লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছিলেন বেশ কয়েকদিন হল। রবিবার সবার অলক্ষ্যেই চিরবিদায় নিলেন বিশিষ্ট নাট্যকার শাঁওলি মিত্র। এদিন সকালে নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তী নাট্যকার শম্ভু ও তৃপ্তি মিত্রর কন্যা। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে 'নাথবতী অনাথবৎ' খ্যাত শাঁওলি মিত্রর।
বাংলা, ইংরাজি-সহ বিভিন্ন ভাষায় নাট্যজগতে নিজের ছাপ ছেড়েছেন শাঁওলি মিত্র। বাংলায় পালাবদলের সময় আরও অনেক বিশিষ্ট বিদ্বজ্জনের সঙ্গে পথে নেমে শাসকের বিরোধিতা করেছিলেন শাঁওলি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে সবার চোখের আড়ালে চলে যান তিনি। শরীরও ভাল যাচ্ছিল না। আজ, চিরনিদ্রায় গেলেন তিনি।
এদিন দুপুরে কিরীটি মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁর শেষ ইচ্ছাপত্রে তিনি জানিয়ে গিয়েছিলেন, নশ্বর দেহের দাহকার্যের পরই যেন তাঁর মৃত্যুর খবর সবাইকে জানানো হয়। এদিন তাঁর শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যকর্মী এবং রাজনীতিবিদ অর্পিতা ঘোষ।
একইরকম ভাবে শাঁওলির বাবা শম্ভু মিত্র একই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর যেন দ্রুত দাহকার্য সম্পন্ন হয়। তার পর য়েন তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানানো হয় সবাইকে। ১৯৯৭ সালে শম্ভু মিত্রর প্রয়াণে তাই-ই হয়েছিল। বাবার মতোই একই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন শাঁওলি। তাঁর শেষ ইচ্ছাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এদিন দাহকার্যের পর সবাইকে মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়।
আজীবন বাংলা নাট্যজগৎ এবং সিনেমার একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন শাঁওলি। কাজ করেছেন ঋত্বিক ঘটকের মতো স্বনামধন্য পরিচালকের ছবিতে। ২০০৩ সালে সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন অনন্য অভিনয়ের জন্য। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মান প্রদান করে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলা নাট্যজগৎ।