শহরে একের পর এক বন্ধ হয়ে গিয়েছে সিঙ্গল সিনেমা হল। ঝাঁপ পড়েছে বহু হলমালিকের ব্যবসার। কোথা থেকে কোথায় এসে দাঁডিয়েছে হলের সংখ্যা তা হাতে গুনে বলাও অসম্ভব হয়ে গিয়েছে। এমতবস্থায় মরণ ঘা হয়ে দাঁড়াল একজিবিটর এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের মতভেদ। মেইনটেনেন্স চার্জ ঘিরে নিয়মের বেড়াজালে পড়ল দুপক্ষই। ফল, ৫ অক্টোবর থেকে বন্ধ হয়ে যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা হল। আজ সেই মর্মেই সাংবাদিক বৈঠক করল ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন বা ইম্পা।
তাদের তরফ থেকে ইমপার চেয়ারম্যান রতন সাহার বক্তব্য, যা ছিল, তার চেয়ে সামান্য কিছু বাড়ানো হয়েছে সিনেমা হলের মেইনটেনেন্স ফি। এবং তাও করা হয়েছে সমস্ত কমিটির সঙ্গে আলোচনার পর। এমনকি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও আশ্বাস দিয়েছিলেন এ ব্যাপারে। তারপরেই এই সপ্তাহ থেকে চার্জ বাড়ানোর কথা। কিন্তু তা লাগু করতেই সমস্যা দাঁড়াল সরকারি শিলমোহরের প্রশ্নে। ফলে ফি বাড়া নিয়ে চাপানউতোর। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে হল মালিকরা চার্জ না বাড়ালে হল চালাবেন না, আর ফি বেড়ে গেলে তাদের কনটেন্ট দেবেন না ডিস্ট্রিবিউটররা। ফলে সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে এ সমস্যার সমাধান হবে না বলেই মনে করছে ইমপা।
মুখ্যমন্ত্রী না ফিরলে মিলবে না সমাধান সূত্র। ছবি- শশী ঘোষ
প্রসঙ্গত, টিকিট বিক্রির টাকার একটা অংশ মেইনটেনেন্স ফি হিসাবে নেন একজিবিটররা। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির ফলে ১৭ বছর পর সেই ফি বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এতদিন ৩ শতাংশ মেইনটেনেন্স ফি দিতেন ডিস্ট্রিবিউটররা, সেই চার্জ বাড়িয়ে এদিন করা হয় সাধারণ হলে ২ এর জায়গায় ৩ শতাংশ, হলে কুলার থাকলে ২.৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ, ও এসি হলে ৩ শতাংশের জায়গায় ১০ শতাংশ। কিন্তু তা দিতে রাজি নন ডিস্ট্রিবিউটররা। তাঁদের বক্তব্য, গোয়া, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে ফি বাড়ানোর সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও তাই প্রয়োজন। তবে মুখ্যমন্ত্রী বিদেশি লগ্নি টানতে ইউরোপে, তাই এই সমস্যার উত্তর আপাতত অধরা।
এদিকে পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে ছ'টি বাংলা ছবি সহ কিছু হিন্দি ও অন্য ভাষার ছবি। সেদিক থেকে ব্যবসা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ প্রযোজকদের কপালে। তবে এই আওতা থেকে বাদ মাল্টিপ্লেক্সগুলো। সুতরাং, ৫ অক্টোবরের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে বন্ধ হতে পারে সিনেমা হল। শিকেয় উঠতে পারে ব্যবসা।