিশে চাকরি করতেন। এখনও খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। ওঁকে ভোট দিলে ভুল করবেন না। ওঁকে ভোট দেওয়া মানে আমাকে সমর্থন জানানো।" ওদিকে বাঁকুড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দও মমতার কপালে ভাঁজ ফেলেছিল। উপরন্তু গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় তৃণমূলকে কার্যত ধুয়ে সাফ করে দিয়েছিল বিজেপি (BJP)। যার নেপথ্যের কারণ ঠিক যতটা ছিল মোদি 'হাওয়া', আবার ততটাই দায়ী তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। এবার বিধানসভা ভোটের আগেও সেই একই চিত্র। কাজেই দলীয় কোন্দল যে ঘাসফুল শিবিরের জন্য বেজায় চিন্তার তা বাঁকুড়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের মাঝেই বোঝা গেল।
প্রসঙ্গত দিন কয়েক আগেই অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করায় বেজায় ক্ষেপে উঠেছিলেন ঘাসফুল শিবিরের স্থানীয় ডাকসাইটে নেত্রী শম্পা দরিপা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন শম্পা ও তাঁর অনুগামীরা। তবে সেই বরফ আপাতত গলেছে। সায়ন্তিকার হয়ে প্রচারে নামতে সবুজ সংকেত দিয়েছেন শম্পা। বাঁকুড়ার সভায় এদিন তৃণমূলের সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঢাকারও চেষ্টা করেন মমতা।
ঘাসফুল শিবির সুপ্রিমোর কথায়, "শম্পা খুব ভালো। এবার ওঁকে প্রার্থী করিনি ঠিকই। তবে, দল শম্পাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগাবে। আমার দলে কর্মীরাই আসল সম্পদ। কেউ ভুল বুঝবেন না। আমরা আমাদের কর্মীদের নিয়েই চলি। অন্য কোনও দল যা করে না।" তবে দলীয় কোন্দলের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে এমন দরাজ সার্টিফকেট পেয়ে বেজায় আপ্লুত তৃণমূলের তারকা প্রার্থী।