গায়ে প্রবল জ্বর। সর্দি-কাশি। তার মাঝেই অসুস্থ শরীরে পিতৃসম পরিচালক তরুণ মজুমদারের পারলৌকিক ক্রিয়ায় বসেছেন তাঁর 'মানসকন্যা' দেবশ্রী রায়।
মঙ্গলবার তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন দেবশ্রী। কারণ, তিনি তো অভিনেত্রীর কাছে শুধু আর পরিচালক নন, বরং তাঁর বাবার মতোই। তরুণ মজুমদারের প্রয়াণ তাঁর কাছে ব্যক্তিগত শোক-ই। আর নিঃসন্তান হওয়ায় পরিচালকও তাঁকে দেখতেন নিজের মেয়ের মতোই। আর তাই শুক্রবার প্রয়াত তরুণ মজুমদারের শেষ ইচ্ছেপূরণ করলেন তাঁর 'মানসকন্যা' দেবশ্রী রায়।
মেয়েরা সাধারণত তিন দিনেই পিতার পারলৌকিক ক্রিয়া করেন। সেই প্রেক্ষিতে দেবশ্রীও মন্দিরে তরুণ মজুমদারের শ্রাদ্ধকর্মের আয়োজন করেছেন। মঙ্গলবার প্রয়াত পরিচালককে শেষবারের মতো দেখে এসে ঠান্ডা জলে স্নান করেছিলেন, সেই থেকেই জ্বর এসেছে দেবশ্রীর। তবে কর্তব্যে অবিচল। শুক্রবার পূর্ণদাস রোডের বাড়ির পাশে ডাকাত কালীবাড়িতে পারলৌকিক ক্রিয়ার আয়োজন করেছেন তিনি। নিরিবিলি মন্দিরে একমনে বসে পুজো করা যাবে, তাই এখানেই আয়োজন সারা।
<আরও পড়ুন: ‘বাবা চলে গেল! আমার নাম তরুণ মজুমদারেরই দেওয়া’, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দেবশ্রী>
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তরুণ মজুমদারের বোন তাঁর বাড়িতে দাদার শ্রাদ্ধকর্মের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন দেবশ্রী রায়, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্ধ্যা রায়রা। তবে অসুস্থ থাকায় সেখানে যেতে পারেননি অভিনেত্রী। শুধু তরুণ মজুমদারের 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' অয়ন-ই উপস্থিত ছিলেন। আজ দেবশ্রীর আয়োজিত পারলৌকিক ক্রিয়াতেও হাজির থাকবেন অয়ন।
প্রসঙ্গত তরুণ মজুমদারের প্রয়াণের দিন শোকবিহ্বল দেবশ্রী জানিয়েছিলেন, "তরুণদা নেই। আমার বাবা চলে গেল। আমি কী করব? কে আমাকে পথ দেখাবে? তরুণদা-সন্ধ্যাদি আমার মা-বাবার মতো ছিলেন। উনি নিজের সন্তান বলে আমাকে মনে করতেন। বলতেন, আমার তো সন্তান নেই। তুই আমার মেয়ে। সারাটা জীবন ঠিক বাবার মতোই ভালবেসে গিয়েছেন আমাকে। তখন আমি কত ছোট, সেই ওঁর পরিচালনায় 'কুহেলি' আমার প্রথম কাজ। ইন্ডাস্ট্রির অক্ষরজ্ঞান আমার তরুণদার হাত ধরেই। আর সেই মানুষটাই আমাকে আজ একা করে দিয়ে চলে গেলেন। মেয়েকে একা করে দিলেন। মেয়ে হিসেবে নিজের কর্তব্য করব।” শুক্রবার তরুণের শ্রাদ্ধকর্ম করে সেই কর্তব্য পালন করলেন দেবশ্রী রায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন