Ek Je Chhilo Raja Cast: যিশু সেনগুপ্ত, রাজনন্দিনী পাল, জয়া আহসান, অর্নিবাণ ভট্টাচার্য, অপর্না সেন, অঞ্জন দত্ত
Ek Je Chhilo Raja Director: সৃজিত মুখোপাধ্যায়
Ek Je Chhilo Raja Rating: ২.৫/৫
বহু চর্চিত ভাওয়াল সন্ন্যাসী মামলার গল্প নিয়েই যে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি 'এক যে ছিল রাজা', তা মোটামুটি মাথায় নিয়েই হলে ঢোকা। আবার সৃজিত ছবি শুরুর আগেই পর্দায় লিখেও দিয়েছেন, এ ছবি সেই ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত। ফলে গল্প নিয়ে বলার বিশেষ কিছু নেই। তবু উত্তম কুমার অভিনীত 'সন্ন্যাসী রাজা' এবং হাল আমলের জনপ্রিয় টেলিসিরিয়াল হয়ে যাওয়ার পরও এত চেনা গল্পকে যে সৃজিত নিজের মতো করে বলতে চেষ্টা করেছেন, সেটা নিঃসন্দেহে সাধুবাদযোগ্য।
আরও পড়ুন: সৃজিতের টক্কর নিজের সঙ্গেই? কী বলছেন এক যে ছিল রাজার নেপথ্য নায়ক?
গল্পের কথা বাদ দিলেও, চিত্রনাট্যের কথা বলতেই হবে। এক যে ছিল রাজা সিনেমায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ এজলাসের দৃশ্যগুলি। গল্পকে মূলত টেনে নিয়ে যাচ্ছে দুই আইনজীবীর সওয়াল। সাক্ষীদের বয়ানের সূত্রে সামনে আসছে ঘটনা পরম্পরা। কিন্তু এই আদালতের দৃশ্যগুলিতে বেশ কিছু যুক্তি-প্রতিযুক্তি ও সংলাপ অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। এজলাসের সওয়াল নির্মেদ হলে তা আরও গ্রহণযোগ্য হত। বাদি-বিবাদী দুই পক্ষের আইনজীবীর চরিত্রে অঞ্জন দত্ত এবং অপর্ণা সেন দর্শককে নস্টালজিক করেছেন। তাঁদের অভিনয় দর্শক মনে রাখবেন। তবে, এই দুই আইনজীবীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছবির মূল সুরের সঙ্গে সঙ্গতিহীন।
সৃজিতের এই সিনেমায় যীশুকে যেভাবে দেখা গিয়েছে, তা এক কথায় অভূতপূর্ব। যীশুর পোশাক, মেক আপ এবং অভিনয় এক কথায় উৎকৃষ্ট। ডাক্তারের চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষের খুব বিশেষ কিছু করার ছিল না। 'সন্ন্যাসী রাজা' ছবিতে যেমন মূল খল চরিত্র ছিল ডাক্তারের, 'এক যে ছিল রাজা'-তে তা নয়। ফলে, চরিত্রানুযায়ী রুদ্রনীল চলে গিয়েছেন। বরং এই সিনেমায় মূল খল চরিত্র হল মেজ কুমারের শ্যালক সত্য। এই চরিত্রে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের অভিনয় যথাযথ। ছবি জুড়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি জয়া আহসানের। মেজ কুমারের বোনের চরিত্রে জয়ার অভিনয় প্রশংসার দাবি রাখে। এছাড়া ছোট চরিত্রে শ্রীনন্দা শঙ্করের অভিনয়ও বেশ ভাল।
আরও পড়ুন: জল্পনার অবসান ঘটাল সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘এক যে ছিল রাজা’র টিজার
সৃজিতের অন্যান্য ছবির মতো 'এক যে ছিল রাজা'-র সিনেমাটোগ্রাফিও বেশ ভাল। গানগুলিও ছবির মেজাজের সঙ্গে বেশ লেগেছে। বাড়তি পাওনা বলতে, নাচ ঘরে উস্তাদের চরিত্রে স্বয়ং ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের উপস্থিতি। তবে ছবির শেষের দিকটা অহেতুক বাড়ানো হয়েছে বলে মনে হয়েছে।
'এক যে ছিল রাজা'-র মূল মোচড়টা আসে ছবির শেষের দিকে, মামলার প্রথম রায় বেরনোর পর। সত্য যখন তাঁর বোন অর্থাৎ মেজো কুমারের ধর্মপত্নীকে বলেন, তাঁর কোনও স্বামী অতীতেও ছিলেন না, বর্তমানেও নেই। স্ত্রীর প্রতি উদাসীন, বেশ্যা বাড়িতে পড়ে থাকা মানুষ কখনও স্বামী হতে পারেন না। মেজো কুমারের বোন বলে ওঠেন, বেশ্যা বাড়িতে যাওয়া নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়, কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা তার চেয়েও বড় অন্যায়। ছবিটি এখানেই জীবনের কঠোর বাস্তবতার সামনে দাঁড় করায়, যেখানে পৌঁছে দর্শকও দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, কোন খারাপটা বেশি খারাপ!