Advertisment

'আমি পিকে ব্যানার্জি, চিনতে পারছ?'

যে সময়টুকু পর্দায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে, অত্যন্ত সপ্রতিভ অভিনয় করেছিলেন পিকে। বাস্তবে যা, ছবির পর্দাতেও সেই চরিত্রে অভিনয় করার সু্যোগ খুব কৃতী মানুষরাই পান

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
pk banerjee birthday

‘ইস্টবেঙ্গলের ছেলে’ ছবির শুটিংয়ে (বাঁদিক থেকে) সুব্রত ভট্টাচার্য, পিকে ব্যানার্জি, চিরঞ্জিত। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আর্কাইভ

চলতি বছরের ২০ মার্চ চিরদিনের মতো পৃথিবীর ময়দান ছেড়ে চলে যান ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তী প্রদীপকুমার 'পিকে' ব্যানার্জি। তাঁর প্রয়াণের পর তাঁর বহুমুখী প্রতিভার সাক্ষ্য হিসেবে আমরা তুলে ধরেছিলাম তাঁর রূপোলী পর্দায় আবির্ভাবের কাহিনী। আজ তাঁর জন্মদিনে ফের একবার আপনাদের শোনালাম সেই গল্প। বেঁচে থাকলে আজ ৮৪ বছর পূর্ণ করতেন পিকে।

Advertisment

- আমি পিকে ব্যানার্জী, চিনতে পারছ না?

- কী বলছেন প্রদীপদা, আপনাকে চিনতে পারব না?

- চলো, গাড়িতে ওঠো। তোমাকে আমি নিয়ে যেতে এসেছি। তোমাকে এ বছর ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে হবে।

- কী বলছেন? এ তো আমার স্বপ্ন প্রদীপদা!

- স্বপ্ন সত্যি করতে হলে তো গাড়িতে উঠতে হবে। ক্লাবে সই করতে হবে তো।

উপরে যা কথোপকথন পড়লেন, বাস্তবে ঘটেনি। ঘটেছিল ১৯৮৯ সালে মুক্তি-পাওয়া বাংলা ছবি 'ইস্টবেঙ্গলের ছেলে’-র একটি দৃশ্যে। যে দৃশ্যে স্বভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত পিকে ব্যানার্জী। নিজের জীবদ্দশাতেই কিংবদন্তী হয়ে ওঠা পিকে-কে কয়েকটি দৃশ্যে তাঁর নিজের চরিত্রেই অভিনয় করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন পরিচালক অলোক ভৌমিক।

সংক্ষেপে ছবির গল্প ছিল এরকম। গ্রামের দরিদ্র পরিবারের প্রতিভাবান এক ফুটবলারকে ঘিরে তার অসুস্থ দাদার অনেক স্বপ্ন। স্বপ্ন, ভাই একদিন বড় হয়ে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ময়দান কাঁপাবে। ফুটবলার এবং তাঁর দাদার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যথাক্রমে চিরঞ্জিত ও বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শতাব্দী রায় এবং রুমা গুহঠাকুরতার মতো তারকারা।

আরও পড়ুন: মুছে যাওয়া দিনগুলি: শতবর্ষ শেষে হেমন্তের জীবনের জানা-অজানা মুহূর্ত

ছবিতে পিকে-র আবির্ভাব ঘটে ৪০ মিনিটের মাথায়। গ্রামের ওই তরুণ প্রতিভার নামডাক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ইস্টবেঙ্গল তাকে নিজেদের ক্লাবে সই করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গাড়ি নিয়ে ফুটবলারটির বাড়ি হাজির হন ইস্টবেঙ্গলের কোচ পিকে ব্যানার্জী স্বয়ং। গ্রামের বাড়ির দোরগোড়ায় খোদ পিকে-কে দেখে রীতিমতো হতচকিত হয়ে যান ফুটবলারটির চরিত্রে অভিনয়-করা চিরঞ্জিত। তারপরেই হয় কালো সাফারি স্যুট পরিহিত পিকে আর চিরঞ্জিতের ওই কথোপকথন, যা দিয়ে এই লেখার শুরু।

পরের একটি দৃশ্যে আবার দেখা যায় পিকে-কে, যেখানে তিনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে দাঁড়িয়ে চিরঞ্জিতকে বলছেন, "এই হলো ইস্টবেঙ্গল ক্লাব...।" যে সামান্য সময়টুকু এই ছবিতে পর্দায় দেখা গিয়েছিল পিকে-কে, অত্যন্ত সপ্রতিভ অভিনয় করেছিলেন তিনি। বাস্তব জীবনে যা, ছবির পর্দাতেও সেই চরিত্রে অভিনয় করার সু্যোগ খুব কৃতী মানুষরাই পান। পিকে পেয়েছিলেন। কারণ, তিনি ছিলেন এক এবং অদ্বিতীয়।

পিকে প্রয়াত। জীবনকালেই বায়োপিক হওয়া উচিত ছিল তাঁকে নিয়ে। অন্তত মৃত্যুর পর তো হোক! বর্তমান আবহে এখনই হয়তো কাজ শুরু করা যাবে না, তবু টলিউডের পরিচালকরা মাথায় রাখবেন নিশ্চয়ই।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Advertisment