Advertisment

বেপরোয়া ইচ্ছা, অদম্য জেদ ও মিষ্টি প্রেমে তৈরি 'রসগোল্লা'

পাভেলের পরিচালনায় এমন একজন মানুষের বায়োপিক তৈরি হয়েছে যার মধ্যে রয়ে গেল চিংড়ি মোচা, পুরোনো বাগবাজার, ভীমচন্দ্র নাগের লেডিকেনি, পোস্তর বড়া, হাওড়া ব্রিজের ইতিহাসের ছোঁয়া আর বাউল-ফকিরের গান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রসগোল্লা ছবির গল্প দানা বাঁধে নবীনচন্দ্র দাস ও তার পত্নী ক্ষীরোদমনিকে নিয়ে।

ছবি- রসগোল্লা

Advertisment

পরিচালক- পাভেল

অভিনয়ে- উজান গঙ্গোপাধ্যায়, অবন্তিকা বিশ্বাস, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত, খরাজ মুখোপাধ্যায়, বিশেষ চরিত্রে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ও চিরঞ্জিৎ।

রেটিং- ৩.৫/৫

বাঙালি জাতিটার প্রতিশব্দ হওয়া উচিৎ মিষ্টির নামে। রোগ-ভোগ কুছ পরোয়া নেহি! সামনে মিষ্টি দেখতে পেলে আর কোনদিকে মন যায়না তাদের। আর যে মানুষটা বাঙালিকে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি দিয়েছে তাঁর কীর্তির মাধ্যমে, যাঁর নাম অধিকাংশ বাঙালি জানেন, তিনি নবীন চন্দ্র দাশ। তবে এই উদ্যোগপতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকায় একটা চাপা কৌতুহল ছিলই। পাভেল অতি যত্নসহকারে পর্দায় রচনা করেছেন বৈকুন্ঠভোগ, রূপচাঁদপক্ষী, আমসন্দেশের জনককে।

নবীনচন্দ্র দাশ ও ক্ষীরোদমনির মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান না থাকলে বাঙালির কপালে যে রসগোল্লা জুটত না তা বিলক্ষণ বুঝিয়েছে এই কাহিনি। ক্ষীরোদমনিকে চাঁদপানা মিষ্টি খাওয়াবেন কথা তো দিয়েছেন কিন্তু দু'বছর ধরে বানিয়ে উঠতে পারছেন না। অবশেষে গঙ্গাজলেই গঙ্গাপুজোটা হল। এই রেসিপির জনকের রেসিপি পর্যন্ত পৌঁছতে গিয়েই তৈরি হল রসগোল্লা-র গল্প। সেই সময়ের কলকাতাকে যথাসম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। নীতিশ রায়কেও কুর্নিশ এই সেট তৈরির জন্য। পোশাক, কথা বলা সবটাই যথেষ্ট। আর একটি শক্ত খুঁটি হল ছবির গান। কালিকাপ্রসাদ দেখিয়ে গেলেন বটে। সত্যিই সেই সময়ের বাদ্যযন্ত্র ছাড়া গানে আর কিচ্ছু ব্যবহার হয়নি। অভিনয়ের কথা বলতে গেলে উজান-অবন্তিকার প্রথমবার পর্দায় আসার কিছুটা জড়তা চোখে পড়েছে ঠিকই, তবে আগাগোড়া পুরো ছবিটায় এই গলদটুকু এড়িয়ে যাওয়া যায়। বিদীপ্তা, খরাজ, রজতাভ নিজ জায়গায় সাবলীল। সংলাপের খোঁচা ঠোঁটের কোণে হাসি আনবেই। ক্ষীরোদের ব্যবসা দেখার প্রস্তাবে শাশুড়ির প্রশ্ন- বাড়ির বউ দোকানে গেলে লোকে কি বলবে? ক্ষীরোদের উত্তর-এসব কথা আপনি ভাবলে লোকে কি ভাববে? একথা পাভেল ছাড়া বলানো অসম্ভব।

আরও পড়ুন, ‘শাহজাহান রিজেন্সি’র ট্রেলার রহস্যের মোড়া সম্পর্কের বেড়াজাল

এবার খামতির প্রশ্ন- যদিও গল্পটা ফিকশনাল, তবুও কোথাও কোথাও অতি নাটকীয় লাগতে পারে। ভিএফএক্স আর একটু উন্নত হতে পারত, ছোট্ট জায়গা হলেও বড্ড চোখে লেগেছে। ক্যামেরার কাজেও আর একটু মনোযোগী হলে মন্দ হতনা। সবথেকে বেশি বলার বিষয় হল সময়সীমা। আর একটু কম হতেই পারত। সম্পাদনা ও কালার কারেকশনে খুঁত ধরার জায়গা নেই। আর যাদের কথা না বললেই নয়, তারা এই ছবির রিসার্চ টিম। অনবদ্য কাজ করেছেন। পাভেলের পরিচালনায় এমন একজন মানুষের বায়োপিক তৈরি হয়েছে যার মধ্যে রয়ে গেল চিংড়ি মোচা, পুরোনো বাগবাজার, ভীমচন্দ্র নাগের লেডিকেনি, পোস্তর বড়া, হাওড়া ব্রিজের ইতিহাসের ছোঁয়া আর বাউল-ফকিরের গান। শেষ পাতে সেই ছবির ডিসক্লেমারে ফিরে এসে বলতে হয়- সিগারেট, মদ খাবেন কেন? খেলে ভাল কিছু খান রসগোল্লা খান।

Shiboprosad Mukherjee Nandita Roy
Advertisment