Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

শুধু ওয়েবক্যামে শুটিং! সৌমন বসু নিয়ে আসছেন অভিনব ওয়েব সিরিজ

Web Series, Web Cam Diaries: কোনও চিত্রগ্রাহক নেই। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিজস্ব ওয়েবক্যামেই মূলত হয়েছে শুটিং। তৈরি এক্সপেরিমেন্টাল ওয়েব সিরিজের প্রথম সিজন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Souman Bose made a web series only using web cam

সৌমন বসু। ছবি: ফেসবুক পেজ থেকে

Web Series, Web Cam Diaries: একটি ভাল ওয়েব সিরিজ তৈরি করতে গড়ে মোটামুটি এক কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। বাংলায় একটি তারকাসমৃদ্ধ ভাল সিনেমা বানাতেও মোটামুটি ওই রকমই খরচ। আর সেই কারণেই চিত্রনাট্য হাতে অবিরত প্রযোজকদের তদ্বির করতে হয় পরিচালকদের। আসলে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ বা টেলিছবি বানাতে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ খরচ হয় ক্যামেরা ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ভাড়া, টেকনিশিয়ানদের পেমেন্ট ইত্যাদিতে। কী করে সেই খরচ বাঁচিয়ে তৈরি করা যায় একটি ওয়েব সিরিজ, সেই প্রচেষ্টাতেই ছিলেন স্বাধীন চলচ্চিত্রকার ও প্রযোজক সৌমন বসু এবং সফলও হয়েছেন। শুধুমাত্র ওয়েবক্যাম ব্যবহার করে তিনি বানিয়ে ফেলেছেন একটি ওয়েব সিরিজ।

Advertisment

''এমনটা নয় যে ওয়েবক্যাম দিয়ে ছবি বানাতে হবে বলে বানানো। আসলে আমার একটা কনসেপ্ট ছিল, একটা থ্রিলার যার মধ্যে রোমান্স ও হরর দুটোই থাকবে। কিন্তু বাজেটের সমস্যা ছিল আর গল্পে প্রধান দুটি চরিত্র পরস্পরের সঙ্গে ওয়েবক্যামে কথা বলবে, সেই ব্যাপারটাও ছিল। সেখান থেকেই মাথায় এল, যদি পুরোটাই ওয়েবক্যামে শুট করা যায়'', ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন সৌমন।

আরও পড়ুন: আড়াই বছরেও মুক্তি পেল না বাংলা ছবি! প্রয়াত মুখ্য চরিত্রের অভিনেতা

২০১৫-১৬ নাগাদ প্রথম ভাবনাটি মাথায় আসে সৌমনের। তার পরে শুরু হয় চিত্রনাট্য লেখা। শুটিং শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। খুবই এক্সপেরিমেন্টাল কাজ। তার উপর অভিনেতা-অভিনেত্রীরা একই শহরে নেই। প্রত্যেকেই তাঁদের নির্দিষ্ট সিনগুলি নিজের নিজের ওয়েবক্যামে শুট করে সৌমনকে পাঠাতেন। প্রধান দুই চরিত্রে রয়েছেন শুভলীনা সেন ও সৌমন স্বয়ং। এই মুহূর্তে বাংলার উদীয়মান অভিনেতাদের একজন সৌমন। 'ইন দেয়ার লাইফ' ও 'ধানবাদ ব্লুজ' ওয়েব সিরিজে তাঁর অভিনয় অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে। বেশ কিছু বাংলা ছবিতে কাজ করছেন এখন সৌমন যার মধ্যে অন্যতম হল 'ব্রহ্মদৈত্য'। পাশাপাশি 'রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ' ছবির সহ-প্রযোজকও তিনি। এত সব কিছুর মধ্যেই সময় বার করতে হয়েছে তাঁকে 'দ্য ওয়েবক্যাম ডায়েরিজ'-এর জন্য।

''খুব শক্ত ছিল কাজটা। কারণ যাঁরা অভিনয় করছেন, তাঁদের নিজেদেরই ক্যামেরা অ্যাঙ্গলটা ঠিক করে শুট করতে হতো। অনেক ভুল হতো। ঠিক যেভাবে শটটা চাইছি সেভাবে হয়তো হচ্ছে না। আমার নিজের ক্ষেত্রেও হতো। আমার আর শুভলীনার মধ্যেই বেশিরভাগ কথাবার্তা রয়েছে সিরিজে। শুভলীনা মুম্বইতে আর কলকাতায় বসে শুট করতাম। কয়েকটা জায়গায় বিশেষ কারণেই মোবাইল ক্যামেরা ব্যবহার করতে হয়েছে'', জানান সৌমন বসু।

আরও পড়ুন: আর একটি খুনের গল্প নয়, ‘৭ নম্বর সনাতন সান্যাল’ একটা আয়না

প্রায় এক বছর লেগেছে শুট সম্পূর্ণ করতে কারণ প্রত্যেকেই তাঁদের অন্যান্য কাজ সামলে শুট করেছেন। কিন্তু সৌমনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় পোস্ট প্রোডাকশন। ''খরচ যতটুকু হয়েছে তার বেশিরভাগটাই কিন্তু পোস্ট প্রোডাকশনে। আর সেটা প্রায় ২ লক্ষ মতো। অনেক সময়ও লেগেছে। দেখে যেন না মনে হয় যে একজন অভিনেতার সংলাপের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে আর একজন অভিনেতার প্রতিক্রিয়ার কোনও মিল নেই'', জানান সৌমন। তবে সৌমন বসু বরাবরই এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করতে ভালবাসেন। তাঁর স্বাধীন চলচ্চিত্র 'কশ' মুক্তি পেয়েছিল প্রেক্ষাগৃহে। তাঁর একাধিক স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে দেশে-বিদেশে। রংমিস্ত্রিদের নিয়ে তৈরি তাঁর এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রটি দেখলেই দর্শক বুঝবেন তাঁর মুন্সিয়ানার কথা।

শুধু ওয়েবক্যাম ব্যবহার করে সম্পূর্ণ একটি সিরিজ তৈরির নিদর্শন এদেশে আর নেই বলে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে। বিদেশে এর আগে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি হয় কিন্তু সেখানে ওয়েবক্যামে পুরো শুটিংটা হয়নি। সৌমন বসুর সিরিজ 'দ্য ওয়েবক্যাম ডায়েরিজ' কিন্তু পুরোপুরি ওয়েবক্যামেই শুটিং করা। সিরিজের গল্পটি এমন কিছু চরিত্রকে নিয়ে, যারা পরস্পরের সঙ্গে ওয়েবক্যামেই কথা বলে। গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতাকে পুরোপুরি বজায় রাখতেই এমন অভিনব পদ্ধতিতে মেকিংয়ের কথা ভাবেন সৌমন। আপাতত সিরিজের শেষ পর্যায়ের কিছু কাজ ও স্ট্রিমিং নিয়ে ব্যস্ত পরিচালক। সম্ভবত আগামী মাসেই সিরিজের স্ট্রিমিং নিয়ে ঘোষণা করবেন তিনি।

web series
Advertisment