Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

বি-টাউনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই কি প্রাণ কেড়ে নিল সুশান্তের? বহু প্রশ্নে গাঢ় ধোঁয়াশা

সোমবার ময়না তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে গলায় ফাঁসের জেরেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার। বান্দ্রায় সুশান্তের ডুপ্লেতে পাওয়া যায় তাঁর নিথর দেহ। তারপরেই তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে জলঘোলা হতে থাকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রবিবার অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রয়াণের খবর নাড়িয়ে দিয়েছিল দেশকে। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে আত্মঘাতী হন তিনি। সোমবার ময়না তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গলায় ফাঁসের জেরেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার। বান্দ্রায় সুশান্তের ডুপ্লেতে পাওয়া যায় তাঁর নিথর দেহ। তারপরেই তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে জলঘোলা হতে থাকে।

Advertisment

সোমবার মুম্বইয়ের ভিলে পার্লে এলাকায় পবন হংস শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পরও সমাধান হয় নি তাঁর মৃত্যু রহস্যের। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। শেষকৃত্যে দেখা গেল স্রেফ হাতে গোনা কয়েকজন তারকাকে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেতার মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে তরজা।

আরও পড়ুন, বলিউডের ‘অভিজাত’ না হলে দ্বিগুণ প্রতিভা ও পরিশ্রম প্রয়োজন: দিবাকর

সুশান্তের অকাল প্রয়াণে বলিউডের ছোট-বড়-মাঝারি তারকা, প্রত্যেকে সোশাল মিডিয়ায় শোকবার্তা দিয়েছেন। তার মধ্যেই করণ জোহর, আলিয়া ভাটের টুইট বিতর্ক তৈরি করেছে নেটিজেনদের মধ্যে। নিজেকে কেন শেষ করলেন সুশান্ত, তা নিয়ে জল্পনা ক্রমশ দানা বেঁধেছে। আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে পরিচালক শেখর কাপুরের টুইট। পরিচালক লিখেছেন, "আমি জানি... তোমার এই যন্ত্রণার জন্য কারা দায়ী... আমি সেই সমস্ত মানুষের কথা জানি যারা তোমাকে টেনে নিচে নামাতে চেয়েছিল... আমার কাঁধে মাথা রেখে কেঁদেছিলে... বিগত ছয় মাস যদি তোমার পাশে থাকতে পারতাম... যদি তুমি পর্যন্ত পৌঁছতে পারতাম। যা হয়েছে সেটা তাদের কর্মফল, তোমার নয়।"

বলিউডের কোন অন্ধকারের দিকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন শেখর কাপুর? আরও একটি টুইটে তিনি লেখেন, "কিছু মানুষের নাম সামনে এনে কোনও লাভ নেই। যারা আজ বিরোধিতা করছে এরা প্রত্যেকেই এই সিস্টেমের অংশ এবং ভুক্তভোগী। যদি সত্যি যায় আসে, যদি সত্যিই রাগ হয়, তাহলে এই সিস্টেমটাকেই ভেঙে ফেলো। কোনও ব্যক্তিবিশেষকে নয়। সেটা তো গেরিলা যুদ্ধ। রাগের স্ফুলিঙ্গ নয়।"

মুখ খুলেছেন কঙ্গনা রানাওয়াতও। সম্প্রতি একটি ভিডিয়োতে তিনি বলেন, "সুশান্তের মৃত্যু কোনও আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত খুন। বলিউড কোনওদিনই ওর দাম দেয়নি।" আরও বিস্ফোরক ভাবে 'নেপোটিজম' অর্থাৎ স্বজনপোষণকে দায়ী করেছেন কঙ্গনা। তিনি বলেন, "সুশান্তকে বরাবরই আউটসাইডার করে রেখেছে বলিউড। এক সাক্ষাৎকারে সুশান্ত প্রশ্ন করেছিল, কেন বলিউড আমাকে মেনে নেয় না? কম সময়ের কেরিয়ারে কাই পো চে, কেদারনাথের মতো সুপারহিট ছবি করেছিল, কিন্তু কেন ডেবিউ ছবির জন্য কোনও সাম্মানিক পুরস্কার পেল না? ছিছোরে-র মতো ভালো ছবি পুরস্কার পায়নি, কিন্তু গল্লি বয়ের মতো খারাপ ছবিকে নিয়ে মাতামাতি করেছে।"

শোনা যায়, 'ড্রাইভ' ছবির ব্যর্থতার পর করণ জোহরের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল সুশান্তের। এছাড়াও যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গে সমস্ত পেশাদার সম্পর্কে ইতি টেনেছিলেন অভিনেতা। কারণটা শেখর কাপুরের ছবি 'পানি'। শেষ মূহূর্তে 'পানি' থেকে সরে দাঁড়ায় আদিত্য চোপড়ার মালিকানাধীন যশরাজ। অথচ এই ছবিটি করতে গিয়েই সঞ্জয় লীলা বনশালীর 'রাম লীলা' ছেড়েছিলেন সুশান্ত, কারণ তিনি যশরাজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। একই কারণে করতে পারেন নি 'ফিতুর' ছবিটিও। পরবর্তীতে 'বেফিকরে' সুশান্তের করার কথা থাকলেও তা চলে যায় রণবীর সিং-এর কাছে। জানতেও পারেননি অভিনেতা। এদিকে হলো না বিগ বাজেট 'পানি'-ও।

আরও পড়ুন: সলমন খান ও তাঁর পরিবারের বিরূদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ ‘দাবাং’ পরিচালকের

এই সমস্ত কারণই কি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল সুশান্তকে? এক ফ্যানের উদ্দেশে করা কিছু কমেন্টেও বোধহয় জানান দিচ্ছিল, বলিউড তাঁকে কোনওদিনই আপন করে নেয়নি। ভাইরাল হয়েছে সুশান্তের সেই কমেন্ট, যেখানে বলিউডে কোনও 'গডফাদার' না থাকার আপসোস জাহির করেছেন অভিনেতা। এক ভক্ত লেখেন, "এই ছবিতে তুমি ফের মরে যাবে... আমি ছবিটা দেখব না।" উত্তরে অভিনেতা লিখেছিলেন, "কিন্তু যদি তুমি না দেখ, তাহলে ওরা আমাকে ছুড়ে ফেলে দেবে, আমার কোনও গডফাদার নেই ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই কারণেই আমি তোমাদেরকে আমার গড এবং ফাদার বানিয়ে নিয়েছি। দয়া করে সিনেমাটা একবার দেখ যদি তুমি চাও এই বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে আমি টিকে থাকি।"

সেলেব্রিটি হেয়ার স্টাইলিস্ট স্বপ্না ভাবনানি সুশান্তের বিষয়ে টুইট করে লেখেন, "সুশান্ত বিগত কয়েক বছর ধরে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, এটা সবাই জানত। কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। টুইটার প্রমাণ করে দিচ্ছে এই ইন্ডাস্ট্রি আসলে কতখানি অগভীর.. কেউ এখানে তোমার বন্ধু নয়।"

বলিউডকে দায়ী করেছেন সঈফ আলি খানও। বলিউডের তথাকথিত হিপোক্রিসির দিকে আঙুল তুলে টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমরা কারো পরোয়া করি না। ভীষণ খারাপ কাজের জায়গা এটা। কিন্তু সবসময় ভাব দেখাই, কত না অন্যের জন্য ভাবি। এটাই হিপোক্রিসি, এবং আমার মনে হয় যে চলে গেল, এটা তার অপমান।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

bollywood Sushant Singh Rajput
Advertisment