Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

সৃজিতের টক্কর নিজের সঙ্গেই? কী বলছেন এক যে ছিল রাজার নেপথ্য নায়ক?

ব্লকবাস্টার হওয়া সত্ত্বেও ‘ইয়েতি অভিযান’ আর ‘জুলফিকর’ অনেকেরই পছন্দ হয়নি। আমি 'শাহজাহান রিজেন্সি' ও 'উমা' মাথায় রেখে বলতে পারি, 'এক যে ছিল রাজা' আমার এবছরের সেরা ছবি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ek Je chilo Raja Srijit Interview Pic Express Photo Shashi Ghosh

এক যে ছিল রাজা নিয়ে আড্ডায় সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ছবি- শশী ঘোষ

পুজোয় বড় ছবিগুলোর মধ্যে সবথেকে চর্চিত 'এক যে ছিল রাজা'। ভাওয়াল সন্ন্যাসী কোর্ট কেস নিয়ে তৈরি এই ছবি। এদিন পরিচালকের সাক্ষাৎকার নিতে প্রযোজনা সংস্থার অফিসে যখন পৌঁছলাম, বেশ খোশমেজাজেই ছিলেন তিনি। সদ্য শেষ করেছেন ছবির কালার কারেকশন ও সাউন্ড। খাবার টেবিলেই আড্ডা জমল সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

Advertisment

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের টক্কর কি নিজের সঙ্গেই?

হ্যাঁ! আমার মধ্যে তো একটা সারগেই বুবকা মার্কা ব্যাপার আছেই। আমার সবথেকে বড় প্রতিযোগীতা নিজের সঙ্গেই। আগের ছবির কি ব্যাপ্তিটা মাথায় থাকে যখন পরের ছবিটা করি। কতকটা নিজেকে মেপে নিই। (প্রায় অভিনয় করে, "ও আচ্ছা আগের ছবি ইয়েতি অভিযান, উমা, দাঁড়াও দেখাচ্ছি") এটাই তো মজা।

এটাই কি সাফল্যের মূলমন্ত্র?

দেখো, বিগত আট বছরের মত সফল পরের আট বছর নাও হতে পারি। প্রচন্ড অসফলতাও আসতে পারে। কিন্তু তাতে আমার গল্প বলার সততাটা না হারিয়ে গেলেই হল। এখনও সেই চেষ্টাতেই আছি। যতদিন নিজের মতো করে গল্পটা বলে যেতে পারব ততদিন আমি সফল। বাকি তো ইতিহাস বলবে।

সন্ন্যাসী রাজার ওপর এত চর্চা দেখেই কি ছবিটা বানালেন?
আসলে চর্চা হলেও যে সিনেমা ও সিরিয়াল হয়েছে দুটোই অত্যন্ত রোমান্টিসাইজড, আপন মনের মাধুরী দিয়ে তৈরি ও কল্পনা প্রসূত। সেখানে কোর্ট কেসের কোনও উল্লেখ নেই। কিন্তু ব্যাপারটাতো সেরকম নয়। আসল ঘটনাটা আমরা এবার দেখব। সেকারণেই ট্রেলারে লিখেছি 'দ্য রিয়েল স্টোরি ফর দ্য ফার্স্ট টাইম'। সেই অর্থে ভাওয়াল সন্ন্যাসীর ওপর প্রকৃত ছবি এই প্রথমবারই হচ্ছে।

ছবিতে জাতীয়তাবাদের সঙ্গে নারীবাদকেও কেন জুড়লেন?

জাতীয়তাবাদকে রেখেও আমি নারীবাদের একটা অতিরিক্ত অ্যাঙ্গেল দিয়েছি। কারণ মনে করেছি, যে দিকগুলো দিয়ে গল্প বলা হয় না, সেই দৃষ্টিকোণগুলো একজন নিরপেক্ষ কথক হিসাবে বলা প্রয়োজন। দেখলাম এই আখ্যানটা কখনই চন্দ্রবতী দেবীর (বিভাবতী) পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে দেখা হয়নি। আর সেটা তৈরি করতেই রিনাদির (অপর্না সেন) প্রবেশ।

publive-image ভাওয়াল সন্ন্যাসীর রূপে যিশু সেনগুপ্ত।

রাজনন্দিনী 'চন্দ্রাবতী'-র খোঁজের শুরু কোথায়?

রাজনন্দিনীকে পেলাম বুম্বাদার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) বিজয়া পার্টিতে। খোলা চুলে মার (ইন্দ্রানী দত্ত) সঙ্গে এসেছিল, ইন্দ্রানীদিই আলাপ করিয়ে দিয়েছিল। তখনই এই চরিত্রটা খুঁজছি, আর ওর চেহারার মধ্যে একটা সাবেকিয়ানা আছে - বড় বড় চোখ, গোল মুখ। প্রথমবার ছবিতে কাজ করার যে সরলতাটা থাকে, সেটাও আমার দরকার ছিল।

যিশু কিন্তু বলেছেন ওঁর অন্যতম চ্যালেঞ্জিং রোল এটা...

ওয়ান অফ দ্য কিছু নয়, দ্য মোস্ট চ্যালেঞ্জিং এভার। আসলে আমি এমন একজন কাউকে চাইছিলাম যে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আমার কাছে সারেন্ডার করবে। যে শারীরিক চড়াই-উতড়াই দিয়ে যেতে হয়েছে সেটার জন্য সারেন্ডারটা প্রয়োজন ছিল। যিশু প্রত্যেকবারের মতো এবারও দিয়েছে। আমি জমিদার ও সন্ন্যাসী দুটো ক্ষেত্রেই একটা করে সিন দেখিয়ে দিয়েছিলাম, সেগুলো থেকে শিখে, নিজস্বতা জুড়ে যিশু দারুন করেছে। ও সত্যিই ব্রিলিয়ান্ট অভিনেতা।

লোকেশন খোঁজা নাকি প্রায় অসম্ভব ছিল?

চ্যালেঞ্জ না হলে আমার ঠিক জমে না। সে ছবি তৈরি হোক বা রিলিজ। এই বেশ তিন চারটে ছবি থাকবে তার মধ্যে লড়াই হবে, যেটা বিগত কয়েকবছর ধরে হচ্ছেও। এটা আমার ভীষণ ভাল লাগে। 'চতুষ্কোণ' পর্যন্তও এত রিলিজ হত না, তারপর থেকে হয়।

সৃজিতের গল্প ভান্ডারের রহস্য কি?

এত ধরনের জিনিস পড়ি আমি, কিছু না কিছু আমাকে অ্যাফেক্ট করে। এই যেমন 'গুমনামী বাবা' হঠাৎ কোনও আর্টিকেল পড়ে মাথায় আসে।

Ek Je chilo Raja Srijit Interview Pic Express Photo Shashi Ghosh 'এক যে ছিল রাজা' আমার এবছরের সেরা ছবি, বলছেন সৃজিত। ছবি: শশী ঘোষ

পুজোয় ছবিটা নিয়ে কতটা আশা রয়েছে?

আশা করছি পুজোয় যেমন মানুষের ভালবাসা পাই এবছরও পাব। এইটুকু জানি,ব্লকবাস্টার হওয়া সত্ত্বেও 'ইয়েতি অভিযান' আর 'জুলফিকরের' মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি, অনেকেরই ছবি দুটো পছন্দ হয়নি। আবার 'উমা' তে সেই ভালবাসা ফিরে এসেছে। আমি 'শাহজাহান রিজেন্সি' ও 'উমা' মাথায় রেখে এইটুকু বলতে পারি, 'এক যে ছিল রাজা' আমার এবছরের সেরা ছবি।

একটা প্রজেক্ট থেকে আরেকটা, এটা সৃজিত মুখোপাধ্যায় কী করে পারেন?

কারণ সৃজিত মুখোপাধ্যায় সিঙ্গল। তার কোনও সংসার নেই, সকালে বাজার করতে যেতে হয় না। রাত্রে স্ত্রীর গঞ্জনা শুনতে হয় না ("কোথায় ছিলে এতক্ষণ?" "মানে আমি ওই একটু মিক্সিং করছিলাম তারপর একটু ডাবিং।" "বাজে কথা বোলো না') প্রচুর সময় থাকে, তাই পারি। (হেসে) সবাই তো ছবি করছে, তা আমিও একটু করি।

এরপরে পাঁচটা ছবি আসছে পরিচালকের। ২০২০ পর্যন্ত তৈরি করে ফেলেছেন ক্যালেন্ডার। আসন্ন ছবি শাহজাহান রিজেন্সি, ভিঞ্চিদা, গৌরাঙ্গ ইতিকথা, গুমনামী বাবা এবং কাকাবাবু সিরিজ।

Srijit Mukherji
Advertisment