Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

Tirtha Bhattacharya-Arun Chakraborty: 'লোকগানটাকে 'স্বরূপে' বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করো...', প্রয়াত 'লাল পাহাড়ি'র স্রষ্টা অরুণ চক্রবর্তী, তীর্থকে কী শিক্ষা দিয়েছিলেন তিনি?

Tirtha On Arun Chakraborty memories: তীর্থ যাকে শিল্পী কালিকাপ্রসাদের ব্যাটেলিয়নের সদস্য হিসেবে গণ্য করা হয়, তাঁর সঙ্গে অরুণ বাবুর সাক্ষাৎ হয়েছে বহুবার। তাঁর থেকে শিখেছেন এবং শুনেছেন অনেককিছু…

author-image
Anurupa Chakraborty
আপডেট করা হয়েছে
New Update
tirtha on arun chakraborty

Tirtha on Arun Chakraborty: যা বললেন তীর্থ...

শ্রীরামপুর স্টেশনের সেই বিখ্যাত গান। লাল পাহাড়ির দেশে যা, এই গানের নেপথ্যে যে মানুষটি, যার লেখনীতে রূপ পেয়েছিল এই গান, সেই মানুষটাই আর নেই। প্রয়াত অরুণ চক্রবর্তী। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে, যেন লোকসঙ্গীতের এক বিরাট স্তর খসে পড়ল।

Advertisment

লোকসংগীত, যা মানুষকে বাংলার মাটির সঙ্গে পরিচয় করায়, যার সুরে এক অদ্ভুত জাদু রয়েছে। যে সুর মানুষকে মোহিত করে তুলতে পারে। সেই লোকসংগীত নিয়েই আজ, কত ধরনের ফিউশন। কিন্তু, লাল পাহাড়ির দেশে যা গানটা যতদিন বাংলা লোকসংগীত থাকবে ততদিন রয়ে যাবে। অরুণ বাবু নিজের চিন্তা এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছেন একটা গোটা প্রজন্মকে। তাঁর প্রসঙ্গে জানতেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে ফোন গিয়েছিল লোকসংগীত শিল্পী তীর্থ ভট্টাচার্যের কাছে।

তীর্থ যাকে শিল্পী কালিকাপ্রসাদের ব্যাটেলিয়নের সদস্য হিসেবে গণ্য করা হয়, তাঁর সঙ্গে অরুণ বাবুর সাক্ষাৎ হয়েছে বহুবার। তাঁর থেকে শিখেছেন এবং শুনেছেন অনেককিছু। তীর্থর গলায় আজ দুঃখের ডাক। অরুণবাবুকে নিয়ে বলতে গিয়েই তিনি জানান...

উনি তো নগর বাউল ছিলেন, ভবঘুরে মানুষ ছিলেন। নন্দন থেকে কলকাতার নানা সংস্কৃতির জায়গায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আর ওই যে কলকাতার সান্তা ক্লজ যাকে বলে আর কি। সকলকে চকলেট দেওয়া, সৌহার্দ্যপূর্ণ একটা ব্যবহার, উনি একদম সেরকম মানুষ ছিলেন। এমন অসাধারন একটা মানুষ, নাহলে শ্রীরামপুরের বুকে দাঁড়িয়ে এই গান লেখা যায়। আমার সামনাসামনি মেশার সুযোগ হয়েছে, তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছি। সঙ্গ বলে না, লোকসংগীতে তাঁর সঙ্গ পাওয়ার সুযোগ হয়েছে। যাকে সামনে দেখলেই খুব আনন্দ বোধ হত, এমন মানুষ ছিলেন।

লাল পাহাড়ির দেশে যা গানটি বাংলার মানুষের কাছে একদম অনন্য এক সৃষ্টি। এই গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন অরুণ বাবু এবং সুভাষ বাবু দুজনেই। তীর্থ ভাগ করে নিলেন কিভাবে তাঁদের সঙ্গে আড্ডা মারার পাশাপাশি, একে অপরের প্রসঙ্গে তথ্য আদান প্রদান করে নিতেন। তীর্থর কথায়...

সুভাষ বাবুর বাড়িতে যখন আমরা আড্ডা মারতাম, আমার মনে আছে আমরা সুভাষ চক্রবর্তীকে অরুণদার কথা বলতাম, আর অরুণদাকে সুভাষ দার কথা বলতাম। আমার মনে আছে, অরুণ দা আমায় বলেছিলেন, যে এই যে আমরা যারা এখন ঘুরে বেড়াই, বা লোকগান নিয়ে কাজ করি। নিজেদের কর্মজীবন করি। লোকগানটাকে স্বরূপে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করো। মানে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে লোকসংগীত নিয়ে যে এত ব্যবসা হচ্ছে, এবং তাঁর মাতৃত্ব নষ্ট করে, এমন কিছু বানানো হচ্ছে। লোকে সেটাকেই লোকগীতি হিসেবে নিচ্ছে। এই শহুরে মানুষগুলো কিন্তু চাইলেই এমন একটা গান লিখতে পারে, যেটা শিকড়হীন। কিন্তু তিনি এমন একটা গান লিখেছিলেন যেটা আজও বাঙালির কাছে জনপ্রিয়। বর্তমান যুগে দাঁড়িয়ে অনেকেই তো লোকগান লিখছেন সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তিনি এটা বলেছিলেন। 

লোকসঙ্গীতের অপর একজন মানুষ কালিকাপ্রসাদ। ওই যে কথায় বলে যে শিল্পীর মৃত্যু নেই। তাঁর সৃষ্টির মৃত্যু নেই। কালিকা প্রসাদ সবার মধ্যে এইভাবেই বেঁচে আছেন। তীর্থ তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছেন। এবং অরুণ বাবুর কথা বলতে গিয়েই তিনি জানান, কালিকা দাও আমাদের লোকসংগীত নিয়ে এমন একটা দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন। আমাদের মাথায় রাখতেই হবে লোকসংগীত আর যাই হোক শিকড় ছেড়ে হয় না। ফিউশন এবং নানা ইন্সট্রুমেন্টাল অ্যারেঞ্জমেন্টস থাকলেও লোকসঙ্গীতের সঙ্গে যে নাড়ির টান, সেটা আজও বজায় রাখতে মরিয়া তীর্থ।

Arun Chakraborty Tirtha Bhattacharya
Advertisment