ভারতীয় তারকা পেস বোলার মহম্মদ শামির (Mohammed Shami) স্ত্রী তিনি। দাম্পত্য কলহ, শামির সঙ্গে বিবাদ, তাঁকে নিয়ে যেন বিতর্কের অন্ত নেই! তবে তার মাঝেই 'জাহান' সুন্দরী কিন্তু দিব্যি ফিল্মি কেরিয়ারে মন দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই 'নায়িকা সংবাদ' সিনেমার দৌলতে পর্দায় অভিনেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ফেলেছেন। এবার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত সিনেমায় এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে মহম্মদ শামির স্ত্রী হাসিন জাহানের (Hasin Jahan) দেখা পেতে চলেছেন সিনেদর্শকরা। যে ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের (Soumitra Chatterjee) সঙ্গে স্ক্রিনস্পেস শেয়ার করতে পেরে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত তিনি।
ছবির নাম 'তিতলি'। পরিচালনা করেছেন বিশিখ তালুকদার। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবতী বলেই মনে করছেন হাসিন জাহান। উল্লেখ্য, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষ শুটিং এই সিনেমাতেই। ইতিমধ্যেই 'তিতলি' দেশ-বিদেশের একাধিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হওয়ার পাশাপাশি বহুল প্রশংসিতও হয়েছে।
সিনেমার গল্পটা কীরকম? অশীতিপর এক বৃদ্ধ মহেন্দ্রবাবু। যিনি কিনা কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। অসবর নেওয়ার পর একরত্তি নাতনি তিতলিকে নিয়েই যাঁর জগৎ। নিজের শিক্ষা-সংস্কৃতির সবটাই তিনি তাঁর আদরের নাতনিকে উজার করে দিতে চান। তবে বাদ সাধে তিতলির মা পায়েল। যিনি নিজে একজন দক্ষ নৃত্যশিল্পী হয়েও সংসারের চাপে কেরিয়ার টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। তাঁর কেরিয়ার গড়ার নেপথ্যে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন শ্বশুরমশাই মহেন্দ্রবাবু। তাই নিজের মেয়ে তিতলির মধ্যে দিয়েই নিজের সাধপূরণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। ওই একরত্তি খুদে মেয়েকে রিয়ালিটি শোয়ের ইঁদুর দৌড়ে শামিল করাতেই দিনরাত উঠে-পড়ে লেগেছিলেন মা পায়েল। কিন্তু মহেন্দ্রবাবু সেক্ষেত্রেও বাঁধা দেন। আসলে একটা ফুলের মতো শৈশবকে নষ্ট করে দিতে তিনি নারাজ। মহেন্দ্রবাবুর কথায়, কালের নিয়মে রংচঙে রিয়ালিটি শোয়ের নেপথ্যে এরকম আরও কত তিতলির শৈশবকে যে জলাঞ্জলি দিয়ে যাচ্ছেন বাবা-মায়েরা, তা অজানা। তাদের কী হবে? মহেন্দ্রবাবুর মতো কেউ কি তাদের এই সর্বনাশের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াবেন? সিনেদর্শকদের কাছে সেই প্রশ্নই ছুঁড়ে দিয়েছে 'তিতলি'।
আদর্শবাণ অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মহেন্দ্রবাবুর চরিত্রেই দেখা যাবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। আর তাঁরই পূত্রবধূর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হাসিন জাহান। স্মৃতি রোমন্থন করে বললেন, "সৌমিত্রকাকুর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। অতো বড় মাপের একজন মানুষ, কিন্তু সেটে সবসময়ে গুরুজনের মতোই গাইড করতেন। প্রত্যেকদিন শুটিং শেষ হওয়ার আগে আমার সঙ্গে দেখা না করে যেতেন না। বলতেন, 'মেয়েটাকে ডাকো, দেখা করে যাই।' অভিনয়ের অনেক খুঁটিনাটি নিয়েও পরামর্শ দিয়েছেন। নিজেকে ভাগ্যবতী বলে মনে করি যে, ওঁর মতো একজন কালজয়ী অভিনেতার সঙ্গে একই সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি। আক্ষেপ হয় যে, উনি সিনেমাটা দেখে যেতে পারলেন না।"
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং হাসিন জাহানের পাশাপাশি ছবিতে অভিনয় করেছেন ঋতব্রত ভট্টাচার্য, সমৃদ্ধি, কাঞ্চনা মৈত্র, সোমা চক্রবর্তী, পিয়া সেনগুপ্ত, দেবিকা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।