Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

পর্দার পিছনে আর নয়, এবার থেকে সামনেই: অনিন্দিতা

সহকারী পরিচালক থেকে কার্যনির্বাহী প্রযোজক, পর্দার পিছনের হাজারো গুরুদায়িত্ব সামলেছেন অনিন্দিতা রায়চৌধুরী। কিন্তু পর্দার পিছনে থেকে আর কষ্ট পেতে চান না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Executive producer assistant director turned Bengali actress Anindita Raychaudhury decides to stick to acting

ছবি সৌজন্য: অনিন্দিতা রায়চৌধুরী

অনিন্দিতা রায়চৌধুরী সম্প্রতি এসেছেন স্টার জলসা-র ধারাবাহিক 'কে আপন কে পর'-এ, ময়ূরী চরিত্রে। পাশাপাশি কালারস বাংলা-র নতুন ধারাবাহিক 'চিরদিনই আমি যে তোমার'-এও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন তিনি। আবার মাসকয়েক আগেই সামলেছেন 'গুড়িয়া যেখানে গুড্ডু সেখানে' ধারাবাহিকের কার্যনির্বাহী প্রযোজনার দায়িত্ব। বিগত প্রায় দশ বছর ধরেই পর্দার সামনে-পিছনে আসা-যাওয়া করেছেন। প্রযোজনা ও পরিচালনার খুঁটিনাটি বিষয় তাঁর নখদর্পণে। কিন্তু শেষমেশ নিজের অভিনেত্রী সত্তার কাছেই আত্মসমর্পণ করলেন অনিন্দিতা।

Advertisment

''আসলে একটা সময় পরে গিয়ে একটু কষ্ট হতে শুরু করল। অভিনয় করতে তো আমি ভালোবাসি। অনেক সময় ফ্লোরে যখন কোনও অভিনেত্রীকে দেখতাম শট দিতে, মনের মধ্যে কোথাও একটা কষ্ট হতো নিজের জন্য। সেটা এই গত এক বছরেই বেশি মনে হতে শুরু করে'', বলেন অনিন্দিতা, ''ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর ইপি হিসেবে কাজ করছিলাম 'গুড়িয়া যেখানে গুড্ডু সেখানে' প্রজেক্টে। একদিন সাহানাদিকে বললাম যে আর আমার ভালো লাগছে না, আবার আমি অভিনয়েই ফিরতে চাই।''

 'চিরদিনই আমি যে তোমার' ধারাবাহিকে বিদিশা চরিত্রে। ছবি সৌজন্য: অনিন্দিতা

আরও পড়ুন: দর্শক পিঠে এক ঘা দিয়েছেন, সেটাই আমার কাছে আশীর্বাদ: সঞ্চারী

সিদ্ধান্তটা আচমকাই ছিল খানিকটা। কিন্তু ঝুঁকিটা নিতে চেয়েছিলেন অনিন্দিতা। ওই সময়ে অনেকটা ওজনও বেড়ে গিয়েছিল। বিগত সাড়ে তিন মাসে পুরোপুরি ওয়ার্কআউট ও ডায়েটে থেকে ওজন ঝরিয়েছেন ১০ কেজি। ''পর্দার পিছনে কাজ করতে করতে নিজের প্রতি যত্ন নেওয়া হয় না। আমার ওয়েট বেড়ে গিয়েছিল, স্কিনও খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। যখন সিদ্ধান্ত নিলাম যে এবার অভিনেত্রী হিসেবেই কাজ করব, ওই তিন-চার মাস নিজেকে আবার একটু তৈরি করে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। তার মধ্যেই সাহানাদি আমাকে ডাকেন 'জয় কালী'-তে একটা চরিত্র করার জন্য'', বলেন অনিন্দিতা।

Anindita Raychaudhury in Ke Apon Ke Por 'কে আপন কে পর' ধারাবাহিকে ময়ূরী চরিত্রে। ছবি সৌজন্য: অনিন্দিতা

তবে সিদ্ধান্তটা আচমকা হলেও তার সুফল পেয়েছেন অচিরেই। 'জয় কালী কলকত্তাওয়ালি'-তে কাজ করার পরেই প্রযোজক সুশান্ত দাস তাঁকে মনোনীত করেন কালারস বাংলার 'চিরদিনই আমি যে তোমার' ধারাবাহিকের বিদিশা চরিত্রটির জন্য, যে চরিত্র নাকি একেবারেই ব্যক্তি অনিন্দিতার মতোই। তেমনটাই জানালেন তিনি। পাশাপাশি এল 'কে আপন কে পর' ধারাবাহিকে ময়ূরী চরিত্র। 'ভুতু' এবং 'পটলকুমার গানওয়ালা'-র পরে 'তবু মনে রেখো' ধারাবাহিকে সম্পূর্ণ নেগেটিভ একটি চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আবার সাম্প্রতিক দুটি চরিত্রই বেশ ইতিবাচক। তবে চরিত্র নেগেটিভ না পজিটিভ, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আবারও অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করছেন, সেটাই ভালো লাগছে অনিন্দিতার।

 'ভুতু' ধারাবাহিকে ভুতুর মায়ের চরিত্রে।

''বাংলায় মাস্টার্স করে লাইব্রেরি সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করি। ওই সময় থেকেই বুঝতাম যে এটা ঠিক আমার কাজ নয়, আমার অন্য কিছু করার ছিল। এফএম-এ বিজ্ঞাপনের ভয়েস ওভারের কাজ পেয়েছিলাম তখন। সেটা ২০১০ সাল, তখনও সম্পূর্ণ অন্য একটা ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি করতাম। তার পরে চাকরি ছেড়ে দিলাম। দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত মানে তাজুদা আমার লেখা দেখে অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়েছিলেন 'কোটি টাকার বাজি'-তে। ওই নন-ফিকশন শো করতে করতেই রাজদা (রাজ চক্রবর্তী)-র সঙ্গে আলাপ হয়। কস্টিউম এডি হিসেবে সানন্দা টিভি-র 'জোশ' ধারাবাহিক দিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম রাজদা-র হাউসে। তার পর একটু একটু করে পদোন্নতি হয়। 'যোদ্ধা', 'পারব না আমি ছাড়তে তোকে' ও 'কাটমুণ্ডু'--এই ছবিগুলোতে আমি আর অরিজিৎ চিফ অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলাম'', বলেন অনিন্দিতা।

Anindita Raychaudhury assisting Raj Chakraborty রাজ চক্রবর্তীর সহকারী হিসেবে বহু বছর কাজ করেছেন অনিন্দিতা। ছবি সৌজন্য: অনিন্দিতা

আরও পড়ুন: টেলিপর্দার মেগা-খলনায়িকা হয়ে এলেন থিয়েটারের ‘দেবী’

ক্যামেরার পিছনে কাজ করতে করতেই পর্দায় ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন অনিন্দিতা। অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসাটা গাঢ় হতে থাকে। বিগত চার-পাঁচ বছরে ছোটপর্দা ও বড়পর্দায় বহু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রচিত্রণ করেছেন। পাশাপাশি আবার প্রযোজনা সামলানোর কাজও এসেছে। সেই দায়িত্বও পালন করেছেন। এমন একটা চৌমাথায় পৌঁছে গিয়েছিলেন, যেখান থেকে হয় পুরোপুরি থেকে যেতে হবে পর্দার পিছনে, সেখানেই নিজেকে আরও ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে অথবা পুরোপুরি অভিনেত্রী হিসেবেই নিজেকে গড়ে নিতে হবে। পর্দার পিছনের কাজে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই, অনিচ্ছাও নেই, জানালেন অভিনেত্রী। এখনও প্রয়োজন পড়লে বন্ধুদের কোনও শ্যুটিংয়ের অনেক দায়িত্বই নিয়ে নেন স্বেচ্ছায়। কিন্তু অভিনয়কে একটু বেশিই ভালোবেসে ফেলেছেন। তাই এখন থেকে মনেপ্রাণে তাকেই জড়িয়ে থাকতে চান।

TV Actress Bengali Television
Advertisment