শিল্প তো শিল্প-ই, সঙ্গীতের আবার জাত-পাত কি? সৃজনশীলতার কোনও বর্ণবৈষম্য না থাকলেও মুসলিম গায়িকা ফারমানি নাজ (Farmani Naaz) এবার ভজন গেয়ে বিতর্কে জড়ালেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মৌলবীদের রক্তচক্ষুর শিকারও হচ্ছে হচ্ছে ফারমানিকে।
ইউটিউবার ফারমানি নাজ বেজায় জনপ্রিয়। ইন্ডিয়ান আইডল ১২-এর মঞ্চে পারফর্ম করার পর থেকে তাঁর খ্যাতি আরও বেড়েছে। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাই তাঁর কাল হল! মুসলিম হয়েও অসাধারণ ভজন গায়কী ফারমানির। শিবের ভজন গেয়ে নিজস্ব চ্যানেল আপলোডও করেন। আর সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই বিপাকে যোগী-রাজ্য উত্তরপ্রদেশের মুসলিম গায়িকা। দেওবন্দের উলেমারা একেবারে বাক্যবাণে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছেন তাঁকে।
‘হর হর শম্ভু’ ভজনটি গেয়েছিলেন ফারমানি নাজ। আর তারপর থেকেই মুসলিম-বিদ্বেষী বলে কটাক্ষ করা শুরু হয় তাঁকে। উল্লেখ্য, ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, নাচ-গান তাঁদের কাছে একেবারে নিষিদ্ধ। আর সেখানে একজন মুসলিম গায়িকা কিনা শিবের ভজন গাইছেন! সহ্য হয়নি উলেমাদের। কিন্তু অপরাধটা কোথায়?
ফারমানি নিজেও অবশ্য প্রশ্ন ছুঁড়েছেন। তাঁর কথায়, সঙ্গীতের কোনও ধর্ম হয় না। মহম্মদ রফি থেকে সেলিমের মতো অনেকেই ভজন গেয়েছেন। তাই তাঁর গাওয়া শিবের ভজন নিয়ে যেন কোনওপ্রকার বিতর্ক আর না বাড়ানো হয়, সেই আর্জি-ই জানান ফারমানি নাজ।
[আরও পড়ুন: ‘হিন্দু-ফোবিক! লাল সিং নিয়ে নিজেই বিতর্ক ছড়াচ্ছে’, আমিরকে চরম কটাক্ষ কঙ্গনার]
প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়ান আইডল-এ অংশগ্রহণ করার আগেও ইউটিউব চ্যানেলে গান গেয়ে ভাইরাল হন ফারমানি। কিন্তু তাতে পরিচিতি পেলেও আর্থিক দিক থেকে কোনও লাভ হয়নি। শোয়ের বিচারক বিশাল দাদলানিকেও সেকথা জানান গায়িকা। ফারমানি নাজ বলেন, ভাইরাল হয়েও টাকা কামাতে পারছি না। এদিকে ছোট্ট ছেলের গলায় জন্ম থেকেই সমস্যা। ওর চিকিৎসা করানোর জন্য অর্থের প্রয়োজন। তাই ইন্ডিয়ান আইডল-এ গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
ফারমানি নাজের জীবনও কষ্টের। ২০১৯ সালে ছেলে যখন গলার সমস্যা নিয়ে জন্মায়, তখন স্বামী ছেড়ে পালিয়ে যায় তাঁকে। সেই তখন থেকেই পেটের ভাত জোগাড় করার জন্য গান গাইতে শুরু করেন তিনি। ভাই ফারমান শ্রমিকের কাজ করে দিন গুজরান করেন। তাই এই শোয়ে এসে ছেলের চিকিৎসার জন্য ফান্ড জোগাড় করতে চান ফারমানি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন