Bonedi Barir Pujo: কলকাতা থেকে একটু দূরে এই পুজো। কামারপুকুরে পৌঁছে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন তাজপুরের চ্যাটার্জি বাড়ির পুজো, চট করেই রাস্তা বলে দেবেন যে কেউ। কামারপুকুর থেকে ৫-১০ মিনিট সময় লাগে পৌঁছতে। ওই পরিবারেরই মেয়ে ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায়। বাংলা ছোটপর্দার এই পরিচিত অভিনেত্রী আসলে একজন নিউট্রিশনিস্ট। বেশ অনেকদিন প্র্যাকটিসও করেছেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিনয়ের প্রতি তাঁর ভালোবাসার জন্য পেশাদারী অভিনয়কেই বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। প্রতি বছর পঞ্চমীর দিন পরিবারের সকলের সঙ্গে তিনি পাড়ি দেন গ্রামের বাড়িতে। পুজোর কয়েকটা দিন সেখানে বসে মিলনোৎসব। বিদেশ থেকেও আত্মীয়স্বজনেরা আসেন।
”আমাদের পুজোটা তিনশো বছরের। আগে খুব বড় করে হতো না। আমার দাদু যবে থেকে জমিদার হয়েছেন, তখন থেকেই অনেকটা ধুমধাম করে পুজো হয়”, ত্বরিতা বলেন, ”দাদুর পরে বাবা আর জেঠুই সব দায়িত্ব নিতেন। দুজনের কেউই এখন নেই। আমার পিসিও মারা গিয়েছেন দুবছর আগে। তাই এখন মূল দায়িত্বটা আমার মায়ের উপরেই।”
আরও পড়ুন: শোভাবাজারের মিত্র বাড়ির বউ সঙঘশ্রী! শোনালেন ৩৭২ বছরের পুজোর গল্প
কলকাতা থেকেই সম্পূর্ণ পুজোর বাজার করে টেম্পোতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কামারপুকুরের বাড়িতে। ঠাকুরের গয়না, বাসন থেকে শুরু করে দশকর্মার বেশিরভাগ জিনিসই যায় কলকাতা থেকে। বাকি ফলমূল, কাঁচা বাজারটা শুধু আসে নিজেদের বাগান ও স্থানীয় বাজার থেকে। আর ঠাকুরের ভোগের জন্য মাছ আসে পরিবারের নিজস্ব পুকুর থেকে।
এবাড়িতে একই কাঠামোতে পুজো হয় প্রতি বছর। বিসর্জনের পরে কাঠামো তুলে নিয়ে এসে রাখা হয় ঠাকুরদালানে। প্রতি বছর রথের দিনে প্রথম মাটি পড়ে। আর প্রস্তুতি শুরু হয় মহালয়া থেকে। প্রতি বছর পঞ্চমী থেকেই মায়ের সঙ্গে পুজোর আয়োজনে পুরোদমে থাকেন ত্বরিতা। বাকি আত্মীয়রা আসেন সপ্তমীতে। হই হই করে জমে ওঠে এই ঘরোয়া পুজো। তবে পুজোর পরিচালনা ঘরোয়া হলেও পুজো দেখতে কিন্তু প্রচুর মানুষ আসেন এবাড়িতে। গ্রামের অন্তত পঞ্চাশ-ষাট জন মানুষ পুজোর কাজ করেন। আর সপ্তমীতে গ্রামের সবাইকে খাওয়ানো হয় বিশেষ ভোজ– মাছ, খিচুড়ি, ভাজা, সব্জি, ডাল, চাটনি-পায়েস।
আরও পড়ুন: ‘পুজোর সময় মরে গেলেও কলকাতার বাইরে ঘুরতে যাব না’
এবার আসা যাক এই পুজোর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য, মা দুর্গার মাছের ঝাল ভোগের প্রসঙ্গে। ”আমাদের বাড়ির পুজোয় মা দুর্গার প্রধান ভোগ হল কাঁচা মাছের ঝাল। একটা বড় ডাবুহাতাতেই রান্না হয়, মাছটা না ভেজে সরাসরি ঝোল রান্না হয় আর ওই হাতা করেই মা-কে ভোগ নিবেদন করা হয়”, বলেন ত্বরিতা, ”মাছটা মূলত আসে আমাদের নিজেদের পুকুর থেকেই। আমাদের পূর্বপুরুষ কেউ এরকম স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। তার পর থেকেই এই ভোগ দেওয়া শুরু। তবে মা-কে মাছ ভোগ দেওয়া হলেও আমরা বাড়ির সবাই, বিশেষ করে বড়রা নিরামিষ খাই মহালয়া থেকে দশমী পর্যন্ত।”
তাজপুরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজোর আরও একটা আকর্ষণ হল নাড়ু। পুজোর প্রসাদ হিসেবে বিপুল পরিমাণ নাড়ু তৈরি হয়। থরে থরে সাজানো থাকে কাঠের বারকোশে। পুজো দেখতে এসে নাড়ু প্রসাদ না খেয়ে খুব একটা কেউ ফিরে যান না। এই পুজোতে চারদিনই ঢাকের বাদ্যির সঙ্গে বসে নহবত। ইদানীং খুব কম বনেদি বাড়ির পুজোতেই এই নহবত ব্যাপারটি রয়েছে। ”আগে একাদশীর দিন যাত্রা হতো। আমি ছোটবেলাতেও দেখেছি যাত্রা। এখন আর সে সব হয় না কিন্তু আমরা বাড়ির সবাই মিলে আটচালাতে জড়ো হয়ে একটা ছোট্ট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করি। কেউ গান করে, কেউ মাউথ অর্গান বাজায়। ওটাই আমাদের বিজয়া সম্মিলনী”, বলেন ত্বরিতা।
Get all the Latest Bengali News and West Bengal News at Indian Express Bangla. You can also catch all the Entertainment News in Bangla by following us on Twitter and Facebook
Web Title:
রাগ, অভিমান ভুলে রাজীব-লক্ষ্মীরতন-বৈশালীকে একসঙ্গে লড়াইয়ের বার্তা প্রসূনের
টিকা নিয়েও রাজনীতি! বর্ধমানে ভ্যাকসিন নিলেন তৃণমূল বিধায়করা, তুঙ্গে বিতর্ক
শ্রাবন্তীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ, তার মাঝেই 'মনের বান্ধবী'র সঙ্গে ছবি পোস্ট রোশনের
"স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য ইতিহাস রাহুল গান্ধীকে স্মরণ করবে"
ফাইজারের করোনা টিকা নেওয়ার পর ২৩ জনের মৃত্যু, চাঞ্চল্য নরওয়েতে