দোকানের আর পাঁচটা চেনা ছাঁচে ফেলা লক্ষ্মীপ্রতিমার মুখ নয়। তবে এই মুখ একেবারে অচেনাও নয়। উত্তম কুমারের (Uttam Kumar) ভবানীপুরের বাড়ির লক্ষ্মীপ্রতিমা বানানো হয় সেই বাড়ির-ই গৃহলক্ষ্মীর মুখে আদলে। মহানায়কের বাড়ির পুজোয় আদতে আজও 'গৌরীরূপী' লক্ষ্মীর পুজোর চল রয়েছে। আরেকটু খোলসা করে বললে, উত্তম কুমারের স্ত্রী গৌরিদেবীর মুখের আদলে লক্ষ্মীপ্রতিমা বানিয়েই পুজো শুরু করেছিলেন মহানায়ক। বছরের পর বছর ধরে আজও সেই রীতি পালিত হয়ে আসছে। আর ঠাকুরদা উত্তম কুমার, তরুণ কুমার একসময়ে যে আসনে বসে পুজো করতেন, এখন সেই আসনে বসে পুজো করেন নাতি তথা টলিউডের স্বনামধন্য অভিনেতা গৌরব চট্টোপাধ্যায় (Gourab Chatterjee)।
পারিবারিক রীতি মেনে গৌরব-ই এখন লক্ষ্মীপুজোর (Laxmi Puja 2021) সব দায়িত্ব পালন করেন। বাড়ির প্রবেশমুখ পেরিয়েই বড় উঠোন। তার সামনেই ঠাকুরঘর, সেখানেই সাবেকি আলপনা দিয়ে ফুলে সাজানো হয় ঠাকুরের আসন। সাজান গৌরব ও তাঁর বোনেরা নিজে হাতে। একসময় বাড়িতে ভিয়েন বসত। ভিন্ন রকমের মন্ডা-মিঠাই তৈরি হত। রান্না হত বাড়ি ছাদে। কিন্তু এখন কালের নিয়মে পুজোর কলেবর ছোট হয়েছেন। ভিয়েন বসে না।
<আরও পড়ুন: ‘সেক্যুলার শেখ হাসিনার শাসনে কীভাবে বাংলাদেশে এমন ঘটে?’, তোপ জাভেদ আখতারের>
উল্লেখ্য, আরেকটা মজার রীতিও ছিল। প্রতিবার উঠোনে তক্তপোশ, বালিশ পেতে রাতভর পরিবারের সদস্যরা মিলে উত্তম কুমারের ছবি দেখতেন। এখন অবশ্য কর্মব্যস্ততার জেরে সেই নিয়মেও ভাঁটা পড়েছে। তবে বদলায়নি প্রতিমার মুখ। তার নেপথ্যেও অবশ্য বেজায় মজার আরেক ঘটনা।
'যদুভট্ট' ছবির শুটিংয়ে শিল্পী নিরঞ্জন পালকে মূর্তি বানাতে দেখে বাড়িতে ডেকে পাঠান মহানায়ক। লক্ষ্মীপ্রতিমার অর্ডার দেওয়া হবে। সকাল সকাল ঘর মুছছিলেন উত্তম কুমারের স্ত্রী গৌরিদেবী। তখনই মহানায়কের কথা পাড়তেই ঘোমটার আড়াল থেকে গৌরিদেবী উত্তর দেন। একঝলক দেখে শিল্পীর মনে ধরে যায় সেই মুখ। তারপর থেকে আজও উত্তম কুমারের বাড়িতে সেই 'গৌরীরূপী' লক্ষ্মীর পুজো হয়ে আসছে। উল্লেখ্য, দেবলীনা-গৌরবের বিয়ের পর প্রথমবার লক্ষ্মীপুজো। সেই প্রেক্ষিতে বাবার বাড়ি আর শ্বশুরবাড়ি দুই দিকেরই পুজোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দেবলীনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন