DJI Osmo Pocket film by Riingo Banerjee: ডিজেআই অসমো পকেট ক্যামেরা লঞ্চ হয় ২০১৫ সালে,, কিন্তু এদেশের বাজারে ক্যামেরাটি আসে গত বছরের শেষে। মাত্র ৪ ইঞ্চি লম্বা এই ক্যামেরাতেই তৈরি হয়েছে একটি চলচ্চিত্র। রিংগো বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত এদেশের প্রথম ফিল্মমেকার যিনি এই ক্যামেরাতে তৈরি করলেন ৫০ মিনিটের একটি পেশাদার ছবি, যা প্রদর্শিত হবে একটি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে পরিচালক জানালেন, নতুন প্রজন্মের ফিল্মমেকারদের বিভিন্ন অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই এমন একটি চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিলেন তিনি।
''আমাদের এখানে নতুন ফিল্মমেকারদের প্রযোজক পেতে নানা ধরনের অসুবিধায় পড়তে হয়। বেশিরভাগ প্রযোজকই কোনও তৈরি ছবি দেখতে চান রেফারেন্স হিসেবে। সেই ফিল্মমেকার হয়তো কষ্ট করে ৫-১০ মিনিটের ছবি বানিয়েছেন। কিন্তু সেই ছবিগুলি ভালো হলেও প্রযোজকরা খুব একটা কনসিডার করেন না। অসমো-র মতো ক্যামেরা দিয়ে যদি একটা ফোরকে ৫০-৬০ মিনিটের ছবি বানিয়ে ফেলা যায়, তবে ফিল্মমেকিংয়ের বাজেট যেমন কমে যাবে, পাশাপাশি পরবর্তী কাজের জন্য প্রযোজক পেতেও অনেকটা সুবিধা হবে নতুন ফিল্মমেকারদের," বলেন রিংগো।
Director Riingo Banerjee shot a film in DJI Osmo Pocket
ডিজেআই অসমো পকেট হলো এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট থ্রি-অ্যাক্সিস স্টেবিলাইজড ক্যামেরা। মাত্র ৪ ইঞ্চি দীর্ঘ এই ক্যামেরায় রয়েছে ১/২ ইঞ্চি সেন্সর, যার মাধ্যমে ফোরকে কোয়ালিটির ভিডিও রেকর্ড করা যায়। এরই সঙ্গে এই ক্যামেরায় রয়েছে ডুয়াল মাইক্রোফোন, যার মাধ্যমে ফোরকে ভিডিওর স্টিরিও অডিও রেকর্ড করা সম্ভব। দাম ৩০ হাজার টাকার মধ্যে, ওজন মাত্র ১১৬ গ্রাম, বিলকুল পকেটে ভরে ফেলা যায় এই ক্যামেরা। পাশাপাশি এই ক্যামেরায় থ্রি অ্যাক্সিস স্টেবিলাইজিং গিম্বল থাকার ফলে শ্যুটিংয়ের সময় ছোটখাটো ঝাঁকুনির ঝক্কি সামলে নিতে পারে। অনেকে এই ক্যামেরাকে গো প্রো-র প্রতিদ্বন্দ্বী বলে থাকেন কিন্তু পরিচালক জানালেন, গো প্রো হল স্ট্যাটিক অ্যাকশন ক্যামেরা। তাই অসমো পকেটের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনওভাবেই হতে পারে না।
আরও পড়ুন: শুধু ওয়েবক্যামে শুটিং! সৌমন বসু নিয়ে আসছেন অভিনব ওয়েব সিরিজ
রিংগো জানালেন, ডিজেআই ক্যামেরাটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায় উন্নত প্রযুক্তির স্মার্টফোন দিয়ে। আইফোন অথবা আইপ্যাডের সঙ্গে ওয়্যারলেস পদ্ধতিতে কানেক্ট করে শ্যুট করা হয়। ফোকাস, অ্যাপারচার সবকিছুই পরিবর্তন করা যায় ক্যামেরার সঙ্গে যুক্ত স্মার্ট গেজেটের মাধ্যমে এবং আইফোন বা আইপ্যাডের স্ক্রিনটিই হয়ে ওঠে মনিটর।
ইন্টারনেটে এই ক্যামেরায় তোলা বেশ কিছু ট্রাভেল ভিডিও দেখতে পাওয়া যায় বটে, কিন্তু এই ক্যামেরায় কোনও পেশাদার ছবি শ্যুট করা হয়েছে বলে কোনও তথ্য নেই। এই বছরের গোড়ায় ফোরকেশুটারস ডট নেট-এ গ্রাহাম ফোর্বস একটি ব্লগ লেখেন অসমো পকেটে সিনেমার শুটিং সম্ভব কি না, তা নিয়ে। ওই ব্লগে তিনি লেখেন, স্মার্টফোনের পাশাপাশি যদি অসমো পকেটের সঙ্গে ব্যবহার করা হয় এনডি ফিলটার, তবে পেশাদার ছবি শুট করা সম্ভব এই ক্যামেরাটি দিয়ে।
তাই অসমো পকেটে শুট করা রিংগো বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি 'দ্য অডিশন'-কে বলা যায় ফিল্মমেকিংয়ে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি 'পাথব্রেকিং' ছবি। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর আকাশ ৮ চ্যানেলে এই ছবিটি দেখতে পাবেন দর্শক, যা আদতে একটি ক্রাইম থ্রিলার। প্রচুর অ্যাকশন রয়েছে এই ছবিতে। এতটুকু ছোট একটি পকেট ক্যামেরা দিয়ে এমন একটি ছবি শ্যুট করা তাই খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। দেখে নিতে পারেন এই ছবির ট্রেলার নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে -
রিংগো জানালেন, "ছবিতে দিনের আলোর যে অংশগুলি দেখবেন দর্শক, তার সবটাই ন্যাচারাল লাইটে শুট করা। এডিটের পরে ছবিটি যেমন দাঁড়িয়েছে, সেটা দেখে আমরা খুব খুশি। আর এই ক্যামেরার সাউন্ডটা অসাধারণ। আলাদা করে কোনও মাইক ব্যবহার করতে হয় না। শুধু ফিল্মমেকাররা নন, আমার মনে হয় সাংবাদিকতার পেশায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরও খুব কাজে লাগবে অসমো পকেট।"