তাঁকে স্ক্রিনে দেখলেই হেসে উঠতেন সকলে। তাঁর অঙ্গভঙ্গি এবং পারফরম্যান্স দেখলেই খিলখিলিয়ে উঠতেন সকলে। 'কিং অফ কমেডি'- রাজু শ্রীবাস্তব ( Raju Srivastava ) আর নেই। লড়াই শেষ ৪১ দিনের। কোটি কোটি মানুষকে হাসিয়ে রাজু পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে। তবে হাসি-কৌতুকের এই দুনিয়ায় নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করার পথ একেবারেই সহজ ছিল না।
ছোট থেকেই হাসতে আর হাসাতে ভালবাসতেন তিনি। কৌতুক অভিনয়ের প্রতি টান ছিল সাংঘাতিক। কিন্তু পরিবার? বাবা রমেশচন্দ্র শ্রীবাস্তব ছিলেন কিংবদন্তী কবি। তাঁর কবিগান শুনতে হাজির হতেন নানান গুণী ব্যাক্তিরা। এরকম একজন মানুষের ছেলে হয়ে নাকি লোক হাসাবেন? কল্পনা করাও ঠিক নয়। কিন্তু ছোট থেকেই এই ভালবাসা মনে পুষে রেখেছিলেন তিনি।
স্বপ্ন সফলের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন মুম্বাই। কিন্তু সেখানেও সহজে ঠাই মেলেনি। নিজের পারদর্শিতা দেখানোর সুযোগটুকু সহজে মেলেনি। বাবার সূত্রে শিল্পীসত্বা পেলেও এ যেন একেবারে ভিন্ন ধরনের বিষয়। মুম্বইতে সহজ ছিল না নিজের পরিচিতি পাওয়া। প্রথমে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন অটো চালানোকে। যাত্রীদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করতেন, নানান ধরনের জোকস-চুটকি শোনাতে শোনাতেই একদিন সুযোগ পেয়ে গেলেন। নানান অনুষ্ঠানে গিয়ে হাসানোর ডাক পেতেন তিনি। সেই বাবদ কখনও ৫০ টাকা, কখনও ৮০ টাকা পেতেন।
আরও পড়ুন < থামল ৪১ দিনের লড়াই, প্রয়াত কমেডিয়ান রাজু শ্রীবাস্তব >
কৌতুকের জগতে পা রাখলেও, পরিচিতি লাভ করতে লেগেছিল দীর্ঘ ২০ বছর। আজ কমেডি কিংবা হাস্যও-কৌতুকের জগত যে জায়গায় পৌঁছেছে তাঁর ভিত্তি প্রস্তর গড়েছিলেন রাজু নিজেই। তাঁদের কারণেই একাধিক সিনেমা সুপারহিট, কিন্তু পার্শ্বচরিত্রের বাইরে, কিংবা কৌতুক অভিনেতার বাইরে পরিচিতি ছিল না বললেই ছিল।
টিভির পর্দায়, 'টি টাইম মনোরঞ্জন' থেকেই পরিচিতি পান রাজু। পরবর্তীতে বলিউডের নানান ছবিতে কাজ করেছেন, মানুষকে হাসিয়ছেন। 'দ্যা গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার' চ্যালেঞ্জই ঘুরিয়ে দিল তাঁর জীবন। গজোধর ভাইয়ার চরিত্র মন জয় করেছিল দর্শকদের। এই একটি রিয়্যালিটি শো রাজু শ্রীবাস্তবকে জায়গা করে দিল মানুষের মণিকোঠায়। দীর্ঘদিন বিচারক হিসেবে থেকেছেন, নানান অনুষ্ঠানে। মাটির মানুষ রাজুকে ভালবাসতেন সকলেই। রাজনীতির মঞ্চেও তাঁকে দেখা গিয়েছে।