'নগরকীর্তন' ছবিতে প্রখ্যাত সাহিত্যিক স্বপ্নময় চক্রবর্তীর উপন্যাসের অনেকাংশ বেমালুম আত্মসাৎ করেছেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। এমনটাই আজ সকালে ফেসবুকে দাবী করেছিলেন লেখক। তাঁর সমাদৃত উপন্যাস 'হলদে গোলাপ' উপন্যাসের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই ছবিটি তৈরি করেছেন কৌশিকবাবু, এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে লেখালিখি চলছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আজ সকালে এ নিয়ে সরাসরি তোপ দাগেন স্বপ্নময়বাবু নিজে। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, "কৌশিকবাবু একজন দক্ষ অভিনেতা এবং পরিচালক। নানা গুনে গুণবান, নীরব আহরণ চাতুর্য সমেত। আবুল বাশারের 'নরম হৃদয়ের চিহ্ন' উপন্যাসটি নীরবে নিয়ে 'শূন্য এ বুকে' ছবিটি বানিয়েছিলেন, এবার 'হলদে গোলাপের' বেশ কিছুটা আত্মস্থ করে 'নগর কীর্তন'।দরকার হলে বাশারকে ফোন করে জেনে নিতে পারেন।"
কৌশিকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "কী বলব যদি কেউ বলেন? আমি ওঁকে ছবিটা দেখার অনুরোধ করতে পারি। যদিও এর জবাবদিহি আমি করব না, নিজেকে ছোট করা হয়। ওঁর গল্প নিলে নাম দেব না কেন? সামান্য একটা আইডিয়া নিয়েছি, তাতেই ঋতুদার নাম দিচ্ছি। কপিরাইট চেয়ে নিয়ে ছবিটা করছি।" প্রসঙ্গত, ২০১২ থেকে ২০১৩ প্রয়াত ঋতুপর্ণ ঘোষ সম্পাদিত একটি পত্রিকায় এই উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হত।
আরও পড়ুন, ‘নগরকীর্তন’ প্রথাগত প্রেমের বাইরে সংস্কার ও সমাজের টানাপোড়েন
তবে ছবিটা দেখার পর লেখকের মত সম্পূর্ণ ভিন্ন। বলা বাহুল্য, ছবিটা না দেখেই পোস্ট করেছিলেন তিনি। ছবি দেখে স্বপ্নময়বাবু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বললেন, "এইমাত্র ছবিটা দেখে বেরোলাম। কিছু কিছু মিল থাকলেও এটা 'হলদে গোলাপ' উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ণ, আমি বলতে পারছি না। ছবিটা আলাদ ছবি। যাঁরা যাঁরা দেখে আমাকে বলেছেন, তাঁদের কথা শুনেই ছবিটা দেখি। বেশ কিছু মিল রয়েছে, কিন্তু তা বলে আমি বলতে পারি না এটা উপন্যাসের চিত্ররূপ।"
অন্যদিকে, তাঁর এই বক্তব্যের খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছ থেকেই পান পরিচালক। শুনে কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, "ওঁকে অনেক ধন্যবাদ। আমার সঙ্গে ওঁর আলাপ নেই তাই সরাসরি বলতে পারছি না। তবে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে জানাচ্ছি, ওঁর উপন্যাস নিয়ে কোনওদিন ছবি করলে আমি সম্মানিত হব।"
আরও পড়ুন, ‘উত্তম কুমার ক্যামেরার পেছনে কেমন ছিলেন, বেশি কেউ জানেন না’
'নগরকীর্তন' এক বাঁশিওয়ালা ও একজন রূপান্তরকামীর ভালবাসার গল্প। রূপান্তরকামীর প্রেমের কাহিনি-নির্ভর এ ছবিতে পুঁটির ভূমিকায় ঋদ্ধি সেন ছাড়াও মধুদা'র চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। মানবী হয়ে ওঠার সাধনায় কত পুঁটি রোজ স্বপ্ন দেখে। কত মধুদা সেই স্বপ্ন কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যায়। এরপরই আর পাঁচটা প্রেমের কাহিনি তৈরি হয়। দুটো মনের একান্ত ব্যক্তিগত। সেই গল্পই অত্যন্ত নিখুঁতভাবে বুনেছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।