দুর্গাপুজো কার্নিভালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে বেজায় ট্রোলড স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)। ভোটের টিকিটের লোভে প্রশ্ন তুলেছিল নেটপাড়া। সেই প্রেক্ষিতেই এবার সমালোচকদরে মুখে ঝামা ঘঁষে দিয়ে স্বস্তিকা বললেন, 'চকোলেট নিয়েছি, ঘুষ নয়'।
শনিবার রেড রোডে তারকাখচিত পুজো কার্নিভালের আয়োজন হয়েছিল। এদিন সিনেইন্ডাস্ট্রি থেকে ধারাবাহিকের জনপ্রিয় মুখদের দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর পাশে। অরিন্দম শীল, রাজ চক্রবর্তী, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা, জুন মালিয়া থেকে নীল-তৃণা, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, সৌমিতৃষ্ণা কুণ্ডু, শুভদ্রা, শেখ রাব্বানি, দিগন্ত বাগচির মতো তারকারা হাজির ছিলেন। সেই একই মঞ্চে নজর কেড়েছিল স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিও। যিনি কিনা বাংলার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বরাবরই প্রতিবাদে মুখর থাকেন। সেই নায়িকাকেই দেখা গেল মমতার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতে। যা দেখে নেটপাড়ার নীতিপুলিশেরা রীতিমতো রে রে করে উঠেছেন।
এককথায় ভয়ঙ্কর ট্রোলের শিকার হয়েছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলে এবং তাঁর কাছে চকোলেট নিয়ে একের পর এক কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। কার্নিভালের সেই মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ভাইরাল হতেই ধেয়ে এসেছে কটাক্ষবাণ। নজর এড়ায়নি স্বস্তিকার। কটাক্ষের ২৪ ঘণ্টা পেরতে না পেরতেই ট্রোলিং নিয়ে মুখ খুললেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
বরাবরই স্পষ্টবাদী তিনি। রাজ্যের রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক কাঠামোর সমালোচনা করা সত্ত্বেও কেন মমতার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বললেন অভিনেত্রী, তার উত্তর দিলেন স্বস্তিকা। সপাটে বললেন, "চকলেট নিয়েছি ইলেকশন টিকিট নয়, চকলেট খেয়েছি মোটা টাকার ঘুষ নয়। আমরা একটা সভ্য দেশে বাস করি, বর্বর নই। কাল দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলেও একই ভাবে নমস্কার করব কারণ সেটাই ঠিক। আমায় দুটো চকলেট দেওয়াটা ওনার ইচ্ছে, সেটা খেয়ে নেওয়াটা আমার।"
<আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতি ঢাকতে কার্নিভাল! বাংলার অর্থনীতিকে খাদে ঠেলে দিয়েছে তৃণমূল’, বিস্ফোরক রুদ্রনীল>
এখানেই অবশ্য থামেননি স্বস্তিকা। তিনি এও যোগ করেন যে, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিত্বকে আমি শ্রদ্ধা করি। তার মানে রাজনৈতিক মতবিরোধিতার সঙ্গে আপোষ করা নয়। যেটা অন্যায়, তা নিয়ে নিশ্চই বলব। কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত বিষয় নিয়ে আমায় জিহাদ ঘোষণা করতেই হবে, নাহলে-ই আমার মেরুদন্ড ধ্বসে পরবে এমন কোনও দাসখত আমি লিখিনি। আর আমার ধ্যান-ধারণা বিবেক বিচার আপনাদের কথায় ওঠানামা করে না। পরে আবার কোনো অনুষ্ঠানে যদি শ্রদ্ধেয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হয়, আমি আবারও ওঁকে নমস্কার জানাব এবং উনি চকলেট দিলে নেব এবং খাব। অসভ্য হওয়ার জন্য যে শিরদাঁড়াহীনতা লাগে সেটাও আমার নেই। তাই বেশ করেছি।"
"একটা ক্লাবের সঙ্গে প্রথমবার কার্নিভালে গিয়েছিলেন। ৯৫টারও বেশি ক্লাব যেখানে অংশ নিয়েছে, সেই সমস্ত প্যান্ডেলে হাজার হাজার মানুষ ঠাকুর দেখতে গেছেন, সেই সমস্ত ক্লাব আমাদের রাজ্যের। কালকেও উপচে পড়া ভীড় ছিল। রাজ্যের কি খারাপ অবস্থা সেটা ভেবে কেউ বাড়িতে বসে পুজো বয়কট করেনি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়া, তাঁকে নমস্কার করে বিজয়া জানানোটা ভদ্রতা, সৌজন্য", মত স্বস্তিকার।