পঞ্চাশের দশক। রাজ কাপুরের প্রযোজনায় তৈরি হল 'বুট পালিশ'। প্রকাশ আরোরার পরিচালনায় সমাদৃত হল এই ছবি। এরপর পেরিয়ে গিয়েছে অনেককাল। এখনও দর্শকের মনে রয়েছে সেকালের 'অগ্নিপরীক্ষা', 'সবার উপরে', 'লালু', 'সাগরিকা', 'খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন', 'ছদ্মবেশী'র মতো কালজয়ী ছবিগুলো। শুধু মনে নেই এই ছবিগুলোর নেপথ্য নায়ককে। কথা হচ্ছে শ্রী বৈদ্যনাথ বসাককে নিয়ে। সেকালেই দক্ষ হাতে ক্যামেরা সামলানো মানুষটির জীবনের চাকা ঘুরছে অন্য পথে। রামকৃষ্ণ মিশনের অন্নপূর্ণা প্রকল্পই ৯৪ বছরের কাঁপা হাতের সামর্থ। নেপালের রাজবাড়ি আলোয় সাজিয়েছিলেন আজ তাঁর এই জীর্ণ অবস্থা। দেব খবরটা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মুখে শোনার পরই ঠিক করে নিয়েছিলেন দেখা করবেন বৈদ্যনাথের সঙ্গে।
নিজের ব্যস্ত শিডিউল থেকে সময়বার করে দেখা করলেন তাঁর সঙ্গে। আর সেই ছবি টুইট করতেই সরগরম নেটপাড়া। দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথমেই তিনি বলে দেন, ''কোন উদ্দেশ্য ছিল না। শুধুমাত্র দেখা করতে চেয়েছিলাম। ছবিও প্রকাশ করতে চাইনি''। পরে তিনি বলেন, ''পিআর করতে ছবিগুলো পোস্ট করিনি। যাতে আরও মানুষ ওনার সাহায্য করতে পারেন সেই কারণেই ছবিটা দিয়েছিলাম। কাল থেকে এখনও পর্যন্ত অনেকে ওনার নম্বর নিয়েছে''। দেব আরও বলেন, ''আমি আর কতটুকু করতে পারব। সবাই যদি এগিয়ে আসেন ভাল হয়। কাল কথা বলতে বলতে মনে হচ্ছিল কাল তো আমিও থাকতে পারি এই জায়গায়। ওনার সঙ্গে কথা বলতে বসলে কোথা থেকে সময় চলে যাবে বুঝতে পারবেন না। আর এই টেকনিশিয়ানদের জন্যই আমরা রয়েছি। আজ তারা লস্ট হিরো''।
তবে কোনও অন্য উদ্দেশ্যে নয়, শুধুমাত্র দেখা করতেই চেয়েছিলেন দেব। বারবার বলেছেন সেকথা। এমনকি পরের ছবিতে বৈদ্যনাথ বাবুকে সিনেমাটোগ্রাফারের পরামর্শদাতার ভূমিকাতেও রাখতে পারেন তিনি। দেব বললেন, ''বাড়িতে বসে থাকেন সারাক্ষণ। শুটিংয়ে এসে বসে থাকলে আমাদেরও ভাল লাগবে, এটাও তো একটা কাজ। জানেন, বলছিলেন একবার ক্যামেরাটা দেখিয়ে দাও ডিজিটাল ক্যামেরাও চালাতে পারব। অফুরান প্রাণশক্তি ওনার''।
সামনেই দেবের কাছে রয়েছে রাজা চন্দর পরিচালনায় একটি ছবি। শুটিং আপাতত বন্ধ রয়েছে। পরে হাত দেবেন সুভাষিণী মিস্ত্রির বায়োপিক তৈরিতে। তবে হিরো হয়েও একটাদিন নেপথ্য নায়কের জন্য বার করেছেন দেব। এটাই কুর্নিশ জানানোর মতো।