দক্ষিণী সিনেমার রাজত্বে বলিউডের কপালে ভাঁজ! সেখানে বাংলা সিনেমার লক্ষ্মীলাভ তো দূরঅস্ত! অভিযোগ, বাংলা ছবি নাকি হল-ই পায় না…! মাস তিনেক আগে অবশ্য সেই চিত্র বদলে দিয়েছিল 'অপরাজিত', 'বেলাশুরু', 'কিশমিশ'-এর মতো সিনেমাগুলো। তবে অতিমারী উত্তর পর্বে বাংলা ছবির মন্দা বাজারে টনিক দিয়ে সেভাবে চাঙ্গা করা যায়নি। অগ্রীম বুকিং তো দূরঅস্ত, রিলিজের পর সপ্তাহ ঘুরলেই প্রেক্ষাগৃহের শো টাইমিং নিয়ে মন কষাকষি! এমনকী, প্রেক্ষাগৃহ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে একাধিক সিনেমাকে। পুজোতেও হিন্দি, বাংলা, দক্ষিণী মিলিয়ে একগুচ্ছ রিলিজ। আর সেই বাজারেই রেকর্ড গড়ল 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন'।
কীরকম? হিসেবটা কষে বলা যাক তাহলে। এবারের পুজোয় রিলিজ করছে দেব-প্রসেনজিতের 'কাছের মানুষ', শুভশ্রী-পরমব্রতর 'বৌদি ক্যান্টিন'। এছাড়াও থ্রিলার ছবি 'বিজয়া দশমী'। পাশাপাশি ৬০০ কোটি বাজেটের দক্ষিণী সিনেমা 'পন্নিয়িন সেলভান' এবং ২৫০ কোটি অঙ্কের 'বিক্রম বেধা'। হিন্দি-দক্ষিণী দুই ইন্ডাস্ট্রির তুখড় তারকারা রয়েছেন এই দুই সিনেমাতে যথাক্রমে। অতঃপর এই পুজোয় বক্সঅফিসে যে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, তা বলাই বাহুল্য। আর সেই প্রেক্ষাপটেই রিলিজের আগে বক্সঅফিসে কাঁপন ধরাল আবির চট্টোপাধ্যায়, ইশা-অর্জুন টিমের 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন'।
শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর পঞ্চমীর দিন মুক্তি পাচ্ছে ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন'। প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মুক্তির এক দিন আগেই ২০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে ইতিমধ্যে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই হিসেব আরও বাড়বে বই কমবে না বলেই আশা করা হচ্ছে এসভিএফ-এর তরফে। আর পুজোর আগেই ছবির এমন রেকর্ড হারে টিকিট বিক্রিতে বেজায় আপ্লুত পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়।
<আরও পড়ুন: ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ হিট হলে পুজোয় জমিয়ে খাব: আবির চট্টোপাধ্যায়>
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে ধ্রুব জানালেন, "এটা শুধু আমার কাছে নয়, গোটা বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রির কাছে অসাধারণ খুশির খবর তো বটেই, পাশাপাশি গর্বেরও বিষয়। যেখানে 'পন্নিয়িন সেলভান', 'বিক্রম বেধা'র মতো বিগ বাজেট ছবি রিলিজ করেছে, সেখানে দর্শকরা নিজের রায় দিয়েছেন যে, তাঁরা সবকিছুর আগে বাংলা সিনেমা দেখতে চান। এর থেকে বড় পুজোর উপহার আর হয় না।"
এরপরই 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' রহস্যোদঘাটনের 'ক্যাপ্টেন অফ দ্য শিপ' ধ্রব যোগ করলেন যে, "আমার কাছে সবথেকে বড় পাওনা হচ্ছে, কলকাতার হল বা মাল্টিপ্লেক্সের এক্সিবিউটার, ডিস্ট্রিবিউটাররা বুক ফুলিয়ে মুম্বইয়ের কাছে বলতে পারছে, এই পুজোর মরসুমে আমরা বাংলা সিনেমাকে সবথেকে বেশি সংখ্যক শো দেব এবং প্রমাণ করে দেখাব যে, আমরা হিন্দি ছবির থেকেও বেশি ব্যবসা করতে পারি। এই যে জায়গাটা বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্য ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে, এর থেকে বড় সেলিব্রেশন আর কী-ই বা হতে পারে! বাংলা সিনেমার জন্য গর্ব করে যে তাঁরা লড়়ছে, এটাই তো বড় কথা। আর হিন্দি কিংবা দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়তে হলে এটাই বড় সাফল্যের চাবিকাঠি। সোনাদা কিংবা বাংলা সিনেমাকে এতটা ভালবাসা দেওয়ার জন্য দর্শকদের যে কীভাবে ধন্যবাদ জানাব, তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।"
প্রসঙ্গত, 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' প্রসঙ্গে আবির চট্টোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে আগেই জানিয়েছেন যে, "এবারে রহস্য-রোমাঞ্চের পরিসর আরও বড়। পরতে পরতে টুইস্ট। গল্পচ্ছলে ধ্রব বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বাংলার অজানা ইতিহাস তুলে ধরেছেন, সিনেমা দেখতে বসে দর্শকরা মোটেই একঘেয়েমি অনুভব করবেন না।"