শেষ কিছুমাস নিজেদের বিয়ের চর্চার কারণেই দর্শনা বণিক বেশ আলোচনায় ছিলেন। তবে, বর্তমানে কাজের জন্য বেশ ব্যস্ততা রয়েছে। এপার বাংলায় রিলিজ করতে চলেছে সূর্য। যে ছবিতে কাজ করছেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায় এবং মধুমিতা সরকারও। আর তাঁর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওপার বাংলাতেও তাঁর ইতিবৃত্ত নাটকটি বেশ পপুলারিটি পেয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবন ছেড়ে যখন কাজ নিয়ে আলোচনা হয়, তখন বোধকরি সব তারকাই বেশ আনন্দে থাকেন। এবারও ব্যতিক্রম না। তাই তো, দর্শনা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে কথপোকথনে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি।
সূর্য ছবিতে তোমার চরিত্রটা ঠিক কীরকম?
আমার চরিত্রের নাম দিয়া। একটা ব্যাক স্টোরি আছে। একটা জার্নি আছে। খুব অন্যরকম। আমি আগে করিনি। মেকাপ নেই, ডি গ্ল্যাম। সেইজন্যই হ্যাঁ বলা। অনেকেই আমায় বলেছেন, বেশ অন্যরকম।
একই ছবিতে যখন আরেকজন লিড নায়িকা থাকে, তাতে অভিনয় করতে বা স্ক্রিন প্রেসেন্স নিয়ে চাপ থাকে?
দেখো, স্ক্রিনে যখন আমার কেউ সমসাময়িক আছে, তখন উপস্থিতি নিয়ে তো একটা কনসার্ন থেকেই যায়। সে কতটা থাকবে, আমি কতটা থাকব, এই বিষয়টা কাজ করে। যখন, স্ক্রীপ্ট পড়ে কেউ রাজি হয়ে যায়, তখন কিন্তু এটা থাকে না। তখন তো সে সবটা জনেই যে আমার ইনিশিয়াল বিষয়টা কতটা। এটা কিন্তু আমি একা না, সকলের হয়।
বিক্রমের সঙ্গে কাজ করার কোনও ভাল অভিজ্ঞতা?
বিক্রম নিজের কাজের বিষয়ে খুব সিরিয়াস। আমার মনে হয়, প্রযোজক এবং পরিচালকের পর বিক্রম নিজেও একটা প্রজেক্টকে ওর সন্তান বলে মনে করে। খুব পরিশ্রম করতে পারে। নিজের চরিত্রের বিষয়ে খুব সৎ থাকতে পছন্দ করে।
দর্শনার ইন্টেন্স ক্যারেকটার বেশি ভাল লাগে নাকি কমার্শিয়াল ছবির রোমান্টিক নায়িকা হতে?
( হাসি ) দুটোই! কমার্শিয়াল ছবির রোমান্টিক নায়িকা হতে আমার খুব ভাল লাগে। ইনটেন্স নায়িকা হতেও ভাল লাগে, তবে সেটা একশোর মধ্যে একবার, কিন্তু রোমান্টিক নায়িকা...
মডেল দর্শনা আর অভিনেত্রী দর্শনার মধ্যে কোনও পার্থক্য দেখতে পাও?
যে পার্থক্যটা আমি দেখতে পাইয়ের থেকেও বলা উচিত বাকিরা বলে আমায়, যে আমি যখন শুরু করেছিলাম তখন খুব লাজুক ছিলাম। একটু ভয় পেতাম। সেটা এখন আর নেই। আমি এখন অনেক পরিপক্ব। আগের থেকে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে। অনেকটা ম্যাচিওর হয়েছি। এই বদল গুলো সত্যিই এসেছে।
সূর্য ছবিটা তোমার এর পাঁচটা ছবির থেকে কেন আলাদা?
অনেকগুলো কারণ আছে। এক তো এর আগে বাংলা ছবির শুটিং অরুণাচল প্রদেশে হয়নি। বরুণ ধাওয়ানের ভেড়িয়া ছবির শুটিং হয়েছিল। দুই বলতে পারি, ছবির গান খুব অন্যরকম। তৃতীয়, অয়ন শীলের সিনেমাটোগ্রাফি, যেটা দেখে সবাই মুগ্ধ। আর আমি, মধুমিতা, বিক্রম, শিলা দা - একটা ফ্রেশ এবং ইয়াং ভাঈব।
হিট ফ্লপ ম্যাটার করে নাকি এমন একটা ছবির চরিত্র যেটা তোমায় স্যাটিসফাই করে?
যে চরিত্রটা করছি, সেটা যদি আমায় শুধু স্যাটিসফাই করে তাহলে আমি হয়তো বা নিশ্চিতে ঘুমাতে পারব। কিন্তু ছবি হিট করা ফ্লপ করা ম্যাটার করে। কারণ, প্রযোজক যিনি ছবিটা নির্মাণে এত টাকা ব্যয় করছেন, তাঁরা যদি লাভের মুখ না দেখে তবে তো আমরা, একটা গোটা ইন্ডাস্ট্রি তাঁরা কাজ পাব না। কোন অভিনেতার ভাল লাগবে না তার ছবি হিট না হলে।
বাংলাদেশে কাজ করলে, অনেকেই বলেন ওখানের ড্রামা এখানের সিরিয়ালের থেকে ঢের ভাল..তোমার কী মনে হয়?
আমি না সেই পার্থক্যটা বলতে পারব না। কিন্তু, হ্যাঁ ওদের নাটক বা টেলিফিল্ম অনেক সুন্দর। কিছু কিছু গল্প, অভিনয়ের মান, যেভাবে ওরা শুট করে। আমাদের এখানে যে টেলিফিল্ম বানানোর বিষয় ছিল, সেটা এখন আর নেই। কিন্তু ওখানে আছে। খুব ইন্টারেস্টিং।
বাঙ্গাল ভাষা বলার অভ্যাস ছিল?
একদম না! অভ্যাস ছিল না আমার। ম্যানেজ করেছি। যেহেতু ঢাকায় হওয়ার কথা ছিল, ড্রামাতে ওরা খুব রিয়ালিস্টিক কাজ করে। কিন্তু আমি বেশি ওয়ার্কশপ করার সুযোগ পাইনি। আসলে, ঢাকার বাঙালটা একটু অন্যরকম, সিলেটি বাঙ্গালের মত নয়। আমি সেটাই চেষ্টা করেছি, আর ওরা সেটা করতে দিয়েছে।
একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন, তোমার বিয়ে নিয়ে অনেকেই বাড়াবাড়ি শব্দটা, টিকবে না শব্দটা উল্লেখ করেছিল! রাগ হয় নি এসব শুনলে? তাঁদের বোধোদয় হোক এমন কিছু মনে হয়?
হাসি ... আমি না জানি না, কেন এই প্রশ্নগুলো আমাদের বিয়ে নিয়ে উঠছিল। কেউ কেউ তো এমনও বলছিল এটা নাকি সৌরভের তিন নম্বর বিয়ে, চার নম্বর বিয়ে। তাহলে বিয়ের ছবি গুলো কই? বৌগুলো কোথায় গেল? আজকের দিনেও বউ বিষয়টা কিন্তু আলাদা। কীরকম বেসলেস এসব? তবে মেয়ে হয়ে একজন মেয়েকে এইসব বলবে কেন? আমার এটাই রাগ হয়। একদম যে রাগ হয়নি বলব না। কিন্তু সৌরভ দারুণভাবে সবটা সামলেছে।
আর যদি বলো, বিয়েটা নিয়ে বাড়াবাড়ি, তাহলে এটাই বলতে হয়, আমাদের স্বপ্ন ছিল সকলকে নিয়ে এভাবে আনন্দে বিয়েটা করার। আমরা তো ট্যাক্স পে করি! যেখানে সবকিছু মেনে বিয়ে করছি, সেখানে লোকের এত কথা কীসের?