একাধারে তিনি বলিউড অভিনেত্রী, আবার স্বঘোষিত বিজেপি সমর্থকও। মুম্বইয়ের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে কঙ্গনা রানাউতের (Kangana Ranaut) সোশ্যাল ওয়াল-জুড়ে শুধুই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোট তরজা! এনআরসি, সিএএ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা, বহিরাগত, একের পর এক ইস্যুতে বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। এমনকী, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের বিধ্বংসী জয়ের পর বলিউডের 'কন্ট্রোভার্সি ক্যুইন'-এর মন্তব্য, "বাংলাদেশি আর রোহিঙ্গারা মমতার সবথেকে বড় শক্তি।" এখানেই অবশ্য থেমে থাকেননি তিনি। তৃণমূল সুপ্রিমোকে 'ভিলেন' আখ্যা দিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও তুলনা টেনেছেন। এককথায়, বাংলায় মোদী-বাহিনীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের (TMC) এহেন সাফল্য কঙ্গনা রানাউতের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে এখন। অতঃপর পদ্ম শিবিরকে সমর্থন জানাতে গিয়ে বাংলার মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন বলিউড অভিনেত্রী, এমন অভিযোগ তুলেই এবার কলকাতা পুলিশে FIR দায়ের হল কঙ্গনা রানাউতের বিরুদ্ধে।
হাইকোর্টের আইনজীবী সুমিত চৌধুরী ই-মেল মারফত ‘ক্যুইন’ কঙ্গনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন সোমবার। ২ মে অর্থাৎ রবিবার পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election 2021) ফলাফলের পরই প্রকাশ্যে আসে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার জন্য জাতীয় স্তরের নেতা থেকে ভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা 'বাঘিনী স্পিরিট'-এর জয়জয়-কার করেছেন। মোটেই হজম হয়নি কঙ্গনার। অতঃপর গত ১ দিনে বাংলার বিধানসভা ভোট নিয়ে টুইটের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন তিনি।
টুইটারে কঙ্গনার মন্তব্য, "বাংলাদেশী আর রোহিঙ্গারাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল শক্তি। তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা আর সংখ্যাগরিষ্ঠ নেই। আর বাঙালি মুসলিমরা হল ভারতবর্ষের মধ্যে সবচেয়ে গরীব। বাংলা আরও একটা কাশ্মীরে পরিণত হচ্ছে।" এখানেই থামেননি কঙ্গনা। আরামবাগে বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন লাগানোর খবর শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, "আগামীদিনে বাংলায় রক্তস্নান হবে। সরকার হেরে যাওয়ার ভয়ে রক্ত পিপাসু হয়ে উঠবে।" এধরনের টুইটের পরই উচ্চ আদালতের আইনজীবী সুমিত চৌধুরী বলিউড অভিনেত্রীকে 'সবক' শেখানোর জন্য FIR দায়ের করেন কলকাতা পুলিশে (Kolkata Police)।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোঁচা দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েও টুইট করেছেন কন্ট্রোভার্সি ক্যুইন। কিন্তু সেই ট্যুইটেও ছিল তীব্র খোঁচা। একটি টুইট করে মমতা লেখেন, "২০১৯-এ লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বাঘিনীর মতোই লড়াই করেছেন এই বিধানসভা নির্বাচনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামতে দেয়নি। সিএএ, এনআরসি আটকেছেন। মোদিকে খেলায় আহ্বান জানিয়েছেন। প্রকাশ্যেই শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁদের ভোটার কার্ড দিয়েছেন। গণতন্ত্র এখানে রসিকতা। তবু আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্যালুট জানাচ্ছি। কারণ যদি ভিলেন হতেই হয় তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো হোন। রাবণের মতো লড়াই করুন। রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) মত গোগো না হয়ে। মমতাকে স্যালুট!"