নেতাজির মূর্তিতে মাল্যদান করেই ভবানীপুর কেন্দ্রে প্রচার শুরু করেছিলেন বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। সোমবার আরও একধাপ এগিয়ে পৌঁছে যান চন্দ্র বসুর (Chandra Basu) বাড়িতে। সেখানে চা চক্রের মাঝেই রুদ্রনীল গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রচারের আসরে নামার অনুরোধ জানান তাঁকে। ভবানীপুরের পদ্ম-প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়েই চন্দ্র বসুর কণ্ঠে ঝড়ে পড়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্নের বাংলা গড়ে তোলার কথা। শুধু তাই নয়, একুশে বাংলায় পদ্ম ফোটাতে বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষের প্রচারের শরীক হবেন বলেও সবুজ সংকেত দিয়েছেন নেতাজির বংশের উত্তরসূরী চন্দ্র বসু। যিনি কিনা নিজেও ২০১৬ সালের বিধানসভা এবং গত লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলেন। তবে দু'বারই পরাজিত হয়েছেন। তবে ভবানীপুরের ময়দানে 'তাবু খাটাতে' এদিন সেই চন্দ্র বসুর-ই স্মরণাপন্ন হলেন রুদ্রনীল ঘোষ।
প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে এই চন্দ্র বসু-ই গেরুয়া শিবিরের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। আর সেই প্রেক্ষিতে এবার রুদ্রনীলের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ এবং বিজেপির হয়ে প্রচার ময়দানে নামাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে উত্থাপন হয়েছে সেই অতীত প্রসঙ্গ। ফিসফাসও কম নয়! বিরোধী শিবিরের সমালোচকরা প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, নেতাজি আবেগকে হাতিয়ার করেই কি শেষমেশ ভবানীপুর কেন্দ্রের আসন জিততে মরিয়া পদ্ম-প্রার্থী রুদ্রনীল? বাদ যায়নি নেতাজির শ্যামাপ্রসাদ-বিদ্বেষ প্রসঙ্গও। যে সুভাষচন্দ্র বসু কিনা হিন্দুত্ববাদীদের আস্ফালন নিয়ে গর্জে উঠেছিলেন, হুঁশিয়ারি দেগেছিলেন শ্যামাপ্রসাদের বিরুদ্ধে, সেই নীতি-বিরোধের কথাও ফের একবার প্রতিপক্ষ শিবিরের সমালোচকদের মুখে ঝড়ে পড়ল।
অন্যদিকে, চন্দ্র বসুর সঙ্গে সাক্ষাতে আপ্লুত এবং আনন্দিত রুদ্রনীলের মন্তব্য, "তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে মানুষটি ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে বাংলায় জনমত তৈরি করা শুরু করেছিলেন, তাঁর কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নেওয়া, তাঁর চরণস্পর্শ করা আমার কাছে অত্যন্ত আনন্দের। চন্দ্র বসু প্রচারের মঞ্চে আমার সঙ্গে থাকবেন বলেও জানিয়েছেন। এবং পরামর্শদাতা হিসেবেও আমার পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।"
চন্দ্র বসুও গেরুয়া শিবিরের তারকা প্রার্থী রুদ্রনীলের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বললেন, "শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বাংলাকে রক্ষা করার জন্য যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, সেটা রক্ষা করার সময় হয়তো এসে গিয়েছে। তাই আমার বিশ্বাস, ভবানীপুর কেন্দ্রের মানুষ বিজেপি (BJP) প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষকে জয়যুক্ত করবে এবং পশ্চিমবাংলাকে রক্ষা করবে।" তবে মমতা-গড়ের পিচে তা কতটা বাস্তবায়িত হবে? উত্তর মিলবে ২মের নির্বাচনী (West Bengal Assembly Election 2021) মার্কসিটেই।