শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই অভিনেত্রী লাভলি মৈত্রর পদপ্রার্থী হওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বঙ্গ বিজেপি (BJP)। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, লাভলির স্বামী পেশায় IPS অফিসার, আর সেই প্রেক্ষিতেই একজন সরকারি আমলার স্ত্রী হয়ে কীভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার টিকিট পেতে পারেন তিনি! আর সেটাই বা নির্বাচনী-নীতি অনুযায়ী কতটা যুক্তিসঙ্গত? প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বিরোধী শিবিরপক্ষ। এই টেলি-অভিনেত্রীর পরিচিতি নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির যখন সরগরম, তখন স্বামী সৌম্য রায়কে হাওড়া জেলার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত কমিশন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই লাভলি মৈত্রর স্বামীকে পুলিশ সুপার গ্রামীণের পদ থেরে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কোনও নির্বাচনী পদপ্রার্থীর নিকট আত্মীয়ই ভোট লড়তে পারেন না। আর সেই যুক্তিতেই সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে হাওড়া পুলিশ সুপার গ্রামীণ সৌম্য রায়কে। স্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেসের পদপ্রার্থী হওয়ার জেরেই যে পেশাগত জায়গায় আত্মত্যাগ করতে হল সৌম্যকে, তা বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, ‘জলনুপূর’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন লাভলি মৈত্র। তবে টেলিভিশনের পর্দায় এখন আর সেভাবে দেখা যায় না তাঁকে। সম্প্রতিই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তিনি। আর যোগদানের দিন কয়েকের মধ্যেই একুশের ভোটযুদ্ধে (West Bengal Assembly Election 2021) ঘাসফুল শিবিরের হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করার ছাড়পত্র পেয়ে গেলেন? তাও আবার সোনারপুর দক্ষিণের মতো পোড় খাওয়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে! যা কিনা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। অতঃপর সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে যে দলের তরফে কোনও হেভিওয়েটকেই প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হবে, এমনটাই ছকেছিলেন অনেকে। কিন্তু সে হিসেবে গড়মিল হয়ে গেল শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পর। আর সেই ইস্যুকেই এখন হাতিয়ার করে তুলেছে বিজেপি। তাদের কথায়, “সরকারি আমলার স্ত্রী হয়ে তৈলমর্দন করাতেই কি টিকিট উপহার পেলেন লাভলি?”
এককথায়, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই অভিনেত্রীকে নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। কারণ লাভলির পদপ্রার্থী হওয়া নিয়ে বিজেপি নানারকম প্রশ্ন তুলেছে। যা বিধানসভা নির্বাচনের সূতিকালগ্নে রীতিমতো বাজার গরম করার মতো। স্বয়ং পুলিশকর্তার স্ত্রীকে কীভাবে প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস? মমতার এই ‘মাস্টারস্ট্রোক’ নিয়েই প্রশ্ন তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। আর তার পরই হাওড়া জেলার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) পদ থেকে সৌম্য রায়কে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন।