Advertisment

'দুই হাতে তালি বাজে', সম্পর্কের ভাঙন নিয়ে কী ইঙ্গিত করলেন জিতু কমল?

'আমারও তো ফ্রিতে বিনোদনের দরকার', কোন বিষয়টা সবথেকে বেশি উপভোগ করেন জিতু?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
Jeetu Kamal for his new release manush the movie

জিতু কামাল

অনেকদিন তো হল, ইন্ডাস্ট্রিতে আজ মানুষ চিনতে পারেন? নাকি অসুবিধে হয়? শেষ কিছুমাস ধরে নানা বিতর্ক, চারপাশে নানা মানুষের কটাক্ষ, তাও তিনি অসম্ভব একটি চরিত্রকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে প্রস্তুত। প্রসঙ্গে জিতু কমল। আজ রিলিজ করছে 'মানুষ'। সকাল সকাল ফোন গেলেও একটুও তিনি বিরক্ত হননি। বরং, দায়িত্ব করেই ফোন ধরলেন নিজের নতুন ছবি এবং চরিত্রের গুরুত্ব কতটা, কী বিষয়ে, সবটা নিয়েই কথা বললেন।

Advertisment

জিৎদার সঙ্গে কাজ, একদম কমার্শিয়াল ছবি... ছবিতে কি নেগেটিভ চরিত্র নাকি জিৎদার পাশাপাশি সমানে সমানে বসাবে নিজেকে?

খলনায়ক তো আমি না! একেবারেই না। এটুকু বলতে পারি, চরিত্রটা খুব গ্রে শেড। আমি আর জিৎদা এটুকু বলছিলাম, যে ট্রেলার দেখে এখনও কিন্তু কেউই আমার চরিত্রটা ঠিক কেমন সেটা ধারণা করতে পারেননি। নাহলে, যারা একটি সিনেমা দেখেন, বা ভালবাসেন, তারা ধরতে পারেন। আমি দেখলাম, এই ক্ষেত্রে একদম সেটা হয়নি। যে অসাধারণ থ্রিলারটা সঞ্জয় দা রেখেছেন, এখনও সাসপেন্স রিয়ে গিয়েছে। আমি যখন সামনা সামনি স্ক্রিপ্টটা শুনলাম, আমায় দারুণ ভাবিয়েছিল বিষয়টা। এটুকু বলতে পারি, দুটি মানুষের গল্প আমরা শুনতে এবং পারব।

ট্রেলার দেখার পর লোকজন বলছে ম্যাক্সওয়েল যে ২০০-এর ইনিংসটা খেলল ঠিক সেরকম, এটাই কি জিৎ ম্যাজিক? একজন অভিনেতা হিসেবে কী বলবে?

জিৎদা নিজেই ফ্যান্টাস্টিক ইনিংস খেলে আসে সবসময়। তবে, এক্ষেত্রে বলতে পারি, আমি, বিদ্যা আরও যাঁরা যাঁরা রয়েছেন তাঁদের একসঙ্গে কাস্ট করার বিষয়টা তুরুপের তাস বিষয়ক হতে পারে। আর, আমার চরিত্রটা না থাকলে, এই ছবিটা সম্পূর্ণ হবে না এটাও একশো শতাংশ আমি বলতে পারি।

যদি জিজ্ঞেস করি, তোমার একটা ডায়লগ নিয়েই যে টাকা কি সত্যিই দুনিয়ার লাভ-ক্ষতি ঠিক করে দেয়?

না, একেবারেই না। অন্তত আমার ক্ষেত্রে না। আমার প্রথমে আসে ভাল কাজ। তারপর আসে টাকা। জীবনে টাকা অবশ্যই দরকার হয়। কিন্তু, সবথেকে আগে আমার মনের সুখটা দরকার। যেটা, টাকা কিনতে পারে না। এমন কোনও কাজ কোনওদিন করবই না, যাতে সেটা থেকে যে টাকা আসবে তাঁর জন্য অস্বস্তি হয়। তো, এটা আমি একদম সাজিয়ে নিয়েছি।

তাঁর অর্থ, সৎ পথে রোজগার জিতুর ভাল ঘুমের কারণ?

ঘুম তো আমাদের ধরো, একরকম নেই বললেই চলে। কারণ, ঘুম বিষয়টা খুব সময়ের সঙ্গে ডিপেন্ড করে। এবার, কাণ্ডটা হচ্ছে আমার জীবনে খুব ওভার থিংকিং আছে। যেটার জন্য, আমার ঘুমের একটু অসুবিধা হয়। ভাল কাজ করার জন্য ওভার থিঙ্ক করি, সব মিলিয়ে ওই আরকি।

মানুষ অমানুষের পার্থক্যটা বাস্তব জীবনে বুঝতে পারো?

এটা ডিফাইন করা খুব কঠিন। ছোট থেকে জেনেছিলাম, মান আর হুঁশ থাকলেই সে মানুষ। এখন সেই ভাবনা অনেক বদলেছে। আমার কাছে মানুষ হচ্ছে সেই, যতক্ষণ সে আমার চোখে অপরাধ করছে। আমার কাছে সে ভাল। আমি তাঁকে সম্মান করব। আর একটা কথা হল, মানুষ হতে গেলে আগে তোমায় সম্মান করতে হবে। কারণ, সম্মান না করলে তুমি সম্মান ফেরত পাবে না।

ভাল মানুষ হওয়ার সুযোগ নিয়েছে কেউ কোনওদিন?

সুযোগ দিলে তো সুযোগ নেবেই। আমি খুব অদ্ভুত। আমি না কাজের জায়গায় না বলতে পারি কিন্তু, ব্যাক্তিগত স্তরে না বলতে পারি না। আমি হয়তো বুঝতে পারি অনেক কিছুই, কিন্তু ওই যে। আমার যদি ক্ষতিও হয়, আমি জানি আমার ঈশ্বর আমায় সেটা দিয়েছে। আমি শিবে বিশ্বাসী। গেল হয়তো, কিন্তু আমি আবার অর্জন করে নেব। ক্ষতিটা দেখেও আমি না বলতে পারি না।

না বলতে পারাটা অস্বস্তি না?

আমার বাড়ির লোক তো, শিয়ালদা থেকে আমায় না বলার উপায় বলে বই কিনে দিয়েছে। তাও তো আমি পারছি না। কী মুশকিল! নিজেকেই নিজে বোঝাচ্ছি তাও হচ্ছে না।

জিতুর কাছে একজন ভাল মানুষ হতে কী কী গুণ থাকতে হবে?

এটা একটু জিনিস কিনতে যাওয়ার মত বিষয় না? তবে, আমার মনে হয় যেকোনও মানুষের মধ্যে একটা সততা থাকা উচিত। তাঁর ব্যবহার অবশ্যই ভাল হওয়া উচিত। তাঁর থেকেও বড় কথা, আমি না এটা বিশ্বাস করি যে তুমি সকলের কাছে ভাল হতে পারবে না। আর যখন হতে পারবে না তখন চাপ নিয়ে লাভ নেই। পৃথিবীর কেউ এসে আর যাই হোক আমায় মিথ্যেবাদী, অসৎ প্রমাণ করতে পারবে না। যখন প্রেম করেছি, ওয়ান ওমেন ম্যান হয়ে থেকেছি। কোনও মেয়ে এসে বলবে না যে আমি ডবল টাইমিং করেছি। (একটু থেমে...)

এবার, সম্পর্কের মধ্যে যে ভাঙন হয় সেটা এক হাতে তালি বাজে না। দুই হাতে বাজে। সেই দোষ গুণ কিছুই তুমি একজনের মাথায় চাপিয়ে দিতে পারো না। আমি সবসময় ভালটা ভেবে নিয়ে বাঁচতে ভালবাসি। আমার কাছে এটাই আসল। যাঁর সঙ্গে থেকেছি, যাঁকে ভালবেসেছি, তাঁকে নিয়ে খারাপ তিক্ত মন্তব্য আসে না আমার। পৃথিবীর এমন কোনও সফল মানুষ আছে যার জীবনে দুঃখ নেই? সবার আছে। লেখক থেকে শিল্পী থেকে সবার...

জীবনে দুমুখো মানুষের কবলে পড়েছ? পড়লে বাঁচার উপায়?

এটা আমি খুব আনন্দ নিই জানো তো! ফ্রি-তে বিনোদন বলে না, ঠিক ওটা। আমার কাছে, বিষয়টা ঠিক ওরকম। আমি হয়তো জানি, যে যে কথাটা বলছে সে আমায় মিথ্যে বলেছে কিন্তু তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে ওই যে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানানোর বিষয়টা এটা আমি খুব উপভোগ করি। আমি জানি কিন্তু, তাও এটা মজার। আমার তো বিনোদন লাগবে নাকি বাঁচার জন্য। একসময় আমি একটু ছিলাম, যাকে যা খুশি বলে দিতাম, তারপর মনে হল সেটা একটা সাময়িক আনন্দ দেয়। কিন্তু, বিষয়টা ঠিক না।

পর্দায় ফের একবার সত্যজিতের ভূমিকায়, তুমি ছাড়া আর কেউ পারবে এই মানুষটির ভূমিকায় অভিনয় করতে?

প্রশ্ন যখন করলেই, এটুকু শুরুতে বলি যে, একটা সময় আমার এমন হয়ে গিয়েছিল অপরাজিতর সময় আমি বাড়িতেও এভাবেই থাকতাম, হাঁটতাম, কথা বলতাম। নিজেকে একদম সেভাবেই গুছিয়ে নিয়েছিলাম। এবং আমি এই শিক্ষাটাই পেয়েছি আমার গুরুর কাছ থেকে। যে একটা চরিত্র সেটাকে দায়িত্ব নিয়ে পর্দায় ফোটানো, নেহাত গুরুত্ব রাখে। কিছুদিন ধরে শুনছি একটি ভিডিও সেটি ভাইরাল। আমি বলছি ওটা আসল নয়, আমি আমার কাজটা করে ফেলেছি। সেখানে দেখবেন ভুলত্রুটি রয়েছে কিনা।

তবে, যদি আর কেউ সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় অভিনয় করতে পারেন কিনা বলতে চাও, তাহলে আমি এটাই বলব যে ওটা অনিকদা আর আমার একটা মেলবন্ধন। যদি, সেই জায়গায় অন্য কাউকে দায়িত্ববান হিসেবে পাওয়া যায়, চরিত্রের শেড ম্যাচ করে তবে কেন নয়?

tollywood Jeetu Kamal Entertainment News
Advertisment