Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

নতুন মোড়কে পুরনো আনন্দ ফিরিয়ে 'লায়ন'-ই ফের 'কিং'

আদৌ কি 'লায়ন কিং'-এর 'আপডেটেড' অবতারের প্রয়োজন ছিল আমাদের? কম্পিউটারে তৈরি ছবিতে 'ফোটো রিয়ালিস্টিক' পালিশের? হ্যাঁ এবং না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
the lion king movie review

ছবি: 'দ্য লায়ন কিং' টুইটার পেজ থেকে

The Lion King voice cast: ডোনাল্ড গ্রোভার, বেয়ন্সে নোলস, চিউইটেল এজিওফর, জেমস আর্ল জোনস, জন অলিভার, জে ডি ম্যাক্রেরি, সেথ রোগেন, বিলি আইখনার
The Lion King director: জন ফ্যাভরো
The Lion King rating: ৩.৫/৫

Advertisment

সেটা ছিল ১৯৯৪ সাল। 'দ্য লায়ন কিং'-এর প্রথম আবির্ভাবের বছর। সে এক অভূতপূর্ব, অশ্রুতপূর্ব অভিজ্ঞতা। ডিজনির ছবি ঠিকই, কিন্তু মৌলিক গল্প, সঙ্গে শেক্সপিয়ারীয় নাটকীয়তার ছায়া, এবং মায়াময় আফ্রিকার জাদু মাখানো এক মনুষ্যত্বের কাহিনী। গল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একগুচ্ছ পশুপাখি, যাদের ভালো না বেসে থাকা যায় না। এদের মধ্যে একজন ক্ষমতার আলোয় উদ্ভাসিত এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজা, আরেকজন প্রথাগত ছায়ান্ধকারে বিচরণ করা আদ্যোপান্ত এক খলনায়ক।

এত বছর পরেও যে অমলিন তাদের জাদু, স্বীকার করবেন যে কোনও বাবা-মা। সিম্বা, নালা, মুফাসা, রফিকি, জাজু, মায় টিমন এবং পুম্বার পুতুল সম্ভবত এখনও সযত্নে রাখা আছে বহু খেলাঘরে। যেসব গান তারা গাইত, সেগুলি এখনও সেদিনের মতোই তরতাজা। এবং এই প্রশ্ন করাই যায়, যে 'দ্য লায়ন কিং'-এর আগে কজন জানতেন ওয়ার্টহগ বা মিয়ারক্যাট নামক প্রাণীর অস্তিত্ব? বা হায়েনাদের 'আসল' চেহারা?

তাহলে কি আদৌ 'লায়ন কিং'-এর 'আপডেটেড' অবতারের প্রয়োজন ছিল আমাদের? কম্পিউটারে তৈরি ছবিতে 'ফোটো রিয়ালিস্টিক' পালিশের? হ্যাঁ এবং না।

মনে রাখতে হবে, এই ছবির পরিচালক হলেন জন ফ্যাভরো, যাঁর হাতে পড়লে প্রায় যে কোনও ছবিতেই উল্লাসের একটা আলাদা মাত্রা যোগ হয় (যেমন 'দ্য আয়রন ম্যান')। ডিজনির নিরন্তর লাভের ব্যবসার পক্ষে যা আরও গুরুত্বপূর্ণ, এই স্টুডিওরই 'দ্য জাঙ্গল বুক'-এর রিমেক দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ফ্যাভরো। 'দ্য লায়ন কিং'-এ আরও এক ধাপ এগিয়েছে প্রযুক্তি, যাতে সিম্বা বা মুফাসার অত্যাশ্চর্য কেশরের প্রতিটি আলাদা আলাদা চুল দেখতে পান আপনি।

তাছাড়াও এমন এক 'লায়ন কিং', যার প্রতিটি মুখ্য চরিত্রের নেপথ্যে এবার রয়েছে কোনও কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা অথবা বেয়ন্সের মতো তারকার কণ্ঠস্বর, না দেখে থাকবেন কী করে? মূল ছবিটি আফ্রিকার পটভূমিতে হওয়া সত্ত্বেও জেমস আর্ল জোনস (মুফাসা) ছাড়া আর কোনও কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতার কণ্ঠস্বর না থাকায় যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছিল। উল্লেখ্য, ১৯৯৪-এর কাস্ট থেকে এই ছবিতে ফিরেছেন একমাত্র জোনসই।

'দ্য লায়ন কিং'-কে আরও উন্নত করার আশা করাটাও একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যায়, বিশেষ করে নালার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গোটা কাহিনীটি বলার মতো বুকের পাটা কজনের আছে জানা নেই। এর আগে বহু প্রাণী বিশেষজ্ঞ বহুবার বলেছেন, কোনও সিংহের দল বিপাকে পড়লে হাল ধরে কে, সে ব্যাপারে আগাগোড়াই ভুল করে এসেছে ডিজনি।

এসব বাকবিতণ্ডা সম্পর্কে বোধহয় একটু বেশিই সচেতন ফ্যাভরো, যার ফলে তাঁর 'লায়ন কিং' ১৯৯৪-এর ছবির প্রায় অবিকল অনুকরণ - প্রতিটা শট, প্রতিটা গান। আক্ষেপ একটাই, 'বাস্তবতার' দাবিতে এবারে পশুকুল তুলনায় অসুন্দর, এবং স্ক্রিপ্টের চাহিদা অনুযায়ী আবেগের প্রকাশে অক্ষম। জেরেমি আয়রনসের কুৎসিত অথচ নিখুঁত 'স্কার'-এর ভক্তদের এজিওফরের প্রাণপণ প্রচেষ্টায় সন্তুষ্ট হওয়ার কথা নয়।

সিম্বা, মুফাসা, এবং স্কার-কে বাদ দিয়ে বাকি চরিত্রদের নবরূপায়ণে অবশ্য অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছন্দ এই ছবি, সৌজন্যে কিছু নতুন দৃশ্য, কিছু বাড়তি সংলাপ, এবং আরও কিছু সংযোজন, যেমন বেয়ন্সের আরও অনেকটা প্রত্যয়ী নালা, রোগেন-আইখনারের পুম্বা-টিমন জুটির খুনসুটি, এবং আগের মতোই হাড় হিম করা হায়েনাদের ভূমিকায় কীগান-মাইকেল কী এবং এরিক আন্দ্রে।

পরিশেষে, মনে আছে সিম্বার কেশরের সেই চুল, যা বাতাসে ভেসে ফিরে যায় তার জন্মভূমিতে, এবং যা রফিকি হাতে নেওয়ার পর মুফাসার মৃত্যুর ফলে বিধ্বস্ত রাজ্যের মধ্যে দিয়ে বয়ে যায় আশার ঢেউ? এবারেও ফিরে আসে সিম্বার সেই স্মৃতিচিহ্ন, রীতিমত খাদ্য শৃঙ্খলের অলিগলি বেয়ে। 'সার্কেল অফ লাইফ'? সিংহগর্জন করাই যায় ফের!

Cinema hollywood
Advertisment