২ ফেব্রুয়ারি নীলাঞ্জন ঘোষের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty)। এর মাঝেই ৭ তারিখ 'নবপরিণীতা' গায়িকা জাঙ্গিপাড়া বইমেলার মঞ্চ মাতিয়েছেন কণ্ঠ ছেড়ে। খোলা স্টেজে গাইছেন নববধূ। খোলা চুল। পরনে শাড়ি। হাতের মেহেন্দি এখনও ওঠেনি। সিদুরে সিঁথিতে দিব্যি লাগছিল নবপরিণীতা গায়িকাকে। কিন্তু হাতে শাঁখা-পলা কোথায়? প্রশ্ন তুলেছেন নেটদুনিয়ার নীতি-পুলিশরা। অতঃপর সেই প্রেক্ষিতেই শাঁখা, পলা পরা নিয়ে ‘কটু’ কথা শুনতে হল ইমন চক্রর্তীকে। গায়িকার অবশ্য সাফ উত্তর, বরকে কতটা ভালবাসি এসব পরে প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই!
হিন্দুরীতিতে বিয়ের পরই নারীদের ভূষণে শাঁখা, পলা, সিঁদুর পরা অত্যাবশকীয়। যে প্রচলিত বিশ্বাস একপ্রকার ‘সামাজিক ট্যাবু’ হয়েই দাঁড়িয়েছে। বিবাহিত হিসেবে চিহ্ন কী শুধু নারীদের ক্ষেত্রেই বাঞ্ছনীয়, পুরুষদের ক্ষেত্রে নয়? এই প্রশ্ন বারবার ঘুরেফিরে এসেছে। তাই আজও বোধহয় বিবাহিতা নারীর আভূষণে শাঁখা, পলা, সিঁদুর ঠাঁই না পেলেই, তাঁর দিকে উড়ে আসে প্রশ্নবাণ। ইমন চক্রবর্তীর ক্ষেত্রেও তাঁর অন্যথা হয়নি।
এক নেটজনতা লিখলেন, "হাতে অন্তত ১ মাস শাখা-পলা থাকলে খুব ভাল দেখাত। দারুন লাগছে সিঁদুরটা পরে।" আরেকজনের কথায়, "যতই সেলিব্রিটি হোক, আদতে তো বাঙালি। শাঁখা-পলাটা পরা উচিৎ ছিল। নতুন বিয়ে বলে কথা।" কারও আবার মন্তব্য, "ক'টা দিন একটু শাঁখা পলা পরো, তবেই তো নতুন বউ লাগবে। ফ্যাশন না হয় পরে হবে।" আর যাঁরা এমন মন্তব্যগুলি করেছেন, তাঁরা সকলেই মহিলা।
এই বিষয়ে ইমন অবশ্য নির্বাক। সোশ্যাল মিডিয়ার এসব মন্তব্য তাঁকে মোটেই ভাবায় না। কারণ গায়িকার কথায়, তাঁর জীবনে এধরনের মানুষদের কোনও অস্তিত্ব নেই। তাঁর কাছে তাঁর স্বামী, বাবা এবং আশপাশের মানুষগুলোই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই শাঁখা, পলা পরে বরকে কতটা ভালবাসেন কিংবা তাঁর জন্য কতটা ভাবেন, তা মোটেই প্রমাণিত হয় না। আজীবন নীলাঞ্জনের পাশে থাকার যে শপথ নিয়েছেন, তা নিজের কাজে ও ব্যবহারেই প্রমাণ হবে। কে বা কারা দু’টো কথা বলবেন, সেটা নিয়ে মোটেই মাথা ঘামান না তিনি।
এপ্রসঙ্গে ইমন চক্রবর্তীর সাফ উত্তর, ইচ্ছে হলে সিঁদুর, শাঁখা-পলা পরবেন, নাহলে পরবেন না! "সারা দেশে কত মানুষের মুখে খাবার উঠছে না। কত কৃষক আত্মহত্যা করছেন। সেসব নিয়ে না ভেবে ইমন কেন শাঁখা-পলা পরল না, তা নিয়ে যারা ভাবছেন, তাদেরকে আমি ধর্তব্যের মধ্যেই ফেলি না", মন্তব্য সদ্য বিবাহিতা গায়িকার।