Hiya and Smriti in Zee Bangla Alochhaya: উত্তর কলকাতার একটি রাজবাড়িতে চলছে শুটিং। পরিপাটি সেজে দুই খুদে ঘুরে বেড়াচ্ছে এঘর-ওঘর। তবে সবটাই বড়দের নজরে নজরে। মায়েরা তো রয়েছেনই। সঙ্গে রয়েছেন ইউনিটের অন্য আঙ্কল-আন্টিরা। 'আলোছায়া' ধারাবাহিকের দুই শিশু অভিনেত্রী, আলো (হিয়া দে) ও ছায়া (স্মৃতি সিং)-র সঙ্গে সংক্ষিপ্ত কথোপকথনে ধরা পড়ল, সিরিয়ালে যাই ঘটুক না কেন, পর্দার বাইরে কিন্তু অসীম সখ্য রয়েছে এই দুই খুদের মধ্যে।
এই প্রথম দুজনের একসঙ্গে অভিনয়। হিয়া যেমন বিখ্যাত হয়েছিল 'পটলকুমার গানওয়ালা'-র পটল চরিত্রের জন্য তেমনই স্মৃতি আবার দর্শকের মন জিতে নিয়েছিল 'রেশমঝাঁপি' ধারাবাহিকের তিতলি চরিত্রে অভিনয় করে। সাম্প্রতিক সময়ের বাংলা টেলিভিশনের দুই প্রতিভাময়ী শিশু অভিনেত্রীকে এক সুতোয় বাঁধতে চলেছে 'আলোছায়া'। শুটিংয়ের কাজ যেমন চলছে, তেমনই পাশাপাশি গড়ে উঠছে বন্ধুতা।
আরও পড়ুন: ‘আগের দিন রাতে জানায় কাল থেকে শুটিং’, ‘কৃষ্ণকলি’-তে এলেন খলনায়ক
দুজনের মধ্যে কি বন্ধুত্ব হয়েছে? জিজ্ঞাসা করতেই দুজনে একসঙ্গে বলে ওঠে-- ''হ্যাঁ।'' একজনের লম্বা বেণী, চোখে মোটা চশমা। আর অন্যজনের চুল একটু স্টাইল করে গোছানো। একজনের পরনে সাধারণ সালওয়ার কামিজ আর অন্যজনের পরনে একটু শৌখিন পোশাক। দুটি চরিত্রের মেজাজটা যে আলাদা এই শিশু অভিনেত্রীদের এক ঝলক দেখলেই বোঝা যায়। এর মধ্যেই ফ্লোরে চরিত্রকে বহন করতে শিখে গিয়েছে দুই খুদে। আর তা বাদে যা রয়েছে তা হল শৈশবের বিস্ময়।
আর চার-পাঁচজন শিশুর থেকে তো একটু আলাদা হয় শিশু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জীবন। সপ্তাহে দুতিনদিন স্কুল আর বাকি দিনগুলোর বেশিরভাগটাই শুটিং ফ্লোরে কাটানো মানে অনেকটা অতিরিক্ত চাপ। দুরকম পড়ার চাপ বলা যায়-- সংলাপ মুখস্থ করা এবং হোমওয়ার্ক। হিয়া ও স্মৃতি দুজনেই কিন্তু আনন্দের সঙ্গেই বিষয়টা সামলে নেয়। আর কথায় কথায় স্মৃতি জানায়, হোমওয়ার্ক করার সময়ে একটু-আধটু পড়াও দেখিয়ে দেয় হিয়াদিদি।
স্মৃতির থেকে বছর দুয়েকের বড় হিয়া। এই বছর হিয়ার ক্লাস ফোর আর স্মৃতি পড়ে ক্লাস টু-তে। দুজনেই এই ধারাবাহিকের জন্য ওয়ার্কশপ করেছেন একসঙ্গে। সেই নিয়ে প্রশ্ন করতেই আবারও একসঙ্গে বলে ওঠে দুজনে-- ''স্বাগতা আন্টির কাজে ওয়ার্কশপ করেছি''। বলেই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে চোখমুখ। টেলিজগতের বেশিরভাগ নবাগত-নবাগতাদের যিনি মেন্টর, সেই অভিনেত্রী স্বাগতা মুখোপাধ্যায়ের কাছে এই ধারাবাহিকের ওয়ার্কশপ করতে গিয়েই দুই শিশু তারকার বন্ধুত্ব। দুজনের মনের সেতার এক তারেতে বাঁধা পড়েছে সেইখানেই।
আরও পড়ুন: আসছে ‘কৃশানু কৃশানু’, দর্শক যে ৫টি বিষয় দেখতে পাবেন এই সিরিজে
''আমি বসেছিলাম এক জায়গায়। ও-ও বসেছিল এক জায়গায়। তার পরে স্বাগতা আন্টি আর সুপ্রীতি আন্টি আমাদের আলাপ করিয়ে দিল'', বলে হিয়া। ব্যস, সেই যে আলাপ, তার পর থেকেই পর্দার আলো ও ছায়া পরস্পরের ছায়াসঙ্গী হয়ে গিয়েছে। খুব কম সময়েই দেখা গেল একজন আর একজনের হাত ধরে নেই। আসলে শৈশব সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বোধ করে, সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ হয় বোধহয় আর একটি শৈশবের আলো অথবা ছায়াতেই।
''এটা কোনওভাবেই দুই বোনের রেষারেষির গল্প নয়, আসলে বিষয়টা খুব প্রাসঙ্গিক'', বলেন প্রযোজক সুশান্ত দে, ''আমার ৭ বছরের মেয়ে বাড়ি ফিরেই হয়তো মায়ের নেলপলিশ লাগায়, ইউটিউব দেখে। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে টেকনোলজিকাল অ্যাডভান্সমেন্ট আমাদের মেনে নিতেই হচ্ছে। আজকালকার বাচ্চারা অ্যাপ দেখে পড়াশোনা করে। ছায়া ঠিক তেমনই একটা বাচ্চা কিন্তু ভিলেন নয়। বলা যায় অনেক রিলেটেবল চরিত্র, যাকে দেখলেই দর্শকের মনে হবে আরে আমার মেয়েই তো এই রকম। আলো হচ্ছে একটা স্বপ্ন, এমন একটা আদর্শ চরিত্র যা হয়তো আজকের দিনে লাখে একজন হয়। যে নির্মল শৈশবটা হারিয়ে গিয়েছে, আলো সেই শৈশব।''