গোয়ায় বসেছে ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আসর। আর সেই উৎসবের মঞ্চেই সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত ছবি দ্য কাশ্মীর ফাইলস-কে প্রকাশ্যে সমালোচনায় ধুয়ে দিলেন ইজরায়েলি পরিচালক। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিচালক আবার চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি বোর্ডের প্রধানও। নাদাভ লাপিড কাশ্মীর ফাইলস-কে নিয়ে বললেন, "অত্যন্ত কুৎসিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোজিত ছবি।" প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে এই ছবির অন্তর্ভুক্তি দেখে তিনি বিস্মিত।
সোমবার চলচ্চিত্র উৎসব IFFI-র ৫৩তম সংস্করণের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে লাপিড বলেন, "আমি সাধারণত সংবাদপত্র পড়ি না। কিন্তু এবার আমি বলতে চাই, এবারের উৎসবের অধিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। বিবিধতা, এমন উদ্ভাবনী ছবিগুলির জন্য। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ১৫টি ছবি ছিল, তার মধ্যে ১৪টির সিনেম্যাটিক গুণ মারাত্মক ছিল। যা নিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু আমরা সবাই, ১৫ নম্বর ছবি দেখে স্তম্ভিত, বিরক্ত। দ্য কাশ্মীর ফাইলস, এটা মনে হল প্রোপাগান্ডা, কুৎসিত ছবি, এমন একটা ঐতিহ্যশালী চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতামূলক বিভাগের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত।"
উল্লেখ্য, লাপিড আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বিভাগের জুরি চেয়ারম্যান। ২০১৯ সালে ৬৯তম বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর ছবি গোল্ডেন বিয়ার পুরস্কারে ভূষিত হয়। তিনি এদিন বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যাঁর মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরও ছিলেন, তাঁদের সামনে এই মন্তব্য করেন। দর্শকাসনে বসে তখন আশা পারেখ, অক্ষয় কুমার, আয়ুষ্মান খুরানা এবং রানা দাগ্গুবাটি।
তেল আভিভের বাসিন্দা লাপিড কেরিয়ার শুরু করেন ২০১১ সালে। পুলিসম্যান নামে তাঁর ছবি বিশেষ জুরি পুরস্কার জেতে লোকার্নো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।
আরও পড়ুন ‘চেহারার বালাই নেই, কিন্তু ওয়েস্টার্ন পরতে হবে!’ বিস্ফোরক আশা পারেখ
এদিকে, লাপিডের এই মন্তব্যের জেরে ভারত-ইজরায়েল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আঁচ পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন ভারতে ইজরায়েলের দূত নাওর গিলন। তিনি পাল্টা লাপিডকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। বলেছেন, তাঁকে জুরি চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসানোর জন্য ভারতকে অপমান করেছেন লাপিড। গিলন বলেছেন, "ভারতীয় সংস্কৃতিতে অতিথি দেবতার সমান। কিন্তু চলচ্চিত্র উৎসবের বিচারকের প্যানেলের জুরির চেয়ারকে অপমান করেছেন লাপিড। লাপিডকে খোলা চিঠি লিখে সমালোচনা করেছেন টুইটারে।"
গিলন আরও লিখেছেন, "আমি ছবির বিশেষজ্ঞ নই, কিন্তু কোনও ইতিহাস নির্ভর বিষয়ের উপর না জেনে কোনও স্পর্শকাতর বা অপ্রীতিকর মন্তব্য করা উচিত নয়। ভারতে এমন জিনিস হয়েছে, এখনও অনেকে তাঁর মূল্য চোকাচ্ছেন। ভারত এবং ইজরায়েলের মধ্যে যে বন্ধুত্ব রয়েছে তা অনেক মজবুত, আপনার সংঘাতপূর্ণ মন্তব্যে তাতে প্রভাব পড়বে না।" তিনি লাপিডের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।