তারকাদের পুজো:
পুজো মানেই বাঙালির কাছে কবজি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া, দেদার গান-গল্প, আড্ডা আর অবশ্যই সিনেমা দেখা। সারাবছর শুটিং, সিরিজ, সিনেমার প্রচার কাজের ব্যস্ততা দূরে সরিয়ে পুজোর আমেজে মেতে ওঠেন তারকারা। আর পুজো রিলিজ হলে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে টেনশন উপরি পাওনা তারকাদের। সেই তালিকায় অবশ্য ব্যতিক্রম ঋতাভরী চক্রবর্তী। তবে পুজো রিলিজ না থাকলেও নায়িকার ব্যস্ততা কিন্তু কোনও অংশে কম নয়। তা কীভাব এবারের দুর্গাপুজোটা কাটানোর পরিকল্পনা করেছন অভিনেত্রী? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে খোঁজ নিলেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ।
প্রথমেই একরাশ উচ্ছ্বাস ঋতাভরীর গলায়। কারণ, অতিমারী পেরিয়ে দু'বছর পর শহরে স্বাভাবিক ছন্দে পুজোর আমেজ। উপরন্তু দক্ষিণপাড়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর মুখ তিনি। তাই নিজস্ব প্ল্যানের পাশাপাশি কিছু দায়িত্বও রয়েছে। ঋতাভরী বললেন, "পুজোর প্রচার-উদ্বোধন, ফিতে কাটা দিয়ে ইতিমধ্যেই পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। ঠিক ২ বছর পর অতিমারীর আগের আমেজটা যেন ফিরে পেলাম। ষষ্ঠীতে পাঁচতারা হোটেলে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকব। সেখানে বুম্বাদাও থাকবেন বিশেষ অতিথি হিসেবে।"
পুজোর পাঁচটা দিন ভিন্ন কর্মসূচীতে ঠাসা ঋতাভরী চক্রবর্তীর। সপ্তমীটা পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন। নায়িকার কথায়, "এদিন সবাই একসঙ্গে কোথাও একটা ডিনার করব। অষ্টমী পুরোটাই দক্ষিণপাড়া দুর্গোৎসব কমিটিতে কাটবে। সেই পুজোর মুখ হয়েছি। তাই এবার ওখানেই অঞ্জলি দেব এবং সন্ধিপুজোতেও উপস্থিত থাকব। ১০-১২ হাজার মানুষের সঙ্গে সেখানে একসঙ্গে অঞ্জলি দেওয়া একটা অন্যরকম অভিজ্ঞতা হবে বলেই আশা করছি। বিশেষ করে এই ইভেন্টটা নিয়ে আমি ভীষণ এক্সাইটেড। তাছাড়াও, ২ বছর পর এবার পুজোয় কল্যাণ জুয়েলারি পরিবারের একটা গেট টুগেদার হবে। সেটা মুম্বইতে। একেবারে পুনর্মিলন যাকে বলে। সেখানে অমিতাভ বচ্চন স্যারের সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে। আর সেইজন্যই আমি আরও বেশি উচ্ছ্বসিত। দশমীতে কলকাতায় ফিরছি। পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আড্ডা দেব চুটিয়ে। আপাতত পুজোটা এভাবেই কাটানোর পরিকল্পনা রয়েছে।"
ফ্যাশনিস্তা ঋতাভরী পুজোর কেনাকাটাতেও কম যান না। তবে নিজের জন্য কেনার থেকে উপহার দেওয়াতেই বেশি আনন্দ অভিনেত্রীর। ঋতাভরীর কথায়, "আমি সত্যিই খুব শপিং করতে ভালবাসি। প্রচুর জামাকাপড় কিনি। সারাবছর ধরেই শপিং চলে। কিন্তু পুজোর আগেও কম কেনাকাটা করি না। তবে নিজের পুজোর পোশাক কেনার থেকেও আমার কাছে বেশি আনন্দের পরিবারের সকলের জন্য পোশাক কেনা আর আমার স্কুলের ৮৪জন কচিকাচাদের পছন্দমতো জিনিস কেনা। আমার কাছে নিজের থেকেও ওদের পুজোর আনন্দটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওদের হাসিটাই আমার পুজোর উপহার। তবে হ্যাঁ, এবছর প্যান্ডেলে ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখার সময় পাব না। কারণ প্রচণ্ড ব্যস্ত শিডিউল। কিন্তু যে মণ্ডপেই কাজের সূত্রে যাই না কেন, থিম মূর্তির কাজ খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি।"
পুজো মানেই ঋতাভরী চক্রবর্তীর কাছে এথনিক পোশাক। শাড়ি পরতে খুব ভালবাসেন। তবে নায়িকা বলছেন, "পুজোর দিনগুলোয় বেশি কাজের ব্যস্ততা থাকলে আনারকলি সালোয়ার পরি। পায়ে থাকে ফ্ল্যাট জুতো। তবে হ্যাঁ, কমফর্টের কথা মাথায় রেখে সুতির পোশাকই বেছে নিই। আর শাড়ি পরলে সোনার গয়না মাস্ট!" আর শেষপাতে জানালেন, 'মনের মানুষ' তথাগত চট্টোপাধ্যায়ের থেকে সবুজ শাড়ি উপহার পেয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে পুজো নস্ট্যালজিয়াও শেয়ার করলেন ঋতাভরী- প্রথমেই মহালয়ার কথা বলব। সেই ছোট থেকেই ভোরবেলায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠে মহালয়া শুনে পুজো শুরু হয়েছে। শৈশবের দিনগুলোয় তখন থেকেই আমাদের সবার পুজো শুরু হয়ে যেত। মনে একটা দারুণ আনন্দ হত যে এবার ছুটির পালা শুরু হবে। গোটা শহর শারোদোৎসবে মেতে উঠবে।