Advertisment

Indranil Sengupta:  বেণুদা বা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ফেলুদা হিসেবে কাউকে নকল করার ইচ্ছে নেই..: ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত 

Indranil Sengupta as feluda in Nayan Rahasya: ফেলুদা করার আগে কলকাতার বাঙালি পরিবেশে থাকতে চেয়েছিলেন ইন্দ্রনীল?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
Indranil Sengupta amid his new release feluda and Nayan Rahasya

Indranil as feluda- ফেলুদা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ইন্দ্রনীলের

'নয়ন রহস্য' আসছে এই শুক্রবার। আর নয়নকে সকলের থেকে রক্ষা করতে পর্দায় ফিরছেন ফেলুদা। যথারীতি, এক টানটান উত্তেজনা হতে চলেছে। আর এবারও ফেলুদার ভূমিকায় ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। অভিনেতা এর আগে হত্যপুরী করেছিলেন। এবার নয়ন রহস্য। তাঁর আগেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি। 

Advertisment

ফেলুদার কোন বিষয়টা তোমায় মন্ত্রমুগ্ধ করে? 

আমার কাছে ফেলুদা মানেই মুগ্ধতা। এবার যেই বিষয়টা আমায় ফ্যাশিনেট করে সেটা হল ফেলুদার স্কেচ। সত্যজিৎ রায়ের বইতে যে আঁকা গুলো রয়েছে। সেটা আমায় খুব আকর্ষণ করে। এবং, সেই স্কেচগুলো দেখলেই আমার মনে হয় তিনি খুব প্রখর একজন মানুষ। তাঁর অগাধ জ্ঞান। সে সবকিছু জানে, সবকিছু ভাবে। খুব দক্ষ একজন মানুষ। সবকিছুতে খুব ভাল রুচি। 

পর্দার প্রথম ফেলুদা তো সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সেক্ষেত্রে তাঁর হাঁটাচলার ধরনটাও অনেকে মনে রেখেছেন...

না ধরে রাখলে তো হবে না। মানুষ অনেকেই ভুল জানেন। অনেকে ভাবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেখে হয়তো বা ফেলুদা সৃষ্টি করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। যেটা ভুল। লেখা আগে হয়েছিল। তারপর যখন সৌমিত্র বাবু করলেন সেই অনুযায়ী স্কেচ বা গ্রাফটা বদলাতে লাগল। ওই যে চুলের ফ্লিংটা সেটা কিন্তু সৌমিত্রর থেকেই আনা। মানুষের সত্যিটা জানা উচিত। 

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এর সঙ্গে তো কথাও হয়েছিল আপনার? 

হ্যাঁ! সেটা ২০০৯...আমার মনে আছে উনিই প্রথম। যিনি আমায় বলেছিলেন যে বাবুর কাছে যাও। বেণু ( সব্যসাচী চক্রবর্তী ) আর ফেলুদা করবে না। আমার মনে হয় তোমায় মানাবে। 

পরপর দুটি ফেলুদার গল্পে অভিনয়, রাস্তায় কেউ ফেলুদা বলে ডাকে? 

ঘটনাটা হচ্ছে, আমি কলকাতায় থাকি না। তাই ওখানে ডাকার কোনও প্রশ্নই নেই। আর এখানে মুম্বাইতে ফেলুদা নিয়ে সেভাবে কেউ জানে না। অতটা মাতামাতি নেই। কিন্তু হ্যাঁ, কোনও অনুষ্ঠানে অনেকসময় হয়তো কেউ কেউ ডেকে বলে, দেখো, ইনি নতুন ফেলুদা...তখন ভাল লাগে। আর রাস্তায় ঘাটে সেভাবে তো হাঁটাচলা হয় না। কিন্তু হ্যাঁ, ওই যে যখন ছবি রিলিজ করেছিল তখন বাচ্চারা ফেলুদা বলে ডাকত। তাকিয়ে থাকত হা করে। আমি শুধু এটাই ভাবতাম, যে ওরা হয়তো ভাবছে আমিই ফেলুদা। 

বাঙালির কি গোয়েন্দা বিভাগে ফেলুদার ওপর বিশ্বাসটা বেশি? 

হ্যাঁ, আমার তো তাই মনে হয়। মানে আমি, সেটাই বলতে পারি। আমার কাছে কিন্তু ফেলুদা শার্লক হোমসের থেকেও প্রিয়। সবার কেন হয়, সেটা জানি না। কিন্তু ফেলুদা কেন, সেটা বলছি। ফেলুদা খুব রিলেট করেন অনেকের সঙ্গে। কিন্তু ফেলুদা খুব কাছের। এই যে তোপসে তাকে দাদা বলে ডাকেন, সেটা তাঁকে খুব আদরের, কাছের মানুষ করে তোলে। ফেলুদার চারপাশের পরিবেশটা খুব সুন্দর। আমার চোখে, ফেলুদা একজন যুবক, যে আমার থেকে বড়। আশেপাশে পাড়ার এদিক ওদিক কিন্তু ফেলুদা আছে। এত জীবন্ত ঘটনার  ওপর লেখা পুরো বিষয়টা, তোমার মনে হবে যে আমার কাছেই আছেন উনি। আর সেটা তুমি দেখতে চিনতে পারছ। আমাদের জীবনে এরম অনেক ফেলুদা রয়েছে। যে, খুব বুদ্ধিমান, শার্প... 

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় না সব্যসাচী চক্রবর্তী... ফেলুদা হওয়ার আগে কাকে ফলো করেছিলে? 

বিশ্বাস করো, আমি একদম মিমিক করতে পারি না। আমার কাউকে নকল করার মতো প্রতিভা নেই। দুজনের করা ফেলুদা আমার দেখা, আমি ভীষণ অনুরাগী দুজনের। কিন্তু, আমি দুজনের মধ্যে কাউকে দেখেই অভিনয় করতে পারতাম না। আমি কপি করতে পারি না। আমি সেটা বাবুদাকে বলেছিলাম, যে ওদের মতো শট আমি দিতে পারব না। কিন্তু, হ্যাঁ একটা জিনিস হয়েছিল। আমি তাঁকে বলেছিলাম যে ফেলুদা করার আগে আমি বাঙালি পরিবেশে থাকতে পারি। কলকাতার বুকে একমাস আমি ছিলাম। যাতে বাংলার চর্চা চলতে পারে। ওই সময়টা আমি হেডফোনে সানডে সাসপেন্স শুনতাম। ফেলুদার ডেলিভারি কেমন সেটা দেখার জন্য। কিন্তু দেখলাম, ফেলুদার একটা গাম্ভীর্য আছে। গলার আওয়াজটা খুব গম্ভীর। যেটা আমার নয়। আমার ব্যক্তিত্ব একেবারেই গম্ভীর না। কিছুতেই ওভাবে ডায়লগ বলতে পারব না। 

তারপর.... বক্তব্য কী ছিল সন্দীপ রায়ের?

বাবু দা বললেন, কেন করবে ওরকম? তুমি তো মানুষটাই ওটা না। তোমার গলার আওয়াজ ওটা নয়। বেণু একদম আলাদা, তুমি একদম আলাদা। ওরকম গলা ভারী করে ডায়লগ বললে তো খুব খারাপ লাগবে শুনতে। ব্যারিটোনে কথা বললে নকল হবে। আর রেফারেন্স হলে পর্দার উপর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রথম ফেলুদা। কিন্তু, বেণু দা তাঁর মতো কিছুই করার চেষ্টা করেননি। সেটাই বোঝার। বাবুদা আমায় সাহস দিয়েছিল এটা করার। 

তোমার জেনারেশনে তুমি ছাড়া আর কোন অভিনেতা ফেলুদা হিসেবে ভাল? 

আমার যেটুকু মনে পড়ছে বাদশাহী আংটি অল্প কিছু সিন দেখেছি। কিন্তু, টোটাদা বা পরমের ফেলুদা আমি দেখিনি। আবিরকে খুব সামান্য। তাই, তুলনাটা করতে পারব না। 

ফেলুদা নিয়ে ছবি মানেই কি হিট? 

আমার সেটা মনে হয় না। একেবারেই মনে হয় না। ফেলুদা নিয়ে কোনও ছবি হলে মানুষের আগ্রহ বাড়বে। কিন্তু হিট হবেই সেটা না। এবার সিনেমা তখনই হিট যখন সেটা ভাল লাগবে সকলের। সুতরাং, আজ অবধি সব ফেলুদা তো সুপারহিট হয়নি। সবাই দেখার চেষ্টা করবে। হয়তো, সমালোচনা করবে।

গোয়েন্দা ভিত্তিক ছবি করলে কি তারকার সঙ্গে সেই ট্যাগ লেগে যায়? 

আমার সত্যি বলতে গেলে মনে হয় না। সেই চরিত্রের সঙ্গে এত মিলে মিশে থাকা যায় না যে একজন অভিনেতার পরিচয় হবে সিনেমাটিক ক্যারেক্টার দিয়ে। অনেক রকমের রোল আছে। আর আমার মনে হয় না এই জেনারেশনে এমন কোনও অভিনেতা রয়েছে যাদের কোনও অভিনীত চরিত্রের নামে ডাকা হয়। হ্যাঁ, কিছু ভাল আছে। যেমন, আমায় যদি ফেলুদা বলে ডাকা হয় তবে আমি এটাই মেনে নেব যে পর্দায় এত স্ট্রং ভাবে আমি ফুটিয়েছি সবটা, যে সবাই আমায় নিয়ে মাতামাতি করছে। তবে, এটা কিন্তু লিমিট এনে দেয়। আমি ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত একজন অভিনেতা হিসেবেই থাকতে চাই। 

tollywood Entertainment News Sandip Ray Indraneil Sengupta
Advertisment